আর্থিক দুর্নীতি মামলায় রেঞ্জার্স বাহিনীর হাতে গত ৯ মে গ্রেফতার হয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার পরেই সারা দেশ বিক্ষোভের আগুনে জ্বলে ওঠে। ইমরানের মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ-আন্দোলনে নামেন তাঁর দল, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর অসংখ্য নেতা-কর্মী-সমর্থক। ভাঙচুর, হাঙ্গামা, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের পাশাপাশি কয়েক দিন চলেছিল ব্যাপক পুলিশি ধরপাকড়ও। পিটিআইয়ের তরফে জানানো হয়, ইমরানের গ্রেফতার পরবর্তী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় তাদের অন্তত ৭ হাজার কর্মী-সমর্থককে কারাগারে বন্দি করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে ৪ হাজার কর্মী শুধু পঞ্জাব প্রদেশেরই। এই ৪ হাজার পিটিআই কর্মীর মধ্যে অন্তত ১২৩ জনকে দেরি না করে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে লাহোর হাই কোর্ট। আজ হাই কোর্টের বিচারপতি আনওয়ারুল হক এই নির্দেশ দেন। পিটিআই নেতা ফারুক হাকিব দলীয় কর্মীদের মুক্তি নিয়ে হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই মামলার শুাননিতেই আজ এই রায় দিয়েছে লাহোর হাই কোর্ট। ফয়সলাবাদ থেকে গ্রেফতার হওয়া এই কর্মীরা এখন পঞ্জাব প্রদেশের বিভিন্ন জেলে বন্দি রয়েছেন।
পাক পঞ্জাব প্রদেশের অস্থায়ী মুখ্যমন্ত্রী মোহসিন নকভি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ৯ তারিখের হিংসায় পিটিআইয়ের অন্তত ৫০০ মহিলা সমর্থক দেশের নানা কারাগারে বন্দি রয়েছেন। মোট ১৩৮টি মামলা রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। মোহসিন আরও জানিয়েছেন, মহিলা সমর্থকদের যাতে পুরুষ পুলিশকর্মীরা গ্রেফতার না করেন, সেই নির্দেশ দিয়ে রেখেছিল প্রশাসন। কিন্তু সেনা ও সরকারের সম্পত্তি ভাঙচুরের অভিযোগে ওই মহিলাদের গ্রেফতার করতে হয়। যদিও এই মহিলাদের অমানবিক ভাবে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছে ইমরানের দল। তাদের আরও দাবি, সরকারি ভাবে সে দিনের হিংসায় ১০ জন পিটিআই কর্মীর মৃত্যুর কথা বলা হলেও আসল সংখ্যাটা ৪০ ছাড়িয়েছে।
গত কালই লাহোরের সন্ত্রাসদমন আদালত আগামী ২ জুন পর্যন্ত ইমরানের অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ বাড়িয়েছে। আজ খুব ভোরে জ়ামান পার্কের বাড়ি থেকে শওকত খানুম হাসপাতালে যান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। দলীয় সূত্রে খবর, পেটে ব্যথায় ভুগছেন ইমরান। প্রায় চার ঘণ্টা ওই হাসপাতালে ছিলেন তিনি। সেখানে তাঁর বিভিন্ন পরীক্ষা করানো হয়। হাসপাতাল জুড়ে নিরাপত্তার কড়াকড়ি ছিল চোখে পড়ার মতো। পরীক্ষা শেষে অবশ্য বাড়ি ফিরে গিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)