শুকিয়ে গিয়েছে ফ্রান্সের লয়ের নদী ছবি রয়টার্স।
কোথাও নদী পুরোপুরি শুকিয়ে মাঠ হয়ে গিয়েছে, তো কোথাও ভয়ঙ্কর দাবানলে পুড়ছে বনাঞ্চল আর তার সংলগ্ন বসতি। চলতি বছরে গরমের মরসুমে তীব্র তাপপ্রবাহে এ ভাবেই পুড়ছে ইউরোপের বিস্তীর্ণ অংশ। সম্প্রতি আবহাওয়া নিয়ে প্রকাশিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এক রিপোর্ট বলছে, গত পাঁচশো বছরে এমন ভয়াবহ খরা দেখেনি গোটা মহাদেশ। আগামী কয়েক বছরে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আগে থেকেই সতর্ক করে রাখছেন পরিবেশবিজ্ঞানীরা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের জয়েন্ট রিসার্চ সেন্টার-এর তরফে যে রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে মহাদেশের অন্তত ৪৭ শতাংশ এলাকা এখন সতর্কতার আওতায় রয়েছে। মাটিতে কমছে আদ্রতার পরিমাণ। ১৭ শতাংশ এলাকার অবস্থা আরও ভয়াবহ। যেখানে খরার ফলে চাষাবাদের উপরে প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়তে চলেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই নজিরবিহীন খরার জন্য ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দাবানলের প্রকোপ বাড়ছে। কম বৃষ্টিপাতের জন্য ব্যাহত হচ্ছে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন। তীব্র দাবদাহের ফলে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। বহু এলাকায় খরা আর দাবানলের ফলে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার ইউরোপবাসী। খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মূলত ফ্রান্স, বেলজিয়াম, জার্মানি, হাঙ্গেরি, ইটালি, লুক্সেমবুর্গ, মলডোভা, নেদারল্যান্ডস, সার্বিয়া, পর্তুগাল, ব্রিটেন, স্পেন, রোমানিয়া, ইউক্রেনের মতো দেশে।
ইউরোপীয় ইনোভেশন কমিশনার মারিয়া গ্যাব্রিয়েল একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘প্রবল খরা পরিস্থিতি ও তাপপ্রবাহের সম্মিলিত কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলির নদীতে জলস্তর ভয়ানক ভাবে নেমে গিয়েছে। এখন আমরা ঘনঘন দাবানল দেখতে পাচ্ছি। যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে ফসল উৎপাদনে’।
ইইউ-এর ওই রিপোর্টেও বলা হয়েছে, অতিরিক্ত শুষ্ক আবহাওয়ায় চাষেরও প্রভূত ক্ষতি হয়েছে এ বছরে। সয়াবিন, সূর্যমুখী ও ভুট্টার উৎপাদন তাই ইতিমধ্যেই যথাক্রমে ১৫, ১২ ও ১৬ শতাংশ করে কম হয়েছে।
আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, এ বছর নভেম্বর পর্যন্ত খরা ও তাপপ্রবাহের দাপট দেখা যাবে পশ্চিম ইউরোপ ও ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায়। পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে রাতের দিকেও তেমন ঠান্ডা হচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। বিশ্ব উষ্ণায়নকেই এর জন্য দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষ করে ইউরোপের জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy