শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহী জোটের ধারাবাহিক হামলা এবং গণতন্ত্রপন্থীদের চাপে পিছু হটার বার্তা দিল মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকার। জুন্টা প্রধান জেনারেল মিন আং হ্লাইং জানিয়েছেন, দ্রুত দেশে নির্বাচনের আয়োজন করে গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে চান তাঁরা।
মায়ানমারের সরকারি সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গ্লোবাল নিউলাইট অফ মায়ানমার’ জানিয়েছে, জেনারেল হ্লাইং রাজধানী নেপিদোতে প্রশাসনিক ও সেনা আধিকারিকদের বৈঠকে ভোটের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘নির্বাচন এই বছরের ডিসেম্বরে এবং আগামী বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।’’ গত দু’বছরের গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহী জোটের হাতে দেশের অর্ধেকের বেশি অংশ হারিয়েছে জুন্টা।
জানুয়ারিতে বিদ্রোহী জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’-এর দ্বিতীয় বৃহত্তম সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ) যুদ্ধবিরতি চুক্তি করায় হ্লাইং সরকার কিছুটা স্বস্তি পেলেও তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ) এবং ‘আরাকান আর্মি’ (এএ)-র সঙ্গে জোট গড়ে ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ), পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) ধারাবাহিক হামলা চালাচ্ছে জুন্টা ফৌজের উপর। এই পরিস্থিতিতে চাপের মুখে জেনারেল হ্লাইংয়ের মুখে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে গণতন্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী আউং সান সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করেছিল মায়ানমার সেনা। শুরু হয়েছিল সামরিক জুন্টার শাসন। গত সাড়ে চার বছরে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠীকে ধারাবাহিক ভাবে নিশানা করেছে মায়ানমার সেনা। কিন্তু গত নভেম্বর থেকে সে দেশের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ গড়ে সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন ১০২৭’। যার পরিণামে সে দেশের বড় অংশই জুন্টার হাতছাড়া হয়েছে।