আগামী ফেব্রুয়ারিতেই দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বলে আবারও জানালেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে আজ রাতে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ‘অতি জরুরি’ বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। ইউনূস বলেছেন, ‘‘আপনারা যেমন সবাই মিলে এই সনদ রচনা করেছেন, আমাদের সরকারের দায়িত্ব সবাই মিলে উৎসবমুখর নির্বাচনটা করা। তা হলেই আমাদের কাজ পরিণতি পাবে।’’
শুক্রবার জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ স্বাক্ষরের কথা। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী-সহ আরও পাঁচটি ইসলামপন্থী দল এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ না দেখে সই করতে নারাজ বলে জানিয়ে দেওয়ায় পরিস্থিতি ঘোরালো হয়। সনদে আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) থাকা বিষয়গুলি উল্লেখ থাকায় স্বাক্ষর করবে না বলে জানায় বাংলাদেশ জাসদ, সিপিবি, বাসদ, বাসদ-মাকর্সবাদী। তার পরেই রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেন ইউনূস। সন্ধ্যার পরে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে হওয়া বৈঠকে ইউনূস বলেন, ‘‘আগামী শুক্রবার আমরা এক আশাকে জাতির সামনে আনব, যেগুলিতে আপনারা মতপ্রকাশ করলেন। সেগুলি জাতির সামনে ছড়িয়ে দিতে হবে। এগুলো যেন জাতি মনে রাখে। আগামী শুক্রবার উৎসবমুখর ভাবে আমরা সেখানে যাব এবং জুলাই দলিলে সই করব।’’ সর্বশেষ জুলাই সনদে যে সিদ্ধান্তগুলি এসেছে দৈনন্দিন এবং রাজনৈতিক জীবনে চর্চার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
জুলাই সনদ রচনাকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করে ইউনূস বলেন, ‘‘ছাত্র-জনতার যে অভ্যুত্থান, এই অভ্যুত্থানের এটাই আমার মনে হয় পরবর্তী অধ্যায় সঠিক ভাবে রচিত হল।… যে সংস্কারের কথা আমরা মুখে বলে যাচ্ছিলাম, আপনারা সেই সংস্কার করে দেখিয়ে দিয়েছেন।’’ নির্বাচন যে ফেব্রুয়ারিতেই হবে তা আজ আরও এক বার স্পষ্ট করে দিয়েছেন ইউনূস।
জুলাই সনদে সই করবেন কি না বৈঠকের পরে জানতে চাওয়া হলে জামাতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লা মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘‘শুক্রবার আমরা আশা করি, যাব। আর তো মাত্র এক দিন বাকি, ওই দিন গেলেই তো দেখতে পারবেন।’’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে এনসিপি-র সদস্যসচিব আখতার হোসেন, ‘‘যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়গুলি জাতির কাছে অস্পষ্ট থাকে, তা হলে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে আমরা যেটা অর্জন করতে চাই; সেটাকে অনিশ্চিত থেকে যাবে। তাই জুলাই সনদে স্বাক্ষর করব কি করব না—সে বিষয়গুলি বিবেচনাধীন রেখেছি।’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)