Advertisement
E-Paper

টিআরএফের বিরুদ্ধে মার্কিন পদক্ষেপ নিয়ে সুর বদলে ফেলল পাকিস্তান, তবে লশকর-যোগের দাবি ওড়ালেন পাক বিদেশমন্ত্রী

পাক বিদেশমন্ত্রী দার জানিয়েছেন, টিআরএফকে আমেরিকা ‘বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’র তকমা দিলে তা পাকিস্তানের বিষয় নয়। তবে তারা সন্ত্রাসে জড়িত রয়েছে বলে প্রমাণ পেলে তবেই পদক্ষেপ করা হবে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৫ ১৬:৩৫
(বাঁ দিকে) ইশাক দার। মার্কো রুবিয়ো (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) ইশাক দার। মার্কো রুবিয়ো (ডান দিকে)। ছবি: এক্স।

প্রথমে আপত্তি জানিয়েছিল পাকিস্তান। পহেলগাঁও হামলার দায় প্রাথমিক ভাবে স্বীকার করেছিল যে গোষ্ঠী, সেই টিআরএফ (দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট)-কে লশকর-এ-ত্যায়বার ‘ছায়া সংগঠন’ বলে আমেরিকা ‘বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’র তকমা দিয়েছিল। সেই যোগও অস্বীকার করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু আমেরিকায় গিয়ে সুর বদলে ফেললেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার। আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়োর সঙ্গে বৈঠকের সময়ে দার জানিয়েছেন, টিআরএফকে আমেরিকা ‘বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’র তকমা দিলে তা পাকিস্তানের বিষয় নয়। তবে তারা সন্ত্রাসে জড়িত রয়েছে বলে প্রমাণ পেলে তবেই পদক্ষেপ করা হবে। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আরও দাবি করেছেন, হাফিজ় সইদের লশকরের সঙ্গে টিআরএফের কোনও যোগ নেই। কারণ বহু বছর আগে সেই লশকর সংগঠন নির্মূল করেছে পাকিস্তান।

ওয়াশিংটন ডিসিতে শুক্রবার রুবিয়োর সঙ্গে বৈঠক করেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী দার। বাণিজ্য, নিরাপত্তা-সহ একাধিক বিষয়ে কথা হয় তাঁদের। একটি কর্মসূচিতে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী দার বলেন, ‘‘টিআরএফ-কে বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর তকমা দেওয়া আমেরিকার সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। এটা আমাদের বিষয় নয়। ওরা জড়িত রয়েছে, আমেরিকার কাছে এই সংক্রান্ত কোনও প্রমাণ থাকলে আমরা তা স্বাগত জানাই। কিন্তু লশকরের সঙ্গে টিআরএফ-কে যুক্ত করা ভুল। বহু বছর আগে ওই গোষ্ঠীকে নির্মূল করেছে পাকিস্তান। গোষ্ঠীর সদস্যদের গ্রেফতার করে জেলে ভরা হয়েছে। গোটা গোষ্ঠীকেই ধ্বংস করা হয়েছে।’’ বৈঠকের পরে এক্স (সাবেক টুইটারে) দারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রুবিয়ো।

চলতি মাসের শুরুতেই টিআরএফ নিয়ে দারের গলায় অন্য সুর শোনা গিয়েছিল। তিনি স্পষ্টই জানিয়েছিলেন, পাকিস্তান বিষয়টি গ্রহণ করবে না। দার বলেছিলেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতিতে টিআরএফ-এর উল্লেখের বিরোধিতা করছি। আমরা গ্লোবাল ক্যাপিটাল্‌সের ফোন পেয়েছি। কিন্তু পাকিস্তান তা গ্রহণ করবে না।’’ পাকিস্তানের বিবৃতিতে এসেছিল পহেলগাঁওয়ের প্রসঙ্গ। লেখা হয়, ‘‘পহেলগাঁওয়ের ঘটনার তদন্ত এখনও অমীমাংসিত।’’ টিআরএফ-কে ‘বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’ এবং ‘বিশেষ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’-র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে মার্কিন প্রশাসন যে বিবৃতি দিয়েছিল, তাতে এই গোষ্ঠীটিকে লশকরের ছায়া সংগঠন বলে উল্লেখ করা হয়। তাতেই আপত্তি তোলে পাকিস্তান। তারা বলে, ‘‘লশকর পাকিস্তানে নিষিদ্ধ, একটি বিলুপ্ত সংগঠন। তাদের সঙ্গে এর কোনও যোগ বাস্তবতার বিরোধী। সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলিকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তাদের নেতৃত্বকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিচার হয়েছে। পাকিস্তান অত্যন্ত কার্যকর ভাবে সংগঠন ধ্বংস করেছে।’’ আমেরিকায় গিয়ে লশকরের সঙ্গে টিআরএফের যোগের অভিযোগ আগের মতোই অস্বীকার করেছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী। তবে ওই গোষ্ঠীকে আমেরিকার ‘বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’র তকমা দেওয়া নিয়ে সুর নরম করেছেন তিনি। জানিয়েছে, এটা পাকিস্তানের বিষয় নয়।

২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। তাতে পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করে ভারত। গত ৬ মে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে ভারত। ধ্বংস করে দেওয়া হয় পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি। ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় হামলা চালানোর চেষ্টা করে পাকিস্তান। তা ব্যর্থ করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ১০ মে ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়। পহেলগাঁও হামলার পরপরই সমাজমাধ্যমে তার দায় স্বীকার করেছিল টিআরএফ। তবে পরে ওই সংগঠন দায় অস্বীকার করে। আমেরিকা সেই সংগঠনকেই ‘বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’-র তকমা দেয়। তা নিয়ে প্রথমে আপত্তি জানালেও আমেরিকায় গিয়ে অন্য কথাই বলেছেন বিদেশমন্ত্রী দার।

Pahalgam Terror Attack TRF Pakistan Operation Sindoor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy