Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Meghan Markle

বাঁচতে চাননি, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আত্মহত্যার কথা ভাবতেন, বিস্ফোরক মেগান মার্কল

নিজে যখন মানসিক সমস্যায় যুঝছেন, সে সময়ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি ব্রিটেনের রাজপরিবার। এমনটাও শোনা গিয়েছে মেগানের কণ্ঠে।

রাজকুমার হ্যারির সঙ্গে তাঁর ‘রূপকথা’র বিয়ের পর ট্যাবলয়েড থেকে পাপারাৎজিদের নিয়মিত নিশানায় ছিলেন মেগান।

রাজকুমার হ্যারির সঙ্গে তাঁর ‘রূপকথা’র বিয়ের পর ট্যাবলয়েড থেকে পাপারাৎজিদের নিয়মিত নিশানায় ছিলেন মেগান। ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২১ ১৩:০৪
Share: Save:

রাজপরিবারে পা রাখার পর থেকেই নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কথা ভাবতেন। এমনকি ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও বার বার সেই চিন্তাই ঘুরেফিরে আসত তাঁর মনে। রবিবার ওপরা উইনফ্রে-র কাছে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছেন মেগান মার্কল। গোলাবারুদের সেখানেই শেষ নয়। বাকিংহাম প্যালেসকে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগেও বিদ্ধ করেছেন। মেগানের দাবি, রাজকুমার হ্যারি ও তাঁর প্রথম সন্তানের জন্মের আগেই তার গায়ের রং নিয়ে চলত আলোচনা। নিজে যখন মানসিক সমস্যায় যুঝছেন, সে সময়ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি ব্রিটেনের রাজপরিবার। এমনটাও শোনা গিয়েছে মেগানের কণ্ঠে।

রবিবার রাতে আমেরিকার টেলিভিশনে হ্যারি-মেগানের সাক্ষাৎকার নিয়ে উৎসাহের অন্ত ছিল না। অনেকেই ভেবেছিলেন, রাজকীয় পরিচয় ত্যাগ করে বাকিংহাম প্যালেস থেকে সরে যাওয়ার পর তাঁদের নতুন জীবন নিয়েই কিছু বলবেন দম্পতি। তবে ওপরার কাছে ঘণ্টা দুয়েকের দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে রাজপরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক তির ছুড়েছেন মেগান। তাঁকে ‘যোগ্য’ সঙ্গত করেছেন হ্যারিও।

রাজকুমার হ্যারির সঙ্গে তাঁর ‘রূপকথা’র বিয়ের পর ট্যাবলয়েড থেকে পাপারাৎজিদের নিয়মিত নিশানায় ছিলেন মেগান। তার প্রভাবও পড়েছিল মেগানের মনের উপর। সঙ্গে ছিল তাঁদের প্রথম সন্তানের গায়ের রং নিয়ে বাকিংহামের সদস্যদের জল্পনা। শ্বেতাঙ্গ বাবার মেয়ে মেগানের মায়ের মতোই কি তাঁদের প্রথম সন্তানের গায়ের রং কালো বা বাদামি হবে? প্রশ্নটা ঘোরাফেরা করছিল রাজপরিবারের এক সদস্যের কথাবার্তায়। তা নিয়ে রীতিমতো ‘দুশ্চিন্তা’ও প্রকাশ করেছিলেন ওই সদস্য। তবে এ দাবি করলেও সেই সদস্যের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি মেগান। যদিও আত্মহত্যার চিন্তা যে তাঁর মাথায় চেপে বসেছিল, সে কথা সাফ জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘আমি... কোনও ভাবেই বেঁচে থাকতে চাইতাম না। সব সময় এমন ভয়াবহ চিন্তা মাথায় ঘুরত। আর সেটা খুবই কঠোর, বাস্তব চিন্তা।’’ আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় ঘোরাফেরা করার সময় কেমন মনে হত তাঁর? ওপরার কাছে তা-ও খোলসা করেছেন মেগান। তাঁর কথায়, ‘‘খুব ভয় পেতাম। কারণ সেটাই আমার কাছে একেবারে সত্যি ছিল।’’

ওপরা উইনফ্রে-র টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে হ্যারি-মেগান।

ওপরা উইনফ্রে-র টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে হ্যারি-মেগান। ছবি: সংগৃহীত।

২০১৮ সালের ১৯ মে বিয়ে হয়েছিল মেগান-হ্যারির। তার পরের বছরই তাঁদের প্রথম সন্তান আসে রাজপরিবারে। তবে ৬ মে তাঁদের ছেলে আর্চির জন্মের আগে থেকেই তার গায়ের রং নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল। মেগান বলেছেন, ‘‘অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়... সেই মাসগুলোতে কথাবার্তা চলত, হয়তো ‘ওকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে না’, ‘ওকে হয়তো উপাধি দেওয়া হবে না’, জন্মের পর ওর গায়ের রং কতটা কালো হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলত। হ্যারির সঙ্গে তাঁর পরিবার এ ধরনের কথাবার্তাই বলত।’’

ডিউক এবং ডাচেস অব সাসেক্স হিসাবে গত বছরের মার্চেই রাজপরিবার ত্যাগ করে উত্তর আমেরিকায় চলে যান হ্যারি-মেগান। তার পর থেকে টেলিভিশনের প্রাক্তন অভিনেতা মেগানকে ‘জেদি’, ‘ছক কষে চলা’ এবং ‘বখে যাওয়া’— তকমা দিতে ছাড়েনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের একাংশ। হ্যারির পাশাপাশি তাঁরও ‘স্বার্থপর’ তকমা জুটেছে। তবে রবিবারের সাক্ষাৎকারের পর বোধ হয় আরও বড় ঝড় উঠতে চলেছে ব্রিটেনের রাজপরিবারে। কারণ, ১৯৯৫ সালে হ্যারির মা তথা যুবরানি ডায়ানা নিজের একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া থেকে প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে ভঙ্গুর বিয়ের নানা কথা প্রকাশ্যে আনার পর এতটা বিস্ফোরক হননি রাজপরিবারের কোনও সদস্য!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE