Advertisement
E-Paper

Munira Mirza: ঘনিষ্ঠ মুনিরার পদত্যাগ, চাপ বাড়ছে বরিসের

কোভিড বিধির তোয়াক্কা না করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে পার্টি করার অভিযোগে বিদ্ধ বরিসের পাশ থেকে সরে এলেন মুনিরা মির্জ়া।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:২৪
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ছবি রয়টার্স।

দলের অন্দরে তাঁর উপরে চাপ বাড়ছিলই। পার্টি-বিতর্ককে কেন্দ্র করে পার্লামেন্টে তাঁর অপসারণের দাবিতে সুর চড়াচ্ছিলেন বিরোধীরাও। একে একে ‘কাছের’ সহযোগীরা যে এ ভাবে তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন তা হয়তো দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। গত কাল হল সেটাই।

কোভিড বিধির তোয়াক্কা না করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে পার্টি করার অভিযোগে বিদ্ধ বরিসের পাশ থেকে সরে এলেন তাঁর বিশেষ আস্থাভাজন বলে পরিচিত মুনিরা মির্জ়া। ইস্তফা দিয়ে তিনি বললেন, ‘‘বরিস হতাশ করেছেন।’’

এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বরিস প্রশাসনের যোগাযোগ দলের প্রধান জ্যাক ডয়েল ইস্তফা দেন। এই ঘটনার আলোড়নের রেশ কাটতে না কাটতেই খবর আসে আরও দুই আধিকারিকের ইস্তফার। যাঁদের মধ্যে এক জন মার্টিন রেনল্ডস। বরিসের বিরুদ্ধে যে পার্টিগুলিতে যোগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম, ‘নিজের সুরা নিজেই আনুন’ শীর্ষক পার্টিটি। যার আমন্ত্রণপত্রগুলি পাঠিয়েছিলেন রেনল্ডসই। আর দ্বিতীয় জন হলেন ড্যান রসেনফিল্ড। বরিস জনসনের ‘চিফ অব স্টাফ’। এই তিন জনই পার্টি-বিতর্কের জালে জড়িয়েছেন।

তবে বরিসকে সবচেয়ে বড় ধাক্কা দিয়েছেন মুনিরাই। বরিস প্রশাসনের নীতি-নির্ধারক মুনিরার সঙ্গে বরিসের সম্পর্ক ‘অবিচ্ছেদ্য’ বলেই মনে করা হত। রাজনৈতিক শলা-পরার্মশের জন্যেও তাঁর কাছে বড় ভরসা ছিলেন মুনিরা। এক বার মুনিরাকে তাঁর ‘জীবনের অন্যতম প্রভাবশালী মহিলা’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি।

কিন্তু কেন? এর জন্য বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা কিয়ের স্টারমারের বিরুদ্ধে বরিসের ‘কুরুচিপূর্ণ’ আক্রমণই দায়ী বলে জানিয়েছেন মুনিরা। বুধবার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বরিস দাবি করেছিলেন, ক্রাউন প্রসিকিউসন সার্ভিস-এর প্রধান পদে থাকার সময়ে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত মিডিয়া ব্যক্তিত্ব জিমি স্যাভিলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেননি স্টারমার।

যদিও বরিসের এই অভিযোগ একেবারেই অযৌক্তিক বলে দাবি বিশেষজ্ঞ মহলের। কারণ, স্টারমারের এই বিষয়ে কোনও হাতই ছিল না। ফলে ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগ এনে ‘হাউস অব কমন্স’-কে ছোট করার অভিযোগও উঠেছে বরিসের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনকও। বরিসকে ভর্ৎসনা করে এক সাক্ষাৎকারে ঋষি বলেন, ‘‘আমি হলে কখনও এ কথা বলতাম না।’’ বরিসের ক্ষমা চাওয়া উচিত কি না, প্রশ্নের উত্তরটি অবশ্য কৌশলে এড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘সেই সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীই নেবেন।’’কৌশল করেননি মুনিরা। নিজের ইস্তফা পত্রে তিনি লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। এই কাজ করে তাঁর পদটিকে ছোট করেছেন।’’

গোটা পরিস্থিতির জেরে দলের অন্দরেই প্রশ্নের মুখে বরিসের নেতৃত্ব।দলের এমপি-দের মধ্যে অনেকে মনে করছেন, তিন আধিকারিকের পদত্যাগের পিছনে আদতে বরিসেরই হাত আছে। পার্টি-কাণ্ডে জড়ানোর কারণে তিনিই তাঁদের তড়িঘড়ি সরিয়ে দিয়েছেন। একাংশের আবার দাবি, হয়তো ঋষি সুনকের অঙ্গলিহেলনেই হয়েছে এ সব। কারণ, বরিস সরলে তাঁর পদে আসার জন্য ঋষির নামই সবচেয়ে এগিয়ে। এই জল্পনায় ইন্ধন জুগিয়েছে মুনিরার ইস্তফার খবরটি ‘স্পেক্টেটর’ পত্রিকার সম্পাদক জেমস ফরসিথ প্রথম ফাঁস করার ঘটনা। কারণ, জেমস ঋষির কাছের বন্ধু বলেই পরিচিত।

১৭ জন এমপি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ‘অনাস্থা’ জানিয়ে দলকে চিঠি দিয়েছেন। তবে বিকল্প খুঁজতে ভোটাভুটি করানোর জন্য মোট ৫৪ জন এমপি-কে এই অবস্থানে আসতে হবে। কূটনীতিকেরা মনে করছেন, অনেকে মুখে বরিসের বিরুদ্ধে কথা বললেও এখনই চিঠি জমা দিচ্ছেন না। কারণ তাঁরা ‘সঠিক সময়ের’ অপেক্ষা করছেন।

Boris Johnson Munira Mirza Politics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy