Advertisement
E-Paper

আমেরিকা ছেড়ে সুইৎজ়ারল্যান্ডে চলে যাচ্ছেন নোবেলজয়ী দম্পতি অভিজিৎ বিনায়ক-এস্থার! কারণ উচ্চশিক্ষায় ট্রাম্পের বরাদ্দ হ্রাস?

অভিজিৎ এবং এস্থারের সুইৎজ়ারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার খবরটি প্রথম প্রকাশ করেন সেখানকার অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ফ্লোরিয়ান স্কিউয়ার।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৫ ২৩:৪৭
(বাঁ দিকে) অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এস্থার ডাফলো (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এস্থার ডাফলো (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আমেরিকা ছাড়ছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁ স্ত্রী এস্থার ডাফলো। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে সুইৎজ়ারল্যান্ডের জ়ুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবেন তাঁরা। থাকবেন সে দেশেই। এ কথা সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানিয়েছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ফ্লোরিয়ান স্কিউয়ার। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণায় বরাদ্দ কমিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার পরেই জল্পনা তৈরি হয়, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের কারণে আমেরিকা ছাড়তে পারেন শিক্ষাবিদ, গবেষকেরা। সস্ত্রীক অভিজিৎও কি সে কারণেই আমেরিকা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, উঠছে প্রশ্ন।

বিষয়টি নিয়ে অভিজিতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে আনন্দবাজার ডট কম। যদিও তিনি ফোন ধরেননি। জবাব দেননি হোয়াটসঅ‍্যাপ বার্তারও।

অভিজিৎ এবং এস্থারের সুইৎজ়ারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার খবরটি প্রথম প্রকাশ করেন ফ্লোরিয়ান। তিনি নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে লেখেন, ‘২০২৬ সালের ১ জুলাই জ়ুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে লেম্যান ফাউন্ডেশন প্রফেসর হিসাবে যোগ দিতে চলেছেন নোবেলজয়ী এস্থার ডাফলো এবং অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। এটা জানাতে পেরে আমি আপ্লুত।’ সেখানে অর্থনীতির একটি নতুন কেন্দ্রও (সেন্টার ফর ডেভলপমেন্ট ইকনোমিকস) গড়ে তুলবেন অভিজিৎ এবং তাঁর স্ত্রী এস্থার। ফ্লোরিয়ান জানিয়েছেন, তাঁরা যে সেখানে অধ্যাপক, গবেষক হিসাবে যোগ দিচ্ছেন, তা জ়ুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে খুব গর্বের। এতে প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে বলেও জানিয়েছেন ফ্লোরিয়ান।

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এস্থার ডাফলো।

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এস্থার ডাফলো। ছবি: সংগৃহীত।

সুইজারল্যান্ডে সম্প্রতি ‘লেম্যান সেন্টার ফর ডেভলপমেন্ট, এডুকেশন, পাবলিক পলিসি’ তৈরি হয়েছে। সেই প্রতিষ্ঠানেরই নেতৃত্ব দেবেন এস্থার এবং অভিজিৎ। ব্রাজ়িলের লেম্যান ফাউন্ডেশনের অনুদানে তৈরি হয়েছে এই প্রতিষ্ঠান। সেখানেই অর্থনীতি, নীতির মূল্যায়ন নিয়ে গবেষণা চালাবেন অভিজিৎ এবং এস্থার।

বর্তমানে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি (এমআইটি)-তে পড়ান এস্থার। ইন্ডিয়া টু ডে-তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এস্থার বলেছেন, ‘‘নতুন লেম্যান সেন্টার আমাদের কাজের সম্প্রসারণের সুযোগ দেবে। পড়ুয়াদের তৈরি করারও সুযোগ দেবে।’’ অভিজিৎ আমেরিকার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আগামী দিনে নিজেদের গবেষণা, নীতি নিয়ে কাজের সুযোগ দেবে জ়ুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়। সেই কোনও সংশয় নেই।’’

প্রশ্ন উঠছে, এই কাজের সুযোগের জন্যই কি আমেরিকা ছাড়ছেন অভিজিৎ? তিনি এখন এমআইটি-তে পড়ান। কেন সেই বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দিচ্ছেন, তা নিয়ে কিছু স্পষ্ট করেননি।

প্রসঙ্গত, ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে ব্যয়সঙ্কোচের পথে হেঁটেছেন। বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাদ্দ কমিয়েছেন। তাঁর রোষে পড়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, সরকারের দেওয়া শর্তাবলি না-মানলে বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার জন্য সকল সরকারি সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। গত মার্চে আমেরিকায় বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষা দফতর। এই নির্দেশ কার্যকর হওয়ার ফলে শিক্ষা খাতে ব্যয় বরাদ্দ বন্ধ করে আমেরিকার কেন্দ্রীয় প্রশাসন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিক্ষা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার ফের তুলে দেওয়া হয় আমেরিকার প্রদেশগুলির উপরে। স্থানীয় প্রশাসনই আমেরিকার শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে মাথা ঘামাবে বলে জানানো হয়। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের তকমা খোয়ায় নাসা। তার আগে অর্থবরাদ্দও কমানো হয়। শিক্ষাবিদদের একাংশ এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এ রকম চললে আমেরিকা ছাড়বেন বহু গবেষক। এ বার আমেরিকা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন অভিজিৎ এবং এস্থার। নেপথ্যে কি ট্রাম্পের নীতি! উঠছে প্রশ্ন।

america Nobel Laureates Esther Duflo Switzerland
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy