Advertisement
E-Paper

৭৩ বছরের দাম্পত্যে ইতি, প্রয়াত রানি এলিজাবেথের স্বামী প্রিন্স ফিলিপ

সাড়ম্বরপূর্ণ শেষকৃত্য চান না বলে জীবিতকালেই জানিয়েছিলেন ফিলিপ। ফ্রগমোর কটেজের বাগানে তাঁকে সমাধিস্থ করা হতে পারে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২১ ১৭:০০
প্রয়াত প্রিন্স ফিলিপ।

প্রয়াত প্রিন্স ফিলিপ। —ফাইল চিত্র।

ইংল্যান্ডের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্বামী প্রিন্স ফিলিপ প্রয়াত হলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৯। মাসখানেক হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা করিয়ে গত মাসেই বাড়ি ফিরেছিলেন। ফেরার সময় গাড়িতে বসে হাসিমুখে হাত নেড়েছিলেন ক্যামেরার দিকে। শুক্রবার সকালে উইন্ডসর প্রাসাদে মৃত্যু হয় তাঁর।

বাকিংহাম প্যালেসের তরফে শুক্রবার দুপুরে প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হয়। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে রানি তাঁর প্রিয়তম স্বামী প্রিন্স ফিলিপ, ডিউক অব এডিনবরার মৃত্যুর কথা ঘোষণা করছেন। আজ সকালে উইন্ডসর প্রাসাদে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি’।

রাজ পরিবারের অন্য সদস্যদেরও প্রিন্সের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে। ‘ডিউক অব এডিনবরা’র প্রতি শ্রদ্ধায় দেশের সর্বত্র জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। তাঁর শেষকৃত্য সম্পর্কে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু ঘোষণা হয়নি। সময় মতো সব কিছু প্রকাশ্যে আনা হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে জীবিত কালেই প্রিন্স ফিলিপ জানিয়েছিলেন যে, সাড়ম্বরপূর্ণ শেষকৃত্য হোক, এটা চান না তিনি। ওয়েস্ট মিনিস্টার হলেও সমাধিস্থ হতে চান না বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সেই মতো ফ্রগমোর কটেজের বাগানেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হতে পারে বলে রাজ পরিবার সূত্রে খবর।

বিয়ের দিনরানি এলিজাবেথের সঙ্গে প্রিন্স ফিলিপ।

বিয়ের দিনরানি এলিজাবেথের সঙ্গে প্রিন্স ফিলিপ। —ফাইল চিত্র।

রানির স্বামী হিসেবে গোটা দুনিয়া প্রিন্সকে চিনলেও ব্রিটেনের মানুষের কাছে রানির পরেই তাঁর স্থান। তাঁদের দীর্ঘ ৭৩ বছরের দাম্পত্য ব্রিটিশ রাজপরিবারের ইতিহাসে অনন্য নজির। সঙ্কটের সময় রানির সবচেয়ে বড় আস্থার জায়গা ছিলেন তিনিই। শুধু তাই নয়, পুত্রবধূ ডায়ানাকেও অত্যন্ত স্নেহ করতেন প্রিন্স। তাঁকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে রাজপরিবারের রক্ষণশীলতাকেও ভাঙতে কুণ্ঠা করেননি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।

কৈশোরেই ব্রিটিশ নৌবাহিনীতে কর্মরত ফিলিপের প্রতি অনুরাগ জন্মায় রানির। কিন্তু বিশ্বযুদ্ধের ক্ষত যাদের হাত ধরে, সেই জার্মানির অভিজাত মহলে ওঠবস ছিল ফিলিপের পরিবারের। তিনি ব্রিটেনে চলে এলেও তাঁর পরিবারের অনেকেই জার্মানিতে থেকে গিয়েছিলেন। এমনকি তাঁর বোনেদের বিয়েও হয়েছিল নাৎজি-সংযোগ থাকা অভিজাত জার্মান পুরুষদের সঙ্গে। তাই ফিলিপের সঙ্গে রানি এলিজাবেথের বিবাহে অনীহা ছিল রাজ পরিবারের। তবে সব বাধা পেরিয়ে, ১৯৪৭ সালে ২১ বছর বয়সে ফিলিপের সঙ্গেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।

তার পর থেকে একসঙ্গেই যাবতীয় ঝড়ঝাপটা সামলে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এবং প্রিন্স ফিলিপ। তবে ২০১৭-র অগস্ট থেকে জনসমক্ষে আসা কমিয়ে দেন প্রিন্স ফিলিপ। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতাকেই তার কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছিল। করোনার প্রকোপে যখন যুঝছে গোটা বিশ্ব, সেই সময় রানির সঙ্গে নিভৃতবাসেই কাটান প্রিন্স। গত জানুয়ারিতে একসঙ্গে করোনার প্রতিষেধকও নেন তাঁরা। তার পরেই ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি লন্ডনের ‘কিং এডওয়ার্ড সেভেন্থ’ হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। যদিও প্রিন্স ফিলিপ সংক্রমিত নন বলেই সেই সময় রাজপ্রাসাদের তরফে জানানো হয়। সেখান থেকে পরে সেন্ট বার্থোলোমিউজ হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের পর ফের ‘কিং এডওয়ার্ড সেভেন্থ’ হাসপাতালে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় প্রিন্স ফিলিপকে। গত ১৬ মার্চ সেখান থেকে উইন্ডসর প্রাসাদে ফিরে আসেন। তার পর একমাসও কাটেনি। প্রয়াত হলেন প্রিন্স।

England Britain Queen Elizabeth II Royal Family Prince Philip Covid Infection coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy