Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Shanghai Cooperation Organisation

সৌজন্য বিনিময় করতেও দেখা গেল না মোদী ও শিকে

প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার পর আলিঙ্গনকে রীতিমতো কূটনৈতিক দস্তুর বানিয়েছেন তিনি। বিদেশী রাষ্ট্র নেতাদের সঙ্গে (অবশ্যই সবার সঙ্গে নয়) দীর্ঘ করমর্দনেও তিনি অভ্যস্ত।

এসসিও মঞ্চে সংশ্লিষ্ট নেতারা যখন গ্রুপ ছবি তুললেন, তখনই শুধু পাশাপাশি দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে মোদী ও শি-কে।

এসসিও মঞ্চে সংশ্লিষ্ট নেতারা যখন গ্রুপ ছবি তুললেন, তখনই শুধু পাশাপাশি দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে মোদী ও শি-কে। ছবি পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:২৩
Share: Save:

পার্শ্ববৈঠক অথবা বা সম্মেলন কক্ষের কোনও নিভৃত কোণে গিয়ে পাঁচ মিনিটের আলোচনা তো নয়ই। এমনকি, ক্যামেরার সামনে করমর্দন অথবা মৌখিক সৌজন্য বিনিময় করতেও দেখা গেল না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-কে। আজ সকালে এসসিও মঞ্চে সংশ্লিষ্ট নেতারা যখন গ্রুপ ছবি তুললেন, তখনই শুধু পাশাপাশি দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে মোদী ও শি-কে। কিন্তু কেউ কারও দিকে তাকাননি পর্যন্ত।

গতকালই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, সীমান্ত থেকে সেনা সরানো নিয়ে শি-এর কাছে কোনও প্রতিশ্রুতি না পাওয়া গেলে, তাঁর সঙ্গে পার্শ্ববৈঠক এড়িয়ে যাবেন মোদী। মোদীর কূটনীতিতে একটি বড় অংশ জুড়ে থেকেছে শরীরভাষা বা বডি ল্যাংগুয়েজের ভূমিকা। প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার পর আলিঙ্গনকে রীতিমতো কূটনৈতিক দস্তুর বানিয়েছেন তিনি। বিদেশী রাষ্ট্র নেতাদের সঙ্গে (অবশ্যই সবার সঙ্গে নয়) দীর্ঘ করমর্দনেও তিনি অভ্যস্ত। কিন্তু আজ চোখে পড়ার মতো শৈত্য দেখালেন মোদী।

অথচ ২০১৪ সালে দিল্লির কুর্সিতে বসার পর এই শি জিনপিং-এর সঙ্গে মোদীর চূড়ান্ত ঘনিষ্ঠতা দেখা গিয়েছে বারবার। সে সাবরমতীর দোলনা হোক কি উহানের নয়নাভিরাম নিসর্গ কিংবা ঐতিহাসিক মমল্লপুরমের নৌকাবিহার। এসসিও-র এবারের শীর্ষ সম্মেলনের তারিখ এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে লাদাখের গোগরা ও হট স্প্রিং (পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৫) থেকে সেনা পিছিয়ে নিতে চিন রাজি হওয়ার পর মোদী-শি বৈঠকের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, চিনের পক্ষ থেকে ভারতের উপর এই নিয়ে চাপও ছিল। কিন্তু শুধুমাত্র এই কূটনৈতিক চুষিকাঠি ভারতের জন্য যে যথেষ্ট নয়, এমনটাই মনে করেছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বিরোধী দলগুলি, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, নাগরিক সমাজের একটি অংশ, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ— সর্বস্তরে চিন-প্রশ্নে চাপ তৈরি হয়েছে মোদী সরকারের উপর। এখনও ডেপসাং চকের একাধিক পয়েন্টে চিনা সেনা ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। বলা হচ্ছে, চিনের দখলে রয়েছে ১০০০ বর্গ কিলোমিটার জমি। সামনে একাধিক রাজ্যে নির্বাচনের মুখে দাঁড়ানো মোদীর পক্ষে জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে শি-ঘনিষ্ঠতার বার্তা প্রচার সম্ভব ছিল না বলেই মনে করা হচ্ছে।

নয়াদিল্লির তরফ থেকে কূটনৈতিক চ্যানেলে বেজিং-কে বলা হয়েছিল, এলএসি থেকে সেনা সরানো নিয়ে যদি সার্বিক কোনও পদক্ষেপ চিন ঘোষণা করে তবেই প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় বসা সম্ভব। আজকের পর স্পষ্ট, নরম হয়নি বেজিং। কূটনৈতিক শিবিরে এ কথাও জানানো হচ্ছে, আগে স্থির ছিল, মোদী গতকাল বিকেলের মধ্যেই সমরখন্দে পৌঁছে যাবেন। নৈশাহার এবং আরও কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল রাষ্ট্রনেতাদের একসঙ্গে নিয়ে। সেই নৈশাহার যাতে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয়, তাই গতকাল বেশি রাতে বিমান ধরেছেন মোদী। ভারত চায়নি শি-মোদীর মুখোমুখি হওয়ার পরিসর তৈরি হোক।

তবে দ্বিপাক্ষিক সংযোগ এবার তৈরি না হলেও এসসিও-র মূল সম্মেলনে মোদীর বক্তৃতার পরই মঞ্চে বলতে ওঠেন শি জিনপিং। পরের বছর এসসিও সম্মেলনের আয়োজক ভারত। জিনপিং তাঁর বক্তব্যে ভারতকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সম্মেলন আয়োজনের ক্ষেত্রে চিন যে ভারতের পাশে থাকবে, তা-ও জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shanghai Cooperation Organisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE