প্রতীকী ছবি।
এক সদ্যোজাতের দেহে আজ নোভেল করোনাভাইরাস মিলেছে নর্থ মিড্লসেক্সের এক হাসপাতালে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত সন্দেহে প্রসূতি মাকে সেখানে ভর্তি করা হয়েছিল। রিপোর্ট বলছে, তিনিও কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত। মাতৃগর্ভে থাকা কালে, নাকি জন্মের সময়ে বা পরে শিশুটির দেহে রোগ সংক্রমিত হয়েছে , তা স্পষ্ট নয় এখনও। তবে এই ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগ বাড়িয়েছে ব্রিটেনে। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ব্রিটেনের সরকার সে ভাবে তৎপর নয়— সঙ্কটের মধ্যে এমনই অভিযোগ উঠেছে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিরুদ্ধে। চাপের মুখে পড়ে আজ প্রশাসন জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকে যে কোনও জমায়েত নিষিদ্ধ করার কথা ভাবা হচ্ছে।
ইউরোপের বেশির ভাগ দেশ যখন তালাবন্দি হওয়ার পথে হেঁটেছে, ব্রিটেন একমাত্র স্কুল-পড়ুয়াদের যাওয়া-আসায় নিষেধ চাপায়নি। বাতিল হয়নি ঘোড়দৌড় অনুষ্ঠান, ‘শেল্টেন্যাম ফেস্টিভাল’। স্কটল্যান্ডে প্রিমিয়ার ম্যাচ হওয়ার কথা দর্শকশূন্য মাঠে। তবে গত কাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকায় জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার পরে পরিস্থিতি পাল্টায়। রোগটির নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে ব্রিটেন এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে বলে দাবি। দু’দিন আগে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য মেডিক্যাল উপদেষ্টা ক্রিস উইটি এবং মুখ্য বিজ্ঞান উপদেষ্টা প্যাট্রিক ভলান্সকে নিয়ে বসেছিলেন বরিস। সেখানে তিনি বলেন, ব্রিটেনে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা। বহু পরিবার প্রিয়জনকে হারাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সরকার থেকে যে যে ঘোষণা করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে: ১) কাশি থাকলে এক সপ্তাহ বাড়িতেই থাকুন। ২) বয়স্করা বাড়িতে থাকুন, প্রমোদতরী এড়ানোই ভাল। খেলা বা স্কুল বন্ধ করার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
করোনার প্রকোপ ১০ থেকে ১৪ সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছে যাবে বলে দাবি করেছেন বরিস। ব্রিটেনে করোনায় এখনও পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ৮০০। প্রশাসন তবু ততটা সক্রিয় নয় বলে অভিযোগ তোলেন প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। তাঁর মতে, ব্রিটেন ‘জাতীয় জরুরি অবস্থার’ মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। অথচ বিপর্যয় মোকাবিলার উদ্যোগী নয় সরকার। হান্টের কথায়, ‘‘এটা খুবই আশ্চর্যের যে আমরা কিছুই করছি না। অথচ আর চার সপ্তাহের মধ্যে নাকি ইটালি যে স্তরে রয়েছে, সেখানে পৌঁছে যাব আমরা। ঠিকমতো পদক্ষেপ না করলে সংক্রমণের গতি কমানো যাবে না।’’
শুধু বিরোধীরা নয়, বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ল্যানসেটের সম্পাদক রিচার্ড হর্টন এবং লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এবং ট্রপিকাল মেডিসিন-এর মার্টিন হিবার্টও বলেছিলেন, সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট সক্রিয় নয়। এত রকম সমালোচনার জেরেই নড়ে বসে বরিসের প্রশাসন। লন্ডন ম্যারাথন ২৬ এপ্রিল থেকে পিছিয়ে ৪ অক্টোবর করে দেওয়া হয়েছে। লন্ডনে মেয়র নির্বাচন-সহ সব স্থানীয় ভোট বাতিল করে ২০২১ সালের মে মাসে করার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ বছর মে মাসেই ওই সব ভোট হওয়ার কথা ছিল। পার্লামেন্টে দর্শনার্থীদের উপরেও চাপানো হচ্ছে নয়া নিষেধ।
জনসনকে সম্প্রতি প্রশ্ন করা হয়েছিল,নিজে করোনায় আক্রান্ত হলে কী করবেন? প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি বারবার ভাল করে হাত ধুচ্ছেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy