Advertisement
E-Paper

কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে নওয়াজের নিজস্ব ফর্মুলা

কাশ্মীর ইস্যুকে আন্তর্জাতিক স্তরে তুলতে ফের এক বার রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চকেই ব্যবহার করলেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে দিলেন নিজস্ব চার দফা ফর্মুলা। যার মধ্যে প্রধান দু’টি সিয়াচেন এবং কাশ্মীর থেকে নিঃশর্ত সেনা প্রত্যাহার।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৫ ০০:১১
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

কাশ্মীর ইস্যুকে আন্তর্জাতিক স্তরে তুলতে ফের এক বার রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চকেই ব্যবহার করলেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে দিলেন নিজস্ব চার দফা ফর্মুলা। যার মধ্যে প্রধান দু’টি সিয়াচেন এবং কাশ্মীর থেকে নিঃশর্ত সেনা প্রত্যাহার। রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চকে নওয়াজ এমন একটা সময়ে ব্যবহার করলেন, যখন রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখা হয়ে গিয়েছে ভারতের। উত্তর দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই জেনে কার্যত ফাঁকা মাঠেই গোল দিলেন নওয়াজ।

চার দফা প্রস্তাবের পাশাপাশি কাশ্মীর সমস্যার সমাধান না হওয়ার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জকেই এ দিন দায়ী করলেন নওয়াজ। তাঁর মতে, কাশ্মীরে ইস্যুতে ব্যর্থতা আসলে রাষ্ট্রপুঞ্জেরই ব্যর্থতা। কাশ্মীরে কোনও তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতিকে কোনও দিনই প্রশ্রয় দেয়নি ভারত। অন্য দিকে কাশ্মীর সমস্যার জন্য বারবার রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ আন্তর্জাতিক দুনিয়ার দরজায় কড়া নেড়েছে পাকিস্তান।

কাশ্মীর ও সিয়াচেন থেকে সেনা সরানোর পাশাপাশি ভারতীয় ‘হুমকি’রও প্রতিবাদ করেন তিনি। ফর্মুলার অঙ্গ হিসাবে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ২০০৩ সালের সংঘর্ষবিরতি চুক্তির মান্যতার পক্ষেও জোরালো সওয়াল করেন নওয়াজ। যদিও পাকিস্তানই যে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বার বার সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, বারবারই সে অভিযোগ করেছে ভারত।

আন্তর্জাতিক মঞ্চে উত্তর দেওয়ার সুযোগ না পেয়ে নওয়াজের বক্তব্য খণ্ডনে এ দিন টুইটারকেই হাতিয়ার করল ভারত। নওয়াজের বক্তব্য উড়িয়ে বিদেশমন্ত্রক মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেন, “সেনা প্রত্যাহারের কথা না ভেবে জঙ্গি প্রত্যাহারে মন দিক পাকিস্তান।”

কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাক প্রধানমন্ত্রীর সোচ্চার হওয়ার দিন ফের এক বার মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ উঠল তাঁরই সরকারে বিরুদ্ধে। প্রকাশ্যে এল এমন এক ভিডিও যা পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দিয়ে দেখিয়ে দিল পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দারা পুলিশ ও পাক সেনার হাতে কতটা লাঞ্ছিত। নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে মুজফ্‌ফরাবাদ, গিলগিট ও কোটলির মতো এলাকায় এখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। অধিকৃত কাশ্মীর থেকে পাকিস্তানকে হঠাতে রাস্তায় নেমেছেন সেখানকার মানুষ। তাঁদের মুহুর্মুহু স্লোগানে অতিষ্ঠ পুলিশ ও পাক সেনার চরম দমনপীড়নের ছবিও ধরা পড়েছে ওই ভিডিওতে। দেখা যাচ্ছে, এই এলাকাগুলির পথে পথে বিশাল সংখ্যায় মানুষ জড়ো হয়েছেন। পাকিস্তানের হাত থেকে ‘স্বাধীন’ হতে চড়া সুরে স্লোগান দিচ্ছেন তাঁরা। এক কাশ্মীরি বলেন, ‘‘আজাদ কাশ্মীর কখনও পাকিস্তানের অংশ ছিল না, থাকবেও না।’’ জনতা স্লোগান দিচ্ছেন, ‘‘পাকিস্তানি ফৌজিও, হামারা কাশ্মীর ছোড় দো।’’ আর কেউ কেউ বলছেন, পাকিস্তানের থেকে অনেক ভাল ভারত। স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন মানুষ। মহিলারা ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন ঘুষের রাজত্বের বিরুদ্ধে।

আর এ সবে পাক বাহিনীর প্রতিক্রিয়া কী?

মাথার ঠিক রাখতে না পেরে বন্দুকের গুঁতো দিয়ে বিক্ষোভকারীদের ফেলে পেটাচ্ছে পাকিস্তানের সেনা। তাঁদের গলায় ফাঁস লাগিয়েও টেনে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে সেনাদের। মারমুখী সেনার হাত থেকে বাঁচতে প্রাণভয়ে পালাচ্ছেন সাধারণ কাশ্মীরি মানুষ। জটলার মধ্য থেকে তখনও ঘনঘন উঠে আসছে ‘পাকিস্তান মুর্দাবাদ’ ধ্বনি। আর উঠছে পাকিস্তান থেকে ‘আজাদি’ চেয়ে গরম স্লোগান।

এত দিন সম্পূর্ণ অদেখা পাক অধিকৃত কাশ্মীরের এই নরক যন্ত্রণার ছবি একেবারে ঝামা ঘষে দিয়েছে ইসলামাবাদের মুখে। কেননা, জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর হাতে কতটা ব্যাপক ভাবে লা়ঞ্ছিত হচ্ছেন কাশ্মীরিরা, রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে শুরু করে সর্বত্র সেটাই প্রচার করার জন্য মুখিয়ে থাকে তারা। শ্রীনগরে কাশ্মীরিদের একমাত্র মুখ হিসেবে হুরিয়তদের তুলে ধরে কিছু দিন আগেই নয়াদিল্লির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক থেকে সরে এসেছে পাকিস্তান। এ বার নিউ ইয়র্কেও রাষ্ট্রপুঞ্জ সাধারণ সভায় কাশ্মীর নিয়ে সরব হয়েছে পাক।

এই বিতর্কের আবহেই একটি চ্যানেলে ফুটে উঠল এমন ছবি যা ইসলামাবাদের কূটনীতিকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। স্বাভাবিক ভাবেই মুখ বাঁচাতে ব্যস্ত পাকিস্তান দাবি করেছে, বাস্তবে এমন কিছুর অস্তিত্ব নেই। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করে এই ভিডিও একটা সাজানো ব্যাপার।

আর ভারত?

গোটা বিষয়টি নয়াদিল্লির কাছে যেন মেঘ না চাইতেই জল। এখন এ নিয়ে ইসলামাবাদকে কড়া জবাব দেওয়ার অপেক্ষায় ভারত।

Nawaz Sharif Kashmir Pakistan india MostReadStories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy