নিহত সারাকে স্মরণ লন্ডনবাসীর। রবিবার। রয়টার্স
দিন দশেক আগে এক মহিলাকে অপহরণ করে হত্যার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছিল ব্রিটেন। সেই ক্ষোভের আগুনে ঘৃতাহুতির কাজ করল, নিহত মহিলার স্মরণে পথে নামা আমজনতার উপর লন্ডন পুলিশের বলপ্রয়োগ। অভিযোগ, স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা মহিলারাও বাদ যাননি পুলিশি নিগ্রহ থেকে। সব মিলে ব্রিটেনের রাজধানীতে পুলিশের বিরুদ্ধে তুমুল বিক্ষোভ। উঠে এসেছে নারী নিরাপত্তার প্রশ্নও।
পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো যে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি পটেল ও লন্ডনের মেয়র সাদিক খান জানিয়েছেন, স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা ব্যক্তিদের উপর পুলিশ কেন দমনপীড়ন চালাল তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।
চলতি মাসের ৩ তারিখ বন্ধুর বাড়ি থেকে নিজের ফ্ল্যাটে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যান ৩৩ বছর বয়সি মার্কেটিং এগ্জ়িকিউটিভ সারা এভারার্ড। তাঁকে অপহরণ করে হত্যার অভিযোগে পুলিশ অফিসার ওয়েন কাউজ়েন্সকে গ্রেফতার করা হয়। তার বাড়ির কাছের একটি জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয় সারার দেহ। গত কাল ৪৮ বছরের ওই পুলিশ অফিসারকে আদালতে তোলা হয়।
সারা খুনের ঘটনায় ন্যায়বিচারের দাবিতে গত কাল রাতে দক্ষিণ লন্ডনের ক্ল্যাপহামে পথে নামেন কয়েকশো মানুষ। তাঁদের মধ্যে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ক্ল্যাপহাম বাসস্ট্যান্ডে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, প্রথমে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোভিডের কারণ দেখিয়ে তা দেয়নি প্রশাসন। প্রশাসনকে অবশ্য কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সারার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পথে নামেন বহু মানুষ। মোমবাতি জ্বালিয়ে, পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় তাঁকে। শোকার্ত বিক্ষোভকারীরা লাগাতার পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে, এক সময়ে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি হচ্ছে। কিছু মহিলাকে হাতকড়া পরিয়ে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন পুরুষ পুলিশকর্মীরা। গ্রেফতার করা হয় কয়েক জনকে। এই ঘটনায় রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এই ঘটনাকে অস্ত্র করে বরিস জনসন প্রশাসনকে নিশানা করেছেন বিরোধীরা। লিবারাল ডেমোক্র্যাট নেতা এড ডেইভি মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রধানের পদত্যাগ দাবি করে বলেছেন, ‘‘লন্ডনের লক্ষ লক্ষ মহিলার আস্থা হারিয়েছে এই পুলিশ।’’ ঘটনাকে ‘ভয়ঙ্কর’ আখ্যা দিয়েছেন বিরোধী দলগুলির নেতারা।
সারা-হত্যার ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে মোমবাতি জ্বালিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর বান্ধবী। পরে বরিস জনসনের টুইট, ‘‘এই ভয়ঙ্কর ঘটনার কারণ খুঁজে বার করব। পথে মহিলারা যাতে হেনস্থা-নির্যাতনের শিকার না-হন, তা নিশ্চিত করতে যা যা করণীয় তাই করব।’’
সারার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাজবধূ ডাচেস অব কেমব্রিজ কেটও। বিয়ের আগে লন্ডনের রাস্তায় একা চলাফেরা করার অভিজ্ঞতাও স্মরণ করেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy