না খেতে পেয়ে মৃত্যু, নাকি দু’টো রুটির সন্ধানে গিয়ে প্রাণ হারানো। দ্বিতীয়টিতে বাঁচার ক্ষীণ হলেও আশা রয়েছে। তাই পেটের জ্বালায় যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়া ভূখণ্ডের দুর্ভিক্ষে খেতে না পাওয়া মানুষ ভিড় করছেন ‘গাজ়া হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ)-এর ত্রাণ শিবিরে। তার পরে ইজ়রায়েল ও আমেরিকার যৌথ উদ্যোগে খোলা ওই শিবিরে তাদেরই সেনা গুলি করে মারছে খাবার, পানীয় জলের খোঁজে আসা নিরীহ মানুষদের। জিএইচএফ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে— ‘‘আজ পর্যন্ত আমাদের ত্রাণ শিবিরে আমাদের কাজ চলাকালীন কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’’
কোনও এক দিনের ঘটনা নয়। জিএইচএফ-এর ত্রাণ শিবিরে প্রায় রোজই এই ধরনের গণহত্যা ঘটছে বলে জানাচ্ছেন সেখানকার চিকিৎসকেরা। যার ভয়াবহতা দেখে স্তম্ভিত স্বাস্থ্যকর্মী, মানবাধিকার কর্মী, সকলেই। গাজ়ার নাসের মেডিক্যাল কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মহম্মদ সকর জানিয়েছেন, গত কয়েক সপ্তাহে একাধিক বার তিনি এই ধরনের ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন।
মহম্মদের কথায়, ‘‘কী ভয়ের দৃশ্য— এমনও হয়েছে আধ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১৫০ জন আহত অবস্থায় এসেছেন। কেউ গুরুতর জখম, কারও মৃত্যু হয়েছে... ৯৫ শতাংশ জখম কিংবা প্রাণহানির ঘটনা পেয়েছি ওই ত্রাণ শিবির থেকে।’’
গাজ়ার স্থানীয় প্রশাসনের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, গত ২৭ মে থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত, ৬৪০ জন নিহত হয়েছেন ত্রাণ সংগ্রহ করতে এসে। ৪৫০০ জন জখম। মহম্মদ বলেন, ‘‘এমনিতেই হাসপাতালের একটা শয্যা ফাঁকা নেই। হাসপাতালের মেঝেতে শোয়ানো হচ্ছে রোগীদের। জখমদের অনেকে আগেই হাত-পা খুইয়েছেন। তার উপরে ফের ক্ষত।’’
আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘রেড ক্রস’-ও (আইসিআরসি) জানিয়েছে, গাজ়ায় নিযুক্ত তাদের চিকিৎসকেরাও গত এক মাসে ত্রাণ শিবির থেকে অসংখ্য গণহত্যার খবর দিয়েছেন। যদিও ইজ়রায়েল ও তাদের নিয়ন্ত্রিত জিএইচএফ দাবি করেছে, তারা দিনরাত এক করে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করছেন। সব অভিযোগ মিথ্যা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)