E-Paper

গোয়ায় বিলাবল, বরফ গলার কি সূচনা

এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে আজ দুপুরে ভারতের মাটিতে পা রেখেছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো। পৌঁছেই টুইট করেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৩ ০৮:৩৪
Bilawal Bhutto Zardari.

মুখোমুখি: এসসিও-র পার্শ্ববৈঠকে গোয়ায় পাক বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারি ও রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। বৃহস্পতিবার। পিটিআই

পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারির টুইট— ‘গোয়া থেকে সেলাম! আমরা ভারতের গোয়ায় পৌঁছে গিয়েছি।’

এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে আজ দুপুরে ভারতের মাটিতে পা রেখেছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো। পৌঁছেই এই টুইটটি করেন তিনি। দিনের কর্মসূচি সম্পর্কে জানাতে বলেন, “রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করব। তার পরে উজ়বেকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে। নৈশাহারেও কিছু পার্শ্ববৈঠক হওয়ার কথা।” গোয়া সফর নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে তাঁর বক্তব্য, “এসসিও বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়ে গোয়ায় আসতে পেরে আমি খুবই খুশি। আশা করছি এসসিও বৈঠক সফল হবে।” দেশ ছাড়ার আগেও একটি টুইট করে তিনি বলেছেন, ‘গোয়ায় শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজ়েশনের বৈঠকে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তই প্রমাণ করছে এসসিও-র কর্মসূচির প্রতি পাকিস্তানের অটল আস্থা রয়েছে। বৈঠক চলাকালীন আমি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলির সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার অপেক্ষায় আছি।’

এই ‘বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ’-এর তালিকায় তিনি যেমন ভারতকে রাখেননি, ভারতের পক্ষ থেকেও বিলাবলের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকের কোনও উদ্যোগ কখনও ছিল না। তবে সূত্রের খবর, রাতে গোয়ার নির্দিষ্ট পাঁচতারা হোটেলের নৈশভোজে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় এবং করমর্দন হয়েছে পাকিস্তানের মন্ত্রীর। সূত্রের খবর, বাকি দেশের বিদেশমন্ত্রীদের যে ভাবে স্বাগত জানানো হয়েছে, একই ভাবে বিলাবলকেও দেশের মাটিতে স্বাগত জানিয়েছে ভারত। এর ফলে বিলাবলের সফরসঙ্গীরাও সন্তুষ্ট। যদিও বিদেশ মন্ত্রকের তরফে সবিস্তার কিছু জানানো হয়নি।

কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, বিলাবলের এই সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনও বড় তারতম্য আনবে না। কিন্তু এর পরে জুনে এসসিও শীর্ষ সম্মেলন এবং সেখানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে ডাকা হবে বলেই খবর। এই সফরগুলিতে দু’দেশের মধ্যে এক ধরনের সংযোগ ফের তৈরি হতে পারে। তার পরেই অক্টোবর ও নভেম্বরে ভারতে রয়েছে এক দিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপ। এসসিও-র বৈঠক সফল হলে পাক ক্রিকেট দলের ভারত সফরের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হতে পারে।

কূটনৈতিক শিবিরের একাংশ বলছেন, আলোচনায় বসা তো অনেক পরের কথা। বিলাবলকে যে আমন্ত্রণ জানানো হল এবং তিনি যে এলেন, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতিতে এটাই বেশ বড় ব্যাপার। দীর্ঘদিন পরে কোনও পাকিস্তানের শীর্ষ স্থানীয় নেতাকে ভারতে আসতে দেখা গেল। এর পরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ভারতে আসার পথও কিছুটা প্রশস্ত হল বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১১ সালের জুলাই মাসে শেষ বার রাষ্ট্রীয় সফরে পাক বিদেশমন্ত্রী হিসেবে ভারতে এসেছিলেন হিনা রব্বানি খার। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ় শরিফ। তার পরে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় আর কোনও পাক মন্ত্রী রাষ্ট্রীয় কূটনৈতিক সফরে ভারতে আসেননি। তবে ২০১৬ সালে ‘হার্ট অব এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে এসেছিলেন নওয়াজ় সরকারের তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সরতাজ় আজ়িজ়।

পাকিস্তান জঙ্গিদের মদত দেওয়া বন্ধ না করলে এবং আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস নির্মূল না করলে আলোচনায় বসা সম্ভব নয়, এ কথা বার বার বিভিন্ন মঞ্চে বলেছে নয়াদিল্লি। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে কয়েক দিন আগে জম্মুর পুঞ্চ জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর কনভয়ে জঙ্গি হামলার পরে। সর্বশেষ এই হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচ জওয়ানের মৃত্যু হয়। এই হামলার পিছনে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের হাত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bilawal Bhutto Zardari India Pakistan

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy