Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19

Covid 19: করোনা-প্রকোপ বাড়াচ্ছেন টিকায় অনিচ্ছুকেরাই, বলছেন বিশেষজ্ঞরা

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২১ ০৭:০১
Share: Save:

এই তো সে দিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানাল, করোনা প্রতিষেধকের দু’টো ডোজ় নেওয়া থাকলেও ডেল্টা সংক্রমণ হতে পারে। আজ আবার ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ফাইজ়ার বা অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার দু’টি ডোজ নেওয়ার ৬ সপ্তাহের পর থেকেই শরীরে অ্যান্টিবডি কমতে শুরু করে। মাত্র ১০ সপ্তাহের মধ্যে তা ৫০ শতাংশের নীচে নেমে আসতে পারে। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্রিটেনের ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন’-এর একদল গবেষক জানিয়েছেন, এতে টিকার কার্যকারিতা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। এত তাড়াতাড়ি শরীরে অ্যান্টিবডি কমে গেলে নতুন নতুন ভেরিয়েন্টের বিরুদ্ধে কী ভাবে লড়াই করব আমরা?

তা হলে উপায়? আমেরিকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়তে এখনও পর্যন্ত টিকাকরণের বিকল্প কোনও পথ নেই।

এ বছরের গোড়ায় আমেরিকায় জোর কদমে টিকাকরণের কাজ শুরু হলেও এই মুহূর্তে সেই গতিতে ভাঁটা পড়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার ৪৯.১ শতাংশের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। এ দিকে আগামী চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কায় কাঁটা হয়ে রয়েছে আমেরিকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান সময়ের চেয়ে চার গুণ বাড়তে পারে সংক্রমণ। অথচ বারবার বলা সত্ত্বেও আমেরিকাবাসীর একটা বড় অংশ টিকা নিতে চাইছেন না। এঁদের কারণেই তৃতীয় ঢেউয়ে ডেল্টা সংক্রমণ হুহু করে বাড়বে বলে উদ্বেগ জানান, ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ কন্ট্রোল’-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর টম ফ্রেডেন। পেনসিলভ্যানিয়ার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পল অফিট বলেন, ‘‘অন্তত ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ আমেরিকাবাসী টিকা নিতে আগ্রহী নন। এঁদের কারণেই সংক্রমণ বাড়ছে। এঁদের কারণেই নতুন নতুন ভেরিয়েন্ট তৈরি হচ্ছে যেগুলি ভ্যাকসিনের ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে।’’ আর এক বিশেষজ্ঞ লেনা ওয়েন বলেন, ‘‘এঁদের জন্যেই ভ্যাকসিন নিয়েও মূল্য চোকাচ্ছেন বাকিরা। অজান্তেই তাঁরা আশপাশের টিকা না-নেওয়া লোকেদের থেকে সংক্রমিত হয়ে পড়ছেন।’’ ওয়েনের মতে, যাঁরা টিকা নিতে চাইছেন না, তাঁরা নিজেদের পাশাপাশি অন্যের জীবনেরও বিপদ ডেকে আনছেন। অতিমারিকে ত্বরান্বিত করছেন।

ফলে মাস্ক পরা ও করোনা পরীক্ষার কড়াকড়ি নতুন করে চালু করার কথা ভাবছে বেশ কিছু প্রাদেশিক প্রশাসন। অগস্ট থেকে সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মী এবং সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু করছে ক্যালিফর্নিয়া। কাজে যোগ দিতে গেলে তাঁদের হয় টিকা নিতে হবে অথবা প্রতি সপ্তাহে এক বার করোনা পরীক্ষার রিপোর্টে জমা দিতে হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের সপ্তাহে দু’বার রিপোর্ট জমা দিতে হবে। টিকা নেওয়া না-থাকলে কর্মক্ষেত্রে সর্বক্ষণ এন৯৫ মাস্ক পরে থাকতে হবে। নিউ ইয়র্কেও প্রায় এক নিয়ম চালু হচ্ছে। মাস্ক পরা ফের বাধ্যতামূলক করেছে জর্জিয়া প্রশাসন। টিকা নেওয়ার বিষয়ে প্রথম থেকেই জোরাজুরির বিপক্ষে ছিল আমেরিকা সরকার। কিন্তু পরিস্থিতির বিচার করে, স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে টিকা বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছে তারা।

টিকাকরণের দৌড়ে প্রথম দিকে আমেরিকা, ব্রিটেন, ইজ়রায়েলের তুলনায় পিছিয়ে ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলি। তবে আজ ইইউ প্রধান উরসুলা ফন ডের লেয়েন জানিয়েছেন, ইইউ গোষ্ঠীর দেশগুলিতে প্রায় ৭০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক অন্তত এক ডোজ় টিকা পেয়েছেন। ১৮ বছরের উর্ধ্বে ৫৭ শতাংশের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। ডেল্টা স্ট্রেনকে রুখতে আগামী দিনেও টিকাকরণের এই গতি ধরে রাখায় প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে এখন সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি ইন্দোনেশিয়ায়। কাল, আজ দু’দিনই ২৪ ঘণ্টায় হাজার জনের উপরে মারা গিয়েছেন। টিকার আকালে প্রবাসীরা তো বটেই, অনিশ্চয়তায় ইন্দোনশিয়ার নাগরিকেরাও। এই পরিস্থিতি ইন্দোনেশিয়া ছাড়ার ধুম পড়েছে বিদেশিদের মধ্যে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 Vaccination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE