বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘সুদখোর, জঙ্গিনেতা’ বলে আক্রমণ করেছিলেন শেখ হাসিনা। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই হাসিনার সরকারকে ‘দস্যুদের পরিবার’ আক্রমণ করলেন ইউনূস। সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-কে একটি সাক্ষাৎকার দেন তিনি। সেখানে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “হাসিনার আমলে কোনও সরকার ছিল না। ছিল একটি দস্যুদের পরিবার।”
ইউনূস আগেই জানিয়েছিলেন, অগস্টে বাংলাদেশের প্রতিবাদী পড়ুয়ারা তাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিতে বলায় তিনি বিস্মিত হয়েছিলেন। সেই সময়ে দেশে ফিরে সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর কেমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সে কথাও ভাগ করে নিয়েছেন ইউনূস। হাসিনার ক্ষমতাত্যাগ এবং দেশত্যাগের সময় বাংলাদেশের পরিস্থিতি যুদ্ধে ধ্বস্ত গাজ়ার মতো ছিল বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, “উনি (হাসিনা) যে ক্ষতি করেছেন, তা বিরাট। যখন আমি দায়িত্ব নিই, তখন এটা ছিল একটা ধ্বংস হয়ে যাওয়া দেশ। আর একটা গাজ়ার মতো। তফাত এটাই যে, এখানে বাড়িঘর ভেঙে পড়েনি কিন্তু সব প্রতিষ্ঠান, পুলিশ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ভেঙে পড়েছিল।”
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সে দেশের একাধিক রাজনৈতিক দল। তবে হাসিনার আমলের তুলনায় পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, এমনটা মানতে নারাজ ইউনূস। তিনি জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাঁর সরকারের ভাল সম্পর্ক রয়েছে এবং সেনার তরফে কোনও চাপ সৃষ্টি করা হয়নি।
আরও পড়ুন:
ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসায় ইউনূস সরকারের সঙ্কট বাড়বে বলে মনে করেছিলেন অনেকেই। কারণ ইউনূস ডেমোক্র্যাট শিবিরের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তাই বাইডেন বা ডেমোক্র্যাট শিবিরের কেউ প্রেসিডেন্ট থাকলে যে সাহায্য ইউনূসের বাংলাদেশ পেত, তা রিপাবলিকান আমলে পাবে না বলেই মত ওই অংশটির। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে ‘বিনিয়োগের ভাল সুযোগ’ হিসাবে দেখার জন্য ট্রাম্পকে বিবেচনা করার আর্জি জানিয়েছেন ইউনূস। বলেছেন, “ট্রাম্প একজন সমঝোতাকারী। তাই আমি তাঁকে বলছি, আসুন। আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করুন। ট্রাম্প তেমনটা না করলে বাংলাদেশের ‘সামান্য যন্ত্রণা’ হবে বলে জানান ইউনূস। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান জানান, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থামবে না।