রিপুদমন সিংহ মালিক। পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।
প্রায় চার দশক আগে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে বোমা বিস্ফোরণ-কাণ্ডে একদা অন্যতম অভিযুক্ত রিপুদমন সিংহ মালিককে খুন করা হল। বৃহস্পতিবার কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় তাঁকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি চালানো হয় বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। ঘটনাস্থলেই নিহত হন ওই মামলায় ছাড়া-পাওয়া রিপুদমন।
ওই হামলায় নিহত ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেনি কানাডা পুলিশ। তবে একটি বিবৃতি জারি করে তারা জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধ হয়ে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ওই খুনের পিছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে কানাডার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘সিবিসি নিউজ’ জানিয়েছে, ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সারে এলাকায় বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ নিজের জামাকাপড়ের দোকানের বাইরে মালিকের উপর হামলা হয়। সে সময় ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির আওয়াজ শোনা যায় বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন ৭৫ বছরের মালিক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আক্রমণের ধাঁচ দেখে মনে হয়েছে, ছক কষেই মালিকের উপর হামলা চালানো হয়েছে।
১৯৮৫ সালের ২৩ জুন দিল্লি থেকে কানাডার মন্ট্রিয়লগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে মাঝ আকাশে বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছিল। ওই ঘটনায় যাত্রী এবং বিমানকর্মী মিলিয়ে মোট ৩৩১ জন মারা যান। এতে তিন অভিযুক্ত হিসাবে মালিক ছাড়া ইন্দ্রজিৎ সিংহ রেয়াত এবং আজেইব সিংহ বাগরির নাম প্রকাশ্যে এসেছিল। প্রসঙ্গত, এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ১৮২ (বোয়িং ৭৪৭) বিমানটির নাম ‘কণিষ্ক’ হওয়ায় সেটি ‘কণিষ্ক মামলা’ নামেও পরিচিত।
মামলার তদন্তকারীদের দাবি, ভ্যাঙ্কুভারে বিমান থামলে সে সময় মালপত্রের সঙ্গে একটি স্যুটকেসের মধ্যে বোমা রাখা হয়। পরে অতলান্তিকের ৩১,০০০ ফুট উপরে ওই বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। ওই মামলায় মালিক এবং বাগরির বিরুদ্ধে ৩৩১ জনকে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছিল। যদিও রেয়াতের সাক্ষ্যের পর বোমা-কাণ্ডে ছাড়া পেয়ে যান মালিক। মামলা চলাকালীনই তদন্তকারীদের সাক্ষী হিসাবে রেয়াতকে আদালতে তোলা হয়েছিল। রেয়াতের দাবি ছিল, ওই কাণ্ডে কে বা কারা জড়িত অথবা পরিকল্পনার খুঁটিনাটি মনে করতে পারছেন না তিনি।
দীর্ঘ দিন পর ২০০৫ সালে ‘খলিস্তানপন্থী’ মালিকের পাশাপাশি বাগরিকে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দেয় কানাডার একটি আদালত। তবে বিস্ফোরণের ছক কষা তথা বোমা তৈরির জন্য এবং মালিকের মতো সঙ্গীদের জন্য মিথ্যা বয়ান দেওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন রেয়াত। দু’দশক জেলে কাটানোর পর ২০১৬ সালে প্যারোলে ছাড়া পান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy