পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আরও এক বার প্রকাশ্যে এল। ১৯৭২-এর শিমলা চুক্তি তাঁর দেশ আর মানবে না বলে সদ্য জানিয়েছিলেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। সিন্ধু জলচুক্তি নিয়ে তাঁরা এখনও পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেননি বলেও জানান আসিফ। তবে ভারতের সঙ্গে যে কোনও আলোচনাই তাঁরা আর দ্বিপাক্ষিক রাখতে চান না বলে সাফ ঘোষণা করেছিলেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী। কিন্তু পাক বিদেশ মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা আসিফের এই দাবি কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ওই কর্তা আজ স্পষ্ট জানান, ভারতের সঙ্গে কোনও ধরনের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি খারিজ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি পাক সরকার।
মঙ্গলবার একটি পাক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসিফ দাবি করেন, শিমলা চুক্তিকে ‘মৃত’ বলে মেনে নিয়েছেন তাঁরা। ভারত-পাক কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রতি যে টানাপড়েনের মধ্যে দিয়ে চলছে, সেই আবহে শরিফ সরকার দ্বিপাক্ষিক স্তরে রাখতে না চেয়ে বরং বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক স্তরে টেনে আনতে চেয়েছেন আসিফ। যা কাশ্মীর নিয়ে ভারতের অবস্থানের বিপরীত। ভারত সম্প্রতি আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার বার্তাও খারিজ করেছে।
আসিফ ওই সাক্ষাৎকারে জানান, ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রণরেখাকে ‘সংঘর্ষবিরতি রেখা’ হিসেবে চিহ্নিত করে, সীমারেখা হিসেব নয়। সিন্ধু জলচুক্তি নিয়ে আসিফ জানান, জলচুক্তি নিয়ে পাক সরকার কী ভাবছে, তা নিয়ে তিনি নিশ্চিত নন। তবে শিমলা চুক্তি যে ‘মৃত’ তা নিশ্চিত করেন তিনি। পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে পাক সরকার যে সতর্ক, তা-ও জানিয়ে আসিফ বলেন, ‘‘পাকিস্তানের অস্তিত্ব নিয়ে সঙ্কটে না পড়া পর্যন্ত পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা হবে না।’’ তবে শিমলা চুক্তি নিয়ে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকই আসিফের দাবি উড়িয়ে দেওয়ায় আবারও সে দেশের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। আগেও বেশ কয়েক বার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে পাক সরকারের অন্য মন্ত্রকের মতবিরোধ স্পষ্ট হয়। তবে শিমলা চুক্তি খারিজ নিয়ে আসিফের দাবি প্রসঙ্গে সরকারি স্তরে মন্তব্য করেনি সাউথ ব্লক।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)