সন্ত্রাস দমন নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ইমরান খানও। —ফাইল চিত্র।
সন্ত্রাসে মদত জোগানো নিয়ে এ বার পাকিস্তানকে তীব্র আক্রমণ প্রাক্তন সিআইএ প্রধানের। কুখ্যাত জঙ্গিদের দেশে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে আগেও সমালোচনার মুখে পড়েছে পাক সরকার। কিন্তু এতে আদতে তাদেরই ক্ষতি বলে মত ওই আধিকারিকের। তাঁর কথায়, ভারতকে জব্দ করতে দুধ-কলা দিয়ে কালসাপ পুষেছে পাকিস্তান। ছোবল খেতেই হবে।
বারাক ওবামার আমলে সিআইএ-র ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ছিলেন মাইকেল মোরেল। ২০১১-য় পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে ওসামা বিন লাদেন নিধনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। সম্প্রতি কূটনীতিক কার্ট ক্যাম্পবেল এবং ভারতে মার্কিন সরকারের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড বর্মার সঙ্গে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। সেখানেই পাকিস্তানকে তুলোধনা করেন।
মাইকেল মোরেল বলেন, ‘‘ভারতের সামনে বিপন্ন বোধ করে পাকিস্তান। অস্তিত্ব সঙ্কটে ভোগে। পাছে আফগানিস্তানের উপরও ভারত প্রভাব খাটায়, সেই ভয়ও রয়েছে। ভারতকে জব্দ করতেই তাই বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন তৈরি করেছে তারা। কিন্তু নিজেদের বিপদ ডেকে এনেছে তারা। শেষ মেশ তাদেরই ফল ভুগতে হবে। এই মুহূর্তে পাকিস্তানের চেয়ে বিপজ্জনক দেশ বোধহয় আর একটাও নেই।’’
সিআইএ-র প্রাক্তন প্রধান মাইকেল মোরেল। —ফাইল চিত্র।
আরও পড়ুন: মাসুদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিল পাকিস্তান, নিষেধাজ্ঞা চলাফেরাতেও
সন্ত্রাস দমনে এতদিন মার্কিন সরকারের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকার অনুদান পেলেও, কোনও পদক্ষেপ করেনি পাক সরকার। বরং লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মহম্মদ-এর মতো জঙ্গি সংগঠনগুলি দিব্যি মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেখানে। খাইবার পাখতুনখোয়া-সহ আফগান সীমান্ত সংলগ্ন বেশ কিছু এলাকায় আবার সক্রিয় তালিবান জঙ্গিরাও। এ সবের মধ্যে পাকিস্তানের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। গত বছর অগস্টে ইমরান খান ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলে আশা করা হলেও আদতে তা হয়নি। বরং চিনের কাছে প্রচুর ধার দেনা হয়ে গিয়েছে তাদের।
এমন পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো একেবারেই সম্ভব নয় বলে মত মাইকেল মোরেলের। তিনি বলেন,‘‘পাক অর্থনীতির কোনও ভবিষ্যৎ নেই। যুব সমাজের কর্মসংস্থান করা কোনওভাবেই সম্ভব নয় তাদের পক্ষে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাও একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাই ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসা পাঠাতে বাধ্য হন অভিভাবকরা। পরবর্তীকালে ওই সমস্ত ছেলেমেদের কী হয় কা সকলেরই জানা।’’
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার স্কুলে জোর করে ঢোকার অভিযোগ, গ্রেফতার দিল্লির চিত্র সাংবাদিক
আগামী ১০ বছরের মধ্যে পাকিস্তান জুড়ে ‘আরব বসন্ত’ আন্দোলন শুরু হলে অবাক হবেন না বলেও জানান মোরেল। তিনি বলেন, ‘‘উগ্রপন্থা পাকিস্তানের অলিগলিতে ঢুকে পড়েছে। এমনকি দেশের সেনাবাহিনীতেও প্রবেশ করেছে। তাই আগামী পাঁচ-দশ বছরে আরব বসন্তের মতো আন্দোলনের জেরে পাক মসনদে কোনও উগ্রপন্থী সরকার গঠিত হলে অবাক হব না।’’ পাকিস্তান পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র। ভবিষ্যতে ওই উগ্রপন্থী সরকারের হাতে পরমাণু অস্ত্র পৌঁছলে, পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy