Advertisement
E-Paper

পেট ভরাতে ভরসা এখন দেহ ব্যবসাই

নিজের বারো বছরের মেয়েকে এক দালালের হাতে বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন মা। মাস খানেক আগে গ্রিসের সেই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা ইউরোপে। মেয়েকে বিক্রি করার অভিযোগে ইতিমধ্যে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে ওই মায়ের। সঙ্গে ১০ লক্ষ ইউরো জরিমানাও।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৫ ০২:২৯

নিজের বারো বছরের মেয়েকে এক দালালের হাতে বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন মা। মাস খানেক আগে গ্রিসের সেই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা ইউরোপে। মেয়েকে বিক্রি করার অভিযোগে ইতিমধ্যে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে ওই মায়ের। সঙ্গে ১০ লক্ষ ইউরো জরিমানাও। বছর চুয়াল্লিশের সেই বেকার মহিলার রাতারাতি একটা নামকরণও হয়ে গিয়েছিল। ‘মনস্টার মম’। তামাম ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যম সেই নামেই ডাকতে শুরু করেছিল তাঁকে।

টাকার জন্য কী করে এক মা তাঁরই সন্তানকে এক অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তির হাতে বিক্রি করতে গিয়েছিলেন, সেই প্রশ্ন তুলে ওই মহিলাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল গ্রিসের সমাজ। আর এই একই ঘটনা নাড়া দিয়েছিল আথেন্সের প্যানটেইয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক গ্রেগরি লাক্সসকে। দিন কয়েক আগে তাঁরই করা একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শরীর বিক্রিতে এখন গ্রিক মহিলারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে। লন্ডনের একটি দৈনিকে সম্প্রতি এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। আর তার পরই প্রশ্ন উঠেছে প্রধানমন্ত্রী সিপ্রাসের ব্যয় সঙ্কোচ নীতি নিয়ে। আগে যেখানে পূর্ব ইউরোপের মহিলারাই গ্রিসের দেহ ব্যবসায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলেন, সেই জায়গাটা এখন চলে গিয়েছে দেশেরই মহিলাদের হাতে।

লাক্সসের কথায়, ‘‘অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে আধ ঘণ্টার জন্য শরীর বেচে যে টাকা তাঁরা পাচ্ছেন, তা দিয়ে হয়তো একটা মাত্র স্যান্ডউইচ কেনা যাবে। বা একখানা চিজ পাই। কিন্তু উপায়ন্তর না পেয়ে সেই পেশাই এখন আঁকড়ে ধরছে দেশের নারী সমাজ।’’ মোট ১৭ হাজার যৌন কর্মীর উপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, গ্রিসে এখন সে দেশের মেয়েরাই যৌন পেশাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। লাক্সস জানিয়েছেন, দেশে যৌন কর্মীদের মধ্যে ৮০ শতাংশই এখন গ্রিক নাগরিক।

ছ’বছর ধরে টানা ব্যয় সঙ্কোচের পথে হেঁটেছে গ্রিসের সরকার। সরকারি সুযোগ-সুবিধা কাটছাঁট করতে করতে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, শুধু মাত্র পেট চালানোই নয়, কর দেওয়ার জন্যও এখন দেহ বেচতে পিছপা হচ্ছেন না দেশের মেয়েরা। লাক্সস জানিয়েছেন, আর্থিক মন্দা শুরুর সময় এক যৌনকর্মী ৫০ ইউরো নিতেন। আর এখন সেই সংখ্যাটাই গিয়ে ঠেকেছে ২ ইউরোয়।

এই সংক্রান্ত আরও খবর...

পঙ্গু অর্থনীতি, বাড়ছে একদা জনপ্রিয় সিপ্রাসের সমস্যা

যৌন পেশা গ্রিসে বৈধ। কিন্তু গোটা দেশ জুড়ে যে কটা যৌনপল্লি রয়েছে, তার অধিকাংশেরই লাইসেন্স নেই। তবু এই পেশায় মেয়েদের আসার কোনও খামতি নেই, জানালেন লাক্সস। তাঁর কথায়, ‘‘পরিস্থিতি যা, তাতে এই সংখ্যাটা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।’’ তিনি জানালেন, এখন যে সব মেয়ে যৌন পেশায় আসছে, তাদের বেশির ভাগেরই বয়স ১৭ থেকে কুড়ির মধ্যে। লাক্সসের আকুতি, ‘‘এ ভাবে উদাসীন থাকলে দেশে মেয়েদের পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হবে। সরকারের উচিত অবিলম্বে এ নিয়ে কিছু করা।’’

MostReadStories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy