ফের আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। গত দু’মাসে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশে যাচ্ছেন তিনি। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করার জন্য বুধবারই ভারতীয় পণ্যে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। বাড়তি ২৫ শতাংশের ফলে আগামী ২৭ অগস্ট থেকে ভারতকে আমেরিকায় পণ্য রফতানি করতে হলে ৫০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। এই আবহে মুনিরের আমেরিকা সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
চলতি মাসের শেষেই অবসরগ্রহণ করছেন মার্কিন সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল মাইকেল কুরিল্লা। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই সেনা আধিকারিকের বিদায় সম্বর্ধনায় উপস্থিত থাকবেন মুনির। এর আগে কুরিল্লা সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তানের প্রশংসা করেছিলেন। বলেছিলেন, বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী। তাই আমাদের পাকিস্তান এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলা উচিত।” পহেলগাঁও কাণ্ডের পর সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রশ্নে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতে ভারত যখন বিভিন্ন দেশে প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে, সেই সময় ইসলামাবাদের প্রশংসা করে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন ওই সেনা আধিকারিক। এ বার তাঁর বিদায় সম্বর্ধনায় যোগ দিতে আমেরিকায় যাচ্ছেন মুনির।
কুরিল্লা পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকার সামরিক কার্যকলাপের উপর নজরদারির দায়িত্বে রয়েছেন। সম্প্রতি পেন্টাগনের দেওয়া গোয়েন্দা তথ্যকে কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আইএস-খোরাসানের পাঁচ জঙ্গিকে আটক করে পাক সেনা। এই কারণে ইসলামাবাদের প্রশংসা শোনা যায় তাঁর গলায়। প্রতিদানে পাকিস্তানও তাঁকে অন্যতম সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘নিশান-এ-ইমতিয়াজ়’-এ ভূষিত করে। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের অবশ্য মত, ভারত এবং পাকিস্তানকে একই বন্ধনীতে রাখার পুরনো মার্কিন কৌশলই ব্যবহার করেছেন কুরিল্লা।
এর আগে গত জুন মাসে, পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার পরে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন মুনির। সে বার ট্রাম্পের সঙ্গে বসে মধ্যাহ্নভোজও সারেন। সেই প্রথম কোনও সরকারি আধিকারিক ছাড়াই পাক সেনাপ্রধানকে স্বাগত জানিয়েছিলেন আমেরিকার কোনও প্রেসিডেন্ট। ভারত-পাক উত্তেজনা প্রশমনেও মুনিরের ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন ট্রাম্প। ঘটনাচক্রে, তার পরেই পরমাণু যুদ্ধ রোখার জন্য ট্রাম্পকে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাব দেন পাক সেনাপ্রধান। তারও কিছু দিন পরে আনুষ্ঠানিক ভাবে ট্রাম্পকে নোবেল দেওয়ার প্রস্তাব দেয় পাক সরকার।
গত বৃহস্পতিবারই ট্রাম্প পাকিস্তানের সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক চুক্তি সেরে ফেলার কথা জানান। চুক্তি অনুযায়ী সে দেশের বিশালাকার তৈলভান্ডারের উন্নতিতে পাকিস্তান এবং আমেরিকা যৌথ ভাবে কাজ করবে। তবে ট্রাম্প উল্লিখিত ‘বিশালাকার তৈলভান্ডার’ পাকিস্তানে রয়েছে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বৃহস্পতিবারই পাকিস্তানের উপর প্রযুক্ত পারস্পরিক শুল্কের হার কমিয়ে ১৯ শতাংশ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে পাকিস্তানের উপরেই সবচেয়ে কম পারস্পরিক শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা।