ব্রিটেনে পার্লামেন্ট উপনির্বাচন এবং মেয়র নির্বাচনে চমক দিল অতি দক্ষিণপন্থী নেতা নাইজেল ফারাজের দল রিফর্ম ইউকে। র্যাঙ্কর্ন-হেলস্বি পার্লামেন্ট আসনটি ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে গ্রেটার লিঙ্কনশায়ারে মেয়র নির্বাচনেও জিতেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দু’টি ক্ষেত্রেই জয়ী প্রার্থীরা কনজ়ারভেটিভ পার্টির প্রাক্তন নেতা।
২০২৪ সালে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে র্যাঙ্কর্ন-হেলস্বি কেন্দ্রের সাড়ে ১৪ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতেছিলেন লেবার পার্টির প্রার্থী মাইক অ্যামস্বেরি। তিনি ইস্তফা দেওয়ায় উপনির্বাচন হয়। মাত্র ছ’ভোটের ব্যবধানে লেবার পার্টির প্রার্থী কারেন শোরেকে হারান রিফর্ম ইউকের প্রার্থী তথা প্রাক্তন কনজ়ারভেটিভ কাউন্সিলর সারা পোচিন। তাঁরা দু’জনেই ৩৮ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেয়েছেন। কনজ়ারভেটিভ পার্টি এ বারের উপনির্বাচনে পেয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশেরও কম ভোট!
জোড়া জয়ে উচ্ছ্বসিত ফারাজ শনিবার বলেন, ‘‘এই ফলাফল প্রমাণ করছে, আমরাই এখন লেবার পার্টির সরকারের প্রধান বিরোধী শক্তি।’’ ১০ মাস আগের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি ৫২ শতাংশ, রিফর্ম ইউকে ১৮ শতাংশ এবং কনজ়ারভেটিভ প্রার্থী ১৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। অন্য দিকে, গ্রেটার লিঙ্কনশায়ারে মেয়র নির্বাচনে রিফর্ম ইউকের প্রার্থী ডেম আন্দ্রেয়া জেনকিন্স জয়ী হয়েছেন। তিনি কনজ়ারভেটিভ পার্টির প্রাক্তন এমপি। গ্রেটার লিঙ্কনশায়ারের মেয়র নির্বাচনে রিফর্ম ইউকে ৪২ শতাংশ, কনজ়ারভেটিভ পার্টি ২৬ শতাংশ এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের লেবার পার্টি মাত্র ১২ শতাংশ ভোট পেয়েছে।
জোড়া ভোটের এই ফলাফলকে ব্রিটিশ রাজনীতিতে ‘নতুন শক্তির উত্থান’ হিসেবেই দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে। মূলত টোরি (কনজ়ারভেটিভ পার্টি) বনাম লেবার শিবিরে বিভক্ত ইংল্যান্ডের রাজনীতিতে কখনও কখনও লিবারেল ডোমেক্র্যাটরা দাগ কাটলেও অন্য কোনও দলের অস্তিত্বই কার্যত ছিল না। এতদিন পর্যন্ত ব্রিটেনের রাজনীতিতে ‘স্পয়লার’ (ভারতীয় রাজনীতির পরিভাষায় ‘ভোট কাটুয়া’) হিসেবে পরিচিতি ছিল কট্টরপন্থী ফারাজের নেতৃত্বাধীন দলের। গত বছরের জুলাই মাসে পার্লামেন্ট নির্বাচনে রিফর্ম ইউকে নতুন দল হিসাবে লড়ে প্রায় ১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। জিতেছিল চারটি আসনে। বেশ কয়েকটি আসনে কনজ়ারভেটিভ পার্টির ভোট কেটে লেবারদের জয়ে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছিল রিফর্ম ইউকে। এ বার তারা চলে এল প্রতিদ্বন্দ্বিতার সামনের সারিতে।