Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Iran Pakistan Conflict

ইরানের সঙ্গে ফের সম্পর্ক স্থাপনের ইঙ্গিত পাকিস্তানের

নিজের দেশের নিরাপত্তা বজায় রাখতে সীমান্তের ও-পারের জঙ্গি ঘাঁটিকে আক্রমণ করা হচ্ছে, পারস্পরিক হামলা নিয়ে পাকিস্তান ও ইরানের যুক্তির ধরন ছিল একই। আর তাতেই নড়েচড়ে বসেছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহল।

Representative Image

রয়টার্সের প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:০৩
Share: Save:

ইরান-পাকিস্তানের সংঘাত নিয়ে উত্তেজনায় টানটান মধ্য এশিয়া। তার মধ্যেই আজ পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়ে দিল, সংঘাত জিইয়ে রাখার আগ্রহ নেই তাদের। পাশাপাশি মন্ত্রক এ-ও জানিয়েছে, নিরাপত্তার প্রয়োজনে ইরানের সঙ্গে মিলে কাজ করতে আগ্রহী তারা। আজ সেনা ও গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন পাকিস্তানের তদারকি প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার উল হক কাকর। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ইরানের সঙ্গে ফের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে পাকিস্তান। কোনও সংঘাতের আবহ রাখবে না।

পাক বিদেশমন্ত্রী জলিল আব্বাস জিলানি গত কালই ফোনে কথা বলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমির আবদোল্লাহিয়াঁর সঙ্গে। তার পরেই এক্স হ্যান্ডলে পাক বিদেশ মন্ত্রকের বার্তা—পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতায় নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে ইরান ও পাকিস্তান। তুরস্কের বিদেশমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গেও কথা হয় জিলানির। সেখানেও তিনি জানান, যুদ্ধের ইচ্ছা পাকিস্তানের নেই। তবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ প্রয়োজন।

যদিও পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম বালুচিস্তান প্রদেশ ও ইরানের দক্ষিণ-পূর্ব সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশে এখনও উত্তেজনা অটুট। ইরানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে আপাতত নিষেধ করা হয়েছে পাক উড়ানগুলিকে। এর মধ্যেই আজ প্রায় ছ’লক্ষ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে সামরিক মহড়া করেছে ইরান। মহড়ায় ছিল বায়ুসেনাও। ইরান সরকার আজ জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে আকাশপথে বায়ুসেনার মহড়া শুরু করেছে তারা। কূটনীতিকদের মতে, এটি প্রচ্ছন্ন ভাবে শক্তি প্রদর্শন হতেও পারে। ফলে, এখনও পরিস্থিতিযথেষ্ট উদ্বেগজনক।

নিজের দেশের নিরাপত্তা বজায় রাখতে সীমান্তের ও-পারের জঙ্গি ঘাঁটিকে আক্রমণ করা হচ্ছে, পারস্পরিক হামলা নিয়ে পাকিস্তান ও ইরানের যুক্তির ধরন ছিল একই। আর তাতেই নড়েচড়ে বসেছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহল। আশঙ্কা, নিরাপত্তা বজায় রাখার অভিযান যে কোনও মুহূর্তেই যুদ্ধে পরিণত হতে পারে। উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত, চিন, রাশিয়া ও আমেরিকা-সহ বহু দেশ। এই হামলা অনভিপ্রেত, মন্তব্য রাষ্ট্রপুঞ্জেরও। চিন জানিয়েছে, দুই দেশ চাইলে তারা মধ্যস্থতা করতে রাজি।

পাকিস্তানের দাবি, মঙ্গলবার ইরানের হামলায় যে ক’জনের প্রাণ গিয়েছে তাদের মধ্যে দু’টি শিশু ছিল। ইরানের দাবি, বৃহস্পতিবার পাক হানা ‘মার্গ বার সর্মাচার’-এ প্রাণ গিয়েছে কমপক্ষে ন’জনের। আর দুই দেশের যৌথ দাবি, কারও সার্বভৌমত্ব খর্ব করার উদ্দেশ্য নয়, নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই এই হামলা। এই প্রসঙ্গেই কোনও কোনও পাক সংবাদমাধ্যমের দাবি, বৃহস্পতিবারের হামলায় প্রাণ গিয়েছে ১০ জন পাকিস্তানিরও। তবে, সেই দাবি নিয়ে মুখ খোলেনি পাক প্রশাসন।

আমেরিকা অবশ্য প্রথম থেকেই ওই হামলা অনভিপ্রেত বলার পাশাপাশি ইরানের কড়া সমালোচনা করে এসেছে। তবে, পাকিস্তানের হামলার পিছনে তাদের কোনও ইন্ধন রয়েছে কি না, সংবাদমাধ্যমের এই প্রশ্নে তাদের মুখে কুলুপ। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, আমেরিকার পরামর্শেই ইরানে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। সেই প্রশ্ন করা হলে বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক বৈঠকে আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ‘‘এই বিষয়ে কিছু বলার নেই আমার।’’

বরং ম্যাথুর পাল্টা দাবি, হামলা-প্রতি হামলা থেকে কী ভাবে যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে তা টের পেয়েছে সারা বিশ্ব। তাঁর কথায়, ইরান-পাকিস্তানের মধ্যে যাতে সংঘাত আর না বাড়ে তার জন্য কূটনৈতিক সমস্ত পদক্ষেপ করতে রাজি আমেরিকা। পাশাপাশি, ইরানকে হিজ়বুল্লার প্রধান অনুদানকারী ও হামাসের অন্যতম সমর্থক বলেও উল্লেখ করেছেন মিলার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pakistan Iran
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE