—প্রতীকী ছবি।
ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া এক কিলোমিটার এলাকায় মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করে দিল বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যম ঢাকার সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে দাবি করেছে, ‘দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে’ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে সীমান্তবর্তী জেলাগুলির প্রায় এক কোটি মানুষ মোবাইল পরিষেবা পাচ্ছেন না। যদিও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কমল এবং বিদেশমন্ত্রী এ কে মোমেন দাবি করেছেন, এ বিষয়ে তাঁরা অবগতই নন।ফলে এ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ হওয়ার পর থেকেই এ পার থেকে চোরাপথে বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি দিল্লিতে এসে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’-এর প্রধান দাবি করেছেন, ২০১৯ সালে মোট ৩০০ জনকে ভারত থেকে ফেরার পথে আটক করেছেন। তাঁদের বৈধ নথিপত্র ছিল না। দুই দেশের সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় বসবাসকারী এক শ্রেণির মানুষের সহায়তাতেই দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নজরদারি এড়িয়ে বাংলাদেশে ফিরছেন বলে মনে ওয়াকিবহাল মহল মনে করেন। সেই প্রবণতা রুখতেই এই ব্যবস্থা বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ।
বাংলাদেশের টেলি যোগাযোগ বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) সে দেশের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ হওয়ার পরেই স্থির হয়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে এক কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় বন্ধ রাখা হবে মোবাইল পরিষেবা। বিটিআরসি-র কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ যায়। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ীই মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলিকে নির্দেশ পাঠিয়েছে।
গ্রামীনফোন, টেলিটক, রবি, বাংলা লিঙ্কের মতোটেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের বিটিআরসি জানায়, ‘‘দেশের নিরাপত্তাজনিত কারণে সীমানন্তবর্তী এলাকাগুলিতে আপাতত মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখতে হবে।’’ তারপরেই অপারেটররা ওই অঞ্চলগুলির নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করে দেন। বিটিআরসি সূত্রে খবর, এই নির্দেশ জারি হওয়ার পরেই ৩২টি জেলার সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চলে পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়। অভ্যন্তরীণ সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার, জানাচ্ছে বিটিআরসি।
নয়া নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পর থেকেই ভারত বাংলাদেশের মধ্যে বাদানুবাদ চলছে। নয়াদিল্লিকে হাসিনা সরকারের তরফে জানানো হয়, ভারত অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা দিক। বিমানে ওঠার কয়েক ঘণ্টা আগে সফর বাতিল করেছিলেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ঘটনার গতি থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, বাংলাদেশের অসন্তোষ গভীরে।
যদিও ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে দিন কয়েক আগেই দাবি করেন বিএসএফ ও বিজিবি— দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ডিজি। তবে ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢোকার পরে কিছু মানুষকে সম্প্রতি আটকও করে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy