মাত্র বারো দিনের মধ্যে ইজ়রায়েলের সঙ্গে ইরানের সংঘাত বন্ধ হয়েছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে। গাজ়া ভূখণ্ডেও এ বার ঠিক এ রকমই সংঘর্ষবিরতি চাইছেন ইজ়রায়েলের সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে গাজ়ায় কর্মরত ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্যদের মায়েরা। গত কাল তেল আভিভের রাস্তায় নামেন কয়েক হাজার ইজ়রায়েলি নাগরিক। রাবিন স্কোয়ার থেকে শুরু হয় সেই মিছিল। সরকার-বিরোধী সেই মিছিলের অধিকাংশই ছিলেন মধ্যবয়সি মহিলা। যাঁদের ছেলেরা গাজ়া ভূখণ্ডে যুদ্ধে গিয়েছেন।
গত বুধবার ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, গাজ়ার খান ইউনিসে হামাসের আক্রমণে ৭ জন ইজ়রায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। এর পর থেকেই সেনাদের মায়েরা প্রবল উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। তাই গত কাল তাঁরা পথে নেমে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের ডাক দিয়েছেন। লেবার নেত্রী এফরাত রায়তেনের ছেলে ইজ়রায়েলি সেনার সদস্য হিসেবে গাজ়ায় কর্মরত। কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে যাবতীয় সমস্যার সমাধান করে যত দ্রুত সম্ভব এই যুদ্ধ বন্ধের ডাক দিয়েছেন তিনি। মিশাল হাদাস রুবিন নামে আর এক মা তথা অধিকাররক্ষা কর্মীও অংশ নিয়েছিলেন মিছিলে। বললেন, ‘‘জাতীয় দায়িত্ব হিসেবে ছেলেদের সেনায় কাজ করতে পাঠিয়েছি আমরা। তার মানে এই নয় যে, আমাদের সন্তানদের জীবন নিয়ে যা খুশি করার ব্ল্যাঙ্ক চেক সরকারের হাতে ধরিয়ে দিয়েছি।’’ রাবিন স্কোয়ার থেকে মিছিল ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দফতরের দিকে যেতে গেলে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় আটকায়। অন্তত ৪ জন গ্রেফতার হন।
এক দিকে যখন যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে ইজ়রায়েলের সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছেন, এর মধ্যেই একটি প্রথম সারির হিব্রুভাষী ইজ়রায়েলি দৈনিক দাবি করেছে, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে গাজ়ায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে রাজি হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানয়াহু। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এ নিয়ে নেতানিয়াহুর ফোনে কথা হয়েছে বলে দাবি ওই দৈনিকের। হামাসের হাতে বন্দি সব ইজ়রায়েলি নাগরিককে মুক্ত করার পরে হামাসকে নির্বাসনে পাঠানো হবে বলে ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র পরিচালনার ভার যাবে আরবের চারটি দেশের হাতে। যদিও কায়রোয় দু’পক্ষের যে দীর্ঘ আলোচনা চলছে, তাতে কোনও সমাধানের পথ এখনও বেরোয়নি বলেই দাবি মধ্যস্থতাকারীদের। নেতানিয়াহু সরকারও ওই দৈনিকের রিপোর্ট খারিজ করে দিয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)