Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

আমেরিকায় অস্বস্তি বাড়ছে মোদীর

রিপোর্টে এমন ইঙ্গিতও রয়েছে যে, উদ্বেগজনক বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে নজর ঘোরাতে সিএএ-র মতো বিষয়কে আঁকড়ে ধরেছে বিজেপি।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।—ছবি পিটিআই।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:১৩
Share: Save:

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ভারতের ২০ কোটি মুসলিমের উপরে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করে মার্কিন কংগ্রেসের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস’ (সিআরএস)। তাদের এক রিপোর্টে উঠে এসেছে এমন কথা। এটি তৈরি হয়েছে মার্কিন কংগ্রেসের অধিকাংশ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে। রয়েছে বিদেশ দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের কার্যনির্বাহী অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলস মন্তব্যও। সিএএ নিয়ে উদ্বিগ্ন অ্যালিসের মতে এই আইনে শুধু যে মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের আন্তরিকতা ক্ষুণ্ণ হবে তা-ই নয়, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলিতে আমেরিকা যে অবাধ ও মুক্ত স্বাধীনতার পরিস্থিতি তৈরি করতে ইচ্ছুক, তা থেকেও সরে যেতে থাকবে ভারত। সিএসআর-এর ওই রিপোর্টে রয়েছে, বিভিন্ন বিদেশি আক্রমণকারী ভারতে এসে লুটপাট চালিয়েছে, এ ভাবেই দেশের ইতিহাসকে তুলে ধরতে চাইছেন হিন্দুত্ববাদীরা। এতে আধুনিক ভারতের দুই প্রতিষ্ঠাতা জওহরলাল নেহরু এবং মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শও ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

রিপোর্টে এমন ইঙ্গিতও রয়েছে যে, উদ্বেগজনক বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে নজর ঘোরাতে সিএএ-র মতো বিষয়কে আঁকড়ে ধরেছে বিজেপি। রাজনৈতিক সমর্থন অক্ষুণ্ণ রাখতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ধর্মকে। যা বলছেন বিরোধীরাও। কূটনীতিকদের একাংশের মতে, আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের নেতৃত্বে মার্কিন বাম উদারপন্থী অংশই এখন মোদী সরকারের সামনে সব চেয়ে সমস্যার জায়গা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন কংগ্রেস সদস্য প্রমীলা জয়পাল, তাঁর সতীর্থ রশিদা তালেব এবং সোমালি বংশোদ্ভূত ইলহান ওমর (প্রত্যেকেই ডেমোক্র্যাট) কঠোর সমালোচনা করে চলেছেন মোদী সরকারের। কাশ্মীর নিয়ে মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে প্রস্তাব এনে প্রথম হইচই ফেলেন প্রমীলা। সেপ্টেম্বর থেকেই তিনি সরব কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে। তিনি এবং আর এক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য জেমস ম্যাকগভর্ন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়োকে চিঠিও লেখেন এই বিষয়ে। কাশ্মীর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে মোদী সরকারের উপরে চাপ তৈরির প্রস্তাব দেন তাঁরা। মোদীর মার্কিন সফরের সময় থেকেই বিভিন্ন মঞ্চে মোদীর নীতির সমালোচনা করে চলেছেন তাঁরা। সম্প্রতি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ওয়াশিংটনে প্রমীলার সঙ্গে বৈঠকে বসতে অস্বীকার করায় গোটা বিষয়টি আরও তিক্ত হয়েছে। কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে আলাদা করে আলোচনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সে দেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE