নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া ভারতীয় নাগরিকদের ইরানে যাওয়ার আগে ভাবনাচিন্তা করতে বলল তেহরানে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস। মঙ্গলবার জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে প্রয়োজন ছাড়া ভারতীয়দের ইরানে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়ে আরও এক বার ভেবে দেখতে বলা হয়েছে। জানানো হয়েছে, পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনার আবহেই এই সতর্কবার্তা।
মঙ্গলবার জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘গত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে নিরাপত্তা বিষয়ক কারণে ভারতীয় নাগরিকদের জানানো হচ্ছে, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ইরানে আসার আগে আপনারা আরও এক বার সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেখুন।’’ পশ্চিম এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে এই বিজ্ঞপ্তিটি জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি, ইরানে কূটনৈতিক এবং সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির আবহে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তেহরানের ভারতীয় দূতাবাস।
আরও পড়ুন:
শুধু তা-ই নয়, সতর্ক করা হয়েছে এই মুহূর্তে ইরানে থাকা ভারতীয় নাগরিকদেরও। দেশ জুড়ে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির উপর তাঁদের নিয়মিত নজর রাখতে বলা হয়েছে। দূতাবাস জানিয়েছে, এই মুহূর্তে যে সব ভারতীয় ইরানে রয়েছেন এবং দেশে ফিরতে চান, তাঁরা জলপথে এবং আকাশপথে দেশ ছাড়তে পারেন। তবে সকলকেই যে কোনও পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের জারি করা পরামর্শ মেনে চলতে বলা হয়েছে।
গত মাসে ইজ়রায়েল-ইরান সংঘাতের জেরে পশ্চিম এশিয়ার বিস্তীর্ণ অংশে উত্তেজনা ছড়ায়। ১২ জুন রাতে ইরানের বিভিন্ন শহর ও পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালায় ইজ়রায়েলি যুদ্ধবিমান। যার নাম ছিল ‘অপারেশন রাইজ়িং লায়ন’। পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইরানও। ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়াতে ২১ জুন গভীর রাতে ইরানের তিন পরমাণুকেন্দ্র— নাতান্জ়, ফোরডো এবং ইসফাহানে জিবিইউ-৫৭ (বাঙ্কার ব্লাস্টার সিরিজ়ের সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা) ফেলে মার্কিন ‘স্টেল্থ’ বোমারু বিমান ‘বি-২ স্পিরিট’। পাল্টা হিসাবে ইরানের সামরিক বাহিনীও কাতারের মার্কিন বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়। ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর শেষমেশ ২৪ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘হস্তক্ষেপে’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই দেশ। তবে সংঘাত থামলেও উদ্বেগ কমেনি পশ্চিম এশিয়ায়।