প্যালেস্টাইনপন্থী গোষ্ঠী ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’-এর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি বিক্ষোভ ঘিরে শনিবার উত্তাল হয় লন্ডনের রাস্তা। শনিবারের ওই বিক্ষোভের জেরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৯০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে লন্ডনে। নিষিদ্ধ ওই সংগঠনের সমর্থনে বিক্ষোভ প্রদর্শন না-করার জন্য সাধারণ মানুষকে অনুরোধ জানিয়েছে ব্রিটেনের প্রশাসন।
গাজ়া ভূখণ্ডে ইজ়রায়েলি হামলার প্রতিবাদে গত কয়েক মাস ব্রিটেনে বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়েছে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’। ইজ়রায়েলি যোগ রয়েছে এমন বিভিন্ন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির কারখানায় তাণ্ডব চালিয়েছিল এই গোষ্ঠী। তাদের অভিযোগ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারও ইজ়রায়েলি হামলার যথাযথ নিন্দা জানাচ্ছেন না। এ অবস্থায় গত জুলাই মাসে ব্রিটেনের বায়ুসেনা ‘রয়্যাল এয়ার ফোর্স’-এর একটি ঘাঁটিতে লুকিয়ে প্রবেশ করেছিলেন ওই সংগঠনের সদস্যেরা। এর পরে সেখানে বায়ুসেনার কিছু বিমানে ভাঙচুর চালান তাঁরা। ওই ঘটনার পরেই সন্ত্রাস-বিরোধী আইনের আওতায় ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ব্রিটেন।
ব্রিটিশ সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শনিবার লন্ডনের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’-এর সমর্থকেরা। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কাছে পৌঁছে যান বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভ প্রতিহত করতে শনিবার থেকেই ধরপাকড় শুরু করে লন্ডনের পুলিশ। রবিবার লন্ডন পুলিশ জানিয়েছে, তারা ওই বিক্ষোভের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৮৯০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে অনেকেই ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ রয়েছেন।
আরও পড়ুন:
ধৃতদের মধ্যে ৮৫৭ জনকে পাকড়াও করা হয়েছে নিষিদ্ধ সংগঠনকে সমর্থন করার জন্য। এ ছাড়া পুলিশকর্মীদের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ১৭ জনকে। শনিবারের বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজকদের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে জানান, এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না-হওয়া পর্যন্ত তাঁদের প্রতিবাদ জারি থাকবে।
বস্তুত, ব্রিটেনে সন্ত্রাস-বিরোধী আইনের আওতায় নিষিদ্ধ হওয়া ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ গোষ্ঠী বর্তমানে আল-কায়েদা বা ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির সঙ্গে একই তালিকায় পড়ে গিয়েছে। এই সংগঠনকে সমর্থন করার ফলে ১৪ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। এই সংগঠনের উপরে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি। ব্রিটিশ সরকারের এই সিদ্ধান্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করে বলে মনে করছে তারা।