বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের দাবিতে বুধবার ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও করতে গিয়েছিল জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি। কিন্তু পুলিশি বাধায় দূতাবাস পর্যন্ত যেতে পারেনি তারা। এ দিকে, কক্সবাজার সফরে গিয়ে দলের রোষের মুখে পড়েন জাতীয় নাগরিক পার্টি(এনসিপি)-র পাঁচ নেতা। তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিসের জবাব দিতে বলেছেন দলীয় নেতৃত্ব।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজা শুরুর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সমস্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলতে নির্বাচন কমিশনকে এ দিন চিঠি দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়। এর মাধ্যমে নির্বাচনের জন্য সরকারের তরফে নির্বাচন কমিশনকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুরোধ করা হল। চিঠিতে উল্লিখিত সময়ে প্রত্যাশিত মানের অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ কর হয়েছে।
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি ভারতীয় দূতাবাসের উদ্দেশে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিছিল গুলশান-বাড্ডা লিংক রোড এলাকায় পৌঁছলে পুলিশ আটকে দেয়। সেখানে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে তারা। সমাবেশে দলের সহ-সভাপতি তথা মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বলেন, ‘‘হাজারো শহিদের পরিবার ও লক্ষাধিক জুলাইযোদ্ধা যে স্বৈরাচারের বিচার দেখার অপেক্ষায় আছে, তাকে ভারত রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। আমরা ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে দিল্লি সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই, খুনি হাসিনাকে ফেরতদিতে হবে।’’
এ দিকে, ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর প্রথম বর্ষপূর্তির দিন দলকে না জানিয়ে কক্সবাজারে গিয়েছিলেন এনসিপি-র পাঁচ নেতা নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারী, তাসনিম জারা, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লা এবং খালেদ সাইফুল্লা। এঁদের পৃথক ভাবে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসে আপনি এবং দলের আরও চারজন কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যক্তিগত সফরে কক্সবাজার গিয়েছেন। এই সফরের কোনও তথ্য কিংবা ব্যাখ্যা দলকে আগে জানানো হয়নি। এমন অবস্থায় আপনার এই সিদ্ধান্তের কারণ ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের কাছে সশরীর উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে’।
গত কাল, মঙ্গলবার ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। তার তীব্র সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এটা জাতিকে বিভক্ত করার নিকৃষ্ট দলিল হিসেবে কালবেলার সাক্ষ্য বহন করবে। এরা পরিকল্পিতভাবে বিভেদের কার্ড ব্যবহার করে ব্যক্তিগত পর্যায় পর্যন্ত দ্বন্দ্বের বিস্তার ঘটাচ্ছে’।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)