Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ইইউ-এর সঙ্গে কথা নয় এখন, জানালেন ক্যামেরন

এক গণভোটের হাওয়ায় গদি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তিনি। এরই মধ্যে আবার দরজায় কড়া নাড়ছে দ্বিতীয় গণভোটের দাবিও। তবে ইইউ-তে থাকা না থাকা নিয়ে এখনই ফের গণভোট চাইছেন না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।

হাউসেস অব পার্লামেন্টের পথে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।  ছবি: এএফপি

হাউসেস অব পার্লামেন্টের পথে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ছবি: এএফপি

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৬ ০৩:৪৪
Share: Save:

এক গণভোটের হাওয়ায় গদি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তিনি। এরই মধ্যে আবার দরজায় কড়া নাড়ছে দ্বিতীয় গণভোটের দাবিও। তবে ইইউ-তে থাকা না থাকা নিয়ে এখনই ফের গণভোট চাইছেন না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ব্রেক্সিটের পর আজই প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠক সেরেছেন ক্যামেরন। তার পরেই তাঁর মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অদূর ভবিষ্যতে এ নিয়ে ফের ভোটাভুটির আশা দেখছে না সরকার। তা সে যত লক্ষ মানুষই অনলাইন আবেদনে সই করুন না কেন। তবে একই সঙ্গে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইইউ যতই তাড়া দিক না কেন, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া এখনই শুরু করতে রাজি নয় ব্রিটেন। এই দায়িত্বটা আগামী প্রধানমন্ত্রীর কাঁধেই রাখতে চেয়েছেন ক্যামেরন। জানিয়েছেন, তিন মাস পরে যিনি আসবেন, ইইউ ছাড়ার খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনায় বসবেন তিনিই।

এই রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যেই একটু একটু করে টুকরো হচ্ছে ব্রিটেনের সমাজ। বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণের অভিযোগ সামলাতে গিয়ে এখন রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে ব্রিটিশ পুলিশ। বেছে বেছে নিশানা করা হচ্ছে ব্রিটেনের অভিবাসীদেরই। সব ক্ষেত্রেই যে আক্রমণ মারধরের পর্যায়ে পৌঁছচ্ছে তা অবশ্য নয়। মূলত মৌখিক বা লিখিত ভাবেই নিশানা করা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে ইংল্যান্ডে বসবাসকারী প্রবাসীদের। রাজধানী লন্ডন-সহ ইংল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গা থেকে এই ধরনের অভিযোগ পেয়েছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড।

গত কালই লন্ডনের ‘পোলিশ সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর মূল ফটকের সামনে কে বা কারা ‘লিভ দ্য ইউ/নো মোর পোলিশ ভারমিন’ লিখে গিয়েছে। কেমব্রিজশায়ার আর পূর্ব ইংল্যান্ডের হান্টিংডনেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। পোলান্ড-সহ পূর্ব ইউরোপের অন্য বাসিন্দাদের ব্রিটেন ছাড়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে সর্বত্র। কোথাও রাস্তার ধারে কোথাও বা কোনও স্কুলের সামনে পোস্টার পড়ছে। ব্যানারে লেখা হচ্ছে ‘রেপফিউজিজ নট ওয়েলকাম’।

লন্ডনে থিয়েটারে অভিনয় করেন মারিয়া ম্যাকাতির। লন্ডনের রাজপথেই কাল এক দল লোক প্রকাশ্যে তাঁকে দেশ ছাড়ার হুমকি দিয়েছে বলে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গী ওই মহিলা। রেয়াত করা হচ্ছে না স্কুলের শিশুদেরও। বাড়ি বাড়ি গিয়ে লেটারবক্সে ‘লিভ ব্রিটেন’ জাতীয় প্রচার পুস্তিকা ফেলে আসা হচ্ছে কোথাও কোথাও। ব্রিটেন ছেড়ে যাওয়ার হুমকি পাচ্ছেন এখানে বসবাসকারী মুসলিমরাও।

তবে এই ধরনের আচরণ বরদাস্ত করা হবে না বলে আজ স্পষ্ট জানিয়েছেন লন্ডনের নতুন মেয়র সাদিক খান। অভিবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘‘আপনারা সব ধরনের সম্প্রদায়ই লন্ডনে স্বাগত। শহরের মেয়র হিসেবে লন্ডনের বৈচিত্রের মিশ্রণের মর্যাদা রক্ষা করা আমার কর্তব্য।’’ পুলিশকে প্রয়োজনে কড়া হওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

সমস্যা বেড়েছে লেবার নেতা জেরেমি করবিনেরও। ব্রেক্সিটে তাঁর ভূমিকার বিরোধিতা করে কালই তাঁর ছায়া মন্ত্রিসভা (শ্যাডো ক্যাবিনেট) থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন আট মন্ত্রী। আজ সংখ্যাটাই বেড়ে হয়েছে সাতাশ। বিদ্রোহীদের মধ্যে রয়েছেন করবিন ঘনিষ্ঠ প্রবাসী বাঙালি লিসা নন্দী এবং ওয়েন স্মিথ নামে আর এক মন্ত্রী। করবিন এতে বিচলিত নন একটুও। ইতিমধ্যেই অন্য ছায়া মন্ত্রীদের দিয়ে তাঁর ‘মন্ত্রিসভা’ ভরে ফেলেছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

David Cameroon Brexit European Union EU
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE