Advertisement
E-Paper

James Webb Space Telescope: বিশ্বের প্রামাণ্য প্রাচীনতম ছবি, ১৩০০ কোটি বছর আগের ছবি তুলল জেমস ওয়েব

গত বড়দিনের সকালে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। এখন পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব ১৫ লক্ষ কিলোমিটার।

(১) ‘মাত্র’ ২৯ কোটি আলোকবর্ষ দূরের পাঁচটি গ্যালাক্সি। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ যার ছবি পাঠিয়েছে। ব্রহ্মাণ্ডে এমন কত গ্যালাক্সি! হাজার হাজার কোটি আলোকবর্ষ দূরেও আছে এমন গ্যালাক্সি।  (২) দক্ষিণ গোলার্ধের একচিলতে আকাশের ছবি। এসএমএসিএস ০৭২৩। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ যার ছবি পাঠিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা গ্যালাক্সি।

(১) ‘মাত্র’ ২৯ কোটি আলোকবর্ষ দূরের পাঁচটি গ্যালাক্সি। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ যার ছবি পাঠিয়েছে। ব্রহ্মাণ্ডে এমন কত গ্যালাক্সি! হাজার হাজার কোটি আলোকবর্ষ দূরেও আছে এমন গ্যালাক্সি। (২) দক্ষিণ গোলার্ধের একচিলতে আকাশের ছবি। এসএমএসিএস ০৭২৩। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ যার ছবি পাঠিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা গ্যালাক্সি। নাসার সৌজন্যে পাওয়া ছবি।

পথিক গুহ

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২২ ০৬:৩১
Share
Save

প্রথম আলো।

এসএমএসিএস০৭২৩। পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধের এক ফালি আকাশের ছবি পাঠিয়েছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। তার দৃষ্টিতে ধরা পড়েছে নির্মীয়মাণ নক্ষত্রপুঞ্জের (গ্যালাক্সি) সমাহারের ছবি। ১৩৭০ কোটি বছর আগে বিগ ব্যাং-এ ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি এবং তার মাত্র ৬০ কোটি বছর পরে এই ছবি। এর আগে কোনও মানমন্দির এত আগের ছবি তুলতে পারেনি।

আমেরিকান সময়ে সোমবার সন্ধ্যায় (ভারতীয় সময় মঙ্গলবার ভোর) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ব্রহ্মাণ্ডের অতীতের এই সাক্ষ্য পেশ করেছেন। সে সময় তাঁর পাশে বসে ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিল নেলসন। বাইডেন বলেছেন, “এটা বিশ্বের প্রামাণ্য প্রাচীনতম ছবি, যা এসেছে ১৩০০ কোটি— হ্যাঁ, আবারও বলছি— ১৩০০ কোটি বছর আগে থেকে।”

গত বড়দিনের সকালে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। এখন পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব ১৫ লক্ষ কিলোমিটার। এত দূরে যে, যন্ত্রাংশ বিগড়োলে (যেমন হয়েছিল ৫৫০ কিলোমিটার দূরে থাকা হাবল টেলিস্কোপের), তা আর ঠিক করা যাবে না। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ রয়েছে দ্বিতীয় ল্যাগরাঞ্চ পয়েন্ট-এ, যেখানে পৃথিবী এবং সূর্যের মহাকর্ষ বল সমান।

আড়াই হাজার আলোকবর্ষ দূরে একটা নক্ষত্র, যার ছবি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ পাঠিয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, নক্ষত্র তার চারদিকে গ্যাসের ধোঁয়া ছড়াতে ছড়াতে চলেছে।

আড়াই হাজার আলোকবর্ষ দূরে একটা নক্ষত্র, যার ছবি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ পাঠিয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, নক্ষত্র তার চারদিকে গ্যাসের ধোঁয়া ছড়াতে ছড়াতে চলেছে। ছবি সৌজন্য: নাসা।

১৯৯০-এর দশকে মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল এই টেলিস্কোপের। তখনই খরচ ধরা হয়েছিল ১০০ কোটি ডলার। ২০২১ সালে যখন এই টেলিস্কোপ মহাকাশে পাড়ি দেয়, তখন খরচ দাঁড়ায় ১০০০ কোটি ডলার। ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইএসএ) এবং কানাডার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (সিএসএ) নাসা-র দিকে আর্থিক সাহায্যের হাত না-বাড়ালে এই টেলিস্কোপ মহাকাশে পাঠানো যেত না। এমন অবস্থা হয়েছিল যে, বিজ্ঞান পত্রিকা ‘নেচার’ জেমস টেলিস্কোপকে তকমা দিয়েছিল, “দ্য টেলিস্কোপ দ্যাট এট অ্যাস্ট্রোনমি।” খাওয়ারই দশা! খরচের বহর এত দাঁড়িয়েছিল যে, জ্যোতির্বিজ্ঞানের আর কোনও প্রকল্পে হাত দেওয়া যাচ্ছিল না।

১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরেও পৃথিবী এবং সূর্যের তাপ থেকে বাঁচাতে ৫টি পর্দা লাগানো হয়েছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে। এক-একটি পর্দার মাপ টেনিস কোর্টের সমান। এই টেলিস্কোপে রয়েছে ১৮টি ষড়ভুজ আয়না। যার সম্মিলিত ব্যাস ৬.৫ মিটার। ঠিক যেমন ভাবে রাতের আঁধারে কোনও কোনও ফুল পাপড়ি মেলে সে ভাবেই ১৮টি আয়না মহাকাশে উন্মীলিত হয়েছে।তা দিয়েই চলেছে ব্রহ্মাণ্ডের অতীতের খোঁজ।

জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে ইনফ্রারেড রশ্মি দিয়ে ছবি তোলা হয়েছে। আলোর থেকে বেশি তরঙ্গদৈর্ঘ্যের এই রশ্মি মানুষের চোখে ধরা পড়ে না। বিগ ব্যাং-এর পরে ব্রহ্মাণ্ড ক্রমশ স্ফীত হচ্ছে। তাই ক্রমশ বাড়ছে স্পেস বা শূন্যস্থান। বাড়ছে দৈর্ঘ্যও। তাই বিগ ব্যাং-এর সময় আলোর যে তরঙ্গদৈর্ঘ্য ছিল, বর্তমানে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য তার থেকে বেশি। তাই ইনফ্রারেড রশ্মিতে দিয়ে সব কিছুই দেখা যায়।

ছিটেফোঁটা আলো। তা থেকে ব্রহ্মাণ্ডের আদি পর্বের অনুসন্ধান। নক্ষত্র থেকে নক্ষত্রপুঞ্জ। নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে নক্ষত্রপুঞ্জের সমাহার। এই প্রকাণ্ড ব্রহ্মাণ্ডে পৃথিবী কোথায়? কোথায় আমরা? কোথায় ইউক্রেন-রাশিয়া? কোথায় কংগ্রেস-বিজেপি-তৃণমূল?

আমি মানব। একাকী। ভ্রমি। বিস্ময়ে।

James Webb Space Telescope nasa
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy