Advertisement
০১ মে ২০২৪

গোঁত্তা খেয়ে নদীতে বিমান, তাইপেইয়ে মৃত ৩১

সকাল এগারোটা নাগাদ তাইওয়ানের সংশ্যান বিমানবন্দর থেকে উড়েছিল জিই-২৩৫। যাত্রিবাহী ট্রান্সএশিয়ার ‘এটিআর ৭২-৬০০’ উড়ানটিতে ছিলেন ৫৩ জন যাত্রী আর পাঁচ জন বিমানকর্মী। কিন্তু দু’ইঞ্জিনের ওই ছোট বিমানটি ওড়ার কয়েক মিনিট পরেই বিপত্তি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই কাত হয়ে শহরের বহুতলগুলির প্রায় কান ঘেঁষে একটি ছোট নদীতে গিয়ে পড়ে সেটি।

সংবাদ সংস্থা
তাইপেই শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪১
Share: Save:

সকাল এগারোটা নাগাদ তাইওয়ানের সংশ্যান বিমানবন্দর থেকে উড়েছিল জিই-২৩৫। যাত্রিবাহী ট্রান্সএশিয়ার ‘এটিআর ৭২-৬০০’ উড়ানটিতে ছিলেন ৫৩ জন যাত্রী আর পাঁচ জন বিমানকর্মী। কিন্তু দু’ইঞ্জিনের ওই ছোট বিমানটি ওড়ার কয়েক মিনিট পরেই বিপত্তি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই কাত হয়ে শহরের বহুতলগুলির প্রায় কান ঘেঁষে একটি ছোট নদীতে গিয়ে পড়ে সেটি।

আজ সকালে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেইয়ে এই বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের। ১২ জনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়, ১৯ জন মারা যান হাসপাতালে। নিখোঁজ ১২ জন। বেঁচে গিয়েছেন ১৫ জন। ট্রান্সএশিয়া বিমান সংস্থা জানাচ্ছে, তাইপেই থেকে কিনমেন যাচ্ছিল উড়ানটি। অধিকাংশ যাত্রীই চিনা পর্যটক। যাত্রীদের মধ্যে ছিল কয়েকটি শিশু। বিমানটি জলে পড়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই উদ্ধারকারী দল সেখানে পৌঁছে যায়।

উদ্ধারকারীরা জানাচ্ছেন, বেশ কয়েক জন যাত্রীর গায়ে লাইফ জ্যাকেট থাকায় তাঁরা বেঁচে গিয়েছেন। আশ্চর্য ভাবে একেবারে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে একটি শিশুকে।

এ ভাবেই ভেঙে পড়েছিল বিমানটি। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়ির সিসিটিভি

ফুটেজ সম্প্রচার করেছে স্থানীয় একটি টিভি চ্যানেল। বুধবার তাইপেইয়ে। ছবি: এএফপি।

দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিমানটি ভেঙে পড়ার ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা গিয়েছে, কী ভাবে কাত হয়ে গোঁত্তা খেতে খেতে একটি ছোট নদীতে গিয়ে পড়ছে ‘জিই-২৩৫’। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়ির সিসিটিভিতে উঠেছে সেই ভয়ঙ্কর ভিডিও। এক প্রত্যক্ষদর্শী একটি স্থানীয় টিভি চ্যানেলকে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। “দেখলাম একটা ট্যাক্সির উপরে আছড়ে পড়ল বিমানটির একটা ডানা। মুহূর্তে ট্যাক্সিটি তালগোল পাকিয়ে গেল। আমি তখন ট্যাক্সিটা থেকে হয়তো কয়েক হাত দূরে। এ রকম দৃশ্য আগে কখনও দেখিনি। এখনও সারা শরীর কাঁপছে,” সাক্ষাৎকারে বলেছেন ওই প্রত্যক্ষদর্শী। তিনিই অবশ্য জানিয়েছেন, রক্ষা পেয়েছেন ট্যাক্সি চালক।

কী ভাবে মাটি ছাড়ার কয়েক মুহূর্ত পরেই বিমানটি এ ভাবে ভেঙে পড়ল? এখনও মুখ খোলেননি ট্রান্সএশিয়া কর্তৃপক্ষ। প্রায় সাত মাস আগেই এই সংস্থার আর একটি এটিআর বিমান দুর্ঘটনায় পড়েছিল। সে বারও মৃত্যু হয়েছিল ৪৮ জন যাত্রীর। তবে সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহেই এই দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির মেরামতি হয়েছিল। বিমানের চালক এবং সহ-চালকের বহু ঘণ্টা ওড়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে কন্ট্রোল টাওয়ারে পাঠানো বিমানকর্মীদের শেষ মুহূর্তের কথোপকথনের একটি রেকর্ডিং এক স্থানীয় টিভি চ্যানেলের হাতে এসেছে। শোনা গিয়েছে, বিমানকর্মীরা আতঙ্কে চেঁচাচ্ছেন “ইঞ্জিন ফ্লেমআউট, ইঞ্জিন ফ্লেমআউট।”

বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, সাধারণত বিমানের ইঞ্জিনের আগুনের শিখা বাইরে বেরিয়ে এলে তাকে ফ্লেমআউট বলে। এর ফলে বিমানের ইঞ্জিনটি বিকল হয়ে যায়। কিন্তু দু’ইঞ্জিন বিমানের একটি ইঞ্জিন বিকল হলেও অন্যটির সাহায্যে সেই বিমান ওড়ার কথা। কিন্তু আজ ঠিক কী ঘটেছিল, যার জেরে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ge-235 trans asia flight taipei
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE