এ যেন সিনেমার চিত্রনাট্য। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে পলাতক এক দাগি অপরাধীর গ্রেফতারে টানটান উত্তেজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ইটালি জুড়ে! শেষ পর্যন্ত শনিবার নেপলসের একটি আবাসন থেকে পুলিশ গ্রেফতার করল ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অপরাধী মার্কো ডি লাওরোকে। পুলিশি অভিযানের সময়ে পাস্তা খাচ্ছিল পলাতক মাফিয়া। পাশে প্রিয় দু’টি বিড়াল। কিছুদিন ধরেই ওই ফ্ল্যাটে স্ত্রীর সঙ্গে থাকছিল মার্কো। এ দিন অভিযানে শামিল হয়েছিলেন ১৫০ জন পুলিশ।
মার্কোর ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে সামান্য টাকাপয়সা পাওয়া গেলেও মেলেনি কোনও অস্ত্র। গ্রেফতারির সময়ে ভেঙে পড়া দূরে থাক, রাজকীয় দাপট ছিল তার আচরণে। পুলিশের কাছে পোশাক বদলের অনুমতি চায় মার্কো। নিরাশ হতে হয়নি তাকে। লং টি শার্টে ঝকঝকে তাকে দেখলে বোঝা দুষ্কর, কিছু সময় বাদে ঠাঁই হতে চলেছে হাজতে। এমনকি, মার্কোর আচরণে ধন্দে পড়ে পুলিশও। সে যাতে ফের হাত না ফস্কায়, তাই কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল। গ্রেফতারির পরে গাড়িতে তাকে নিয়ে যাওয়ার সময়ে হেলিকপ্টার পাহারার ব্যবস্থা করা হয়। গাড়িটি ঘিরে শতাধিক পুলিশকর্মী ‘ওয়েল ডান’ বলে চিৎকার শুরু করে। নেপলস পুলিশের প্রধান অ্যান্টোনিও ডি লেসু সাংবাদিক বৈঠকে জানান, মার্কোর অপ্রত্যাশিত আচরণে ঘাবড়ে যায় বাহিনী।
জন্মসূত্রেই অপরাধ জগতের যোগ মার্কোর। তার বাবা পাওলো ডি লাওরো ছিল ইটালির সংগঠিত অপরাধ সিন্ডিকেট, কামোরার প্রধান। পাওলোর ৯ ছেলের মধ্যে মার্কো চতুর্থ। সে জন্য পরিবারে এফ৪ ডাকা হত তাকে। ইটালীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, মার্কো বাদে পাওলোর বাকি ছেলেদের মধ্যে কয়েক জন জেলবন্দি। বাকিরা মারা গিয়েছে। ২০০৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতার দখল নিয়ে ডি লাওরো শিবিরের সঙ্গে আমাটো-পাগানো গোষ্ঠীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মারা যান ১৩০ জন। ২০০৫ সালে পাওলোর হাজতবাসের পর থেকেই প্রভাব কমে পাওলো শিবিরের। এমন সময়েই হাল ধরে মার্কো।