Advertisement
E-Paper

করোনাকে হারানোর কৃতিত্ব নেতৃত্বের

গত কয়েক মাস ধরে বহু দেশেই যখন স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির নাজেহাল অবস্থা, তখন অন্যতম ব্যতিক্রম দক্ষিণ গোলার্ধের এই সাগর-ঘেরা ছোট দেশ নিউজ়িল্যান্ড।

শুভময় গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২০ ০৪:২১
নিউজিল্যান্ডে করোনা সংক্রমণ কমতেই ভিড় বাড়ছে সেখানকার সমুদ্র সৈকতে। ছবি: রয়টার্স

নিউজিল্যান্ডে করোনা সংক্রমণ কমতেই ভিড় বাড়ছে সেখানকার সমুদ্র সৈকতে। ছবি: রয়টার্স

দ্বিতীয় বার করোনা-অতিমারির বিরুদ্ধে যুদ্ধেও জয়ী হলাম আমরা। দিন কয়েক আগেই প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডের্ন জানিয়ে দিলেন, করোনা-মুক্ত দেশ। কাল বিদেশ থেকে আসা এক জন কোভিড-আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেলেও, এখন আর দেশের কোথাও কোনও গোষ্ঠী সংক্রমণের খোঁজ নেই। আমি যে শহরে থাকি, সেই অকল্যান্ডেও গত কয়েক দিন কোনও নতুন সংক্রমণ হয়নি।

গত কয়েক মাস ধরে বহু দেশেই যখন স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির নাজেহাল অবস্থা, তখন অন্যতম ব্যতিক্রম দক্ষিণ গোলার্ধের এই সাগর-ঘেরা ছোট দেশ নিউজ়িল্যান্ড। ভৌগোলিক কারণে আমাদের কিছু সুবিধা ছিল— এই সুদূর দ্বীপ-দেশে ভাইরাসের আগমন হয়েছিল একটু দেরিতেই। ফলে অন্য অনেক দেশের অভিজ্ঞতার থেকে শেখার সুযোগ হয়েছিল।

জনসংখ্যার ঘনত্ব কম এবং দেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর প্রায় পুরোটাই সরকারি, এই কারণ দু’টি বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকারের উদ্যোগকে ফলপ্রসূ হতে সাহায্য করেছে। আর তার সঙ্গে নেতৃত্বের কৃতিত্ব না-মানলে সত্যের অপলাপ হবে।

আরও পড়ুন: ২৫ বছর একই নম্বরে লটারি কেটে বাজিমাত, জ্যাকপটে কোটিপতি পরিবার

করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী আর্ডের্নের নেতৃত্বে সরকারি উদ্যোগের দু’টি উল্লেখযোগ্য। প্রথম: সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা, কিন্তু মন্ত্রিসভা পরামর্শ নিয়েছে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে, যাঁদের মধ্যে স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, শিক্ষা সব ধরনের বিশেষজ্ঞই ছিলেন। আর দ্বিতীয়: নিয়মিত মানুষকে অবহিত করা, পরিস্থিতির গুরুত্ব সম্পর্কে, সরকারি উদ্যোগের ব্যাপারে, এবং জনসাধারণের সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে।

আরও পড়ুন: ‘হাত পাকাতে টেগোরও'

প্রায় প্রতিদিনই দুপুরে প্রধানমন্ত্রীকে টিভিতে দেখা গিয়েছে সাংবাদিক সম্মেলন করে অতিমারির পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাচ্ছেন, খুঁটিনাটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য তাঁর পাশে হাজির থেকেছেন স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তা। করোনা-যুদ্ধে এ দেশের সাফল্যে এই বলিষ্ঠ, বিজ্ঞানভিত্তিক, ও বিশ্বাসযোগ্য নেতৃত্বের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

আরও পড়ুন: ‘মুখোশ খুলে দাও’, উত্তাল ইউরোপ

প্রথম দফায় করোনা-মোকাবিলায় সাফল্য মিললেও অগস্টের মাঝামাঝি আবার অকল্যান্ড শহরে সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছিল। সন্দেহ, বিদেশ থেকে আসা, কোয়রান্টিনে থাকা মানুষদের থেকে কোনও ভাবে ছড়িয়ে সংক্রমণ। আবার শহর জুড়ে লকডাউন ও নানা বিধি-নিষেধের ফলে পরিস্থিতি আবার নিয়ন্ত্রণে এসেছে, স্কুল-কলেজ আবার খুলছে, দোকানপাট খুলছে দূরত্ববিধি বজায় রেখে। তবে বড় জমায়েত, মেলা, সিনেমা, জলসা আপাতত বন্ধ। অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে গণপরিবহণে আবশ্যিক করা হয়েছে মাস্কের ব্যবহার। কোন যাত্রী মাস্ক না-পরলে তাঁর হাতে মাস্ক তুলে দিচ্ছেন পরিবহণকর্মী বা পুলিশকর্মী।এ ভাবেই অতিমারিকে হারিয়ে দিচ্ছে আমাদের এই ছোট্ট দেশ।

(অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক)

Coronavirus Pandemic New Zealand
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy