ছবি সংগৃহীত।
হামলার রোষ কিছুটা কমেছিল। ফের ইউক্রেনে ভয়াবহ গোলাবর্ষণ শুরু করেছে রাশিয়া। মূল লক্ষ্য ডনবাস হলেও নিশানায় বহু শহর। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্পষ্টই ইঙ্গিত দিয়েছে, হামলার গতি বাড়ানোর নির্দেশ এসেছে উপরমহল থেকে।
উত্তর ইউক্রেনের চুহুইভ শহরে রকেট হানায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে, তিন জন জখম। খারকিভ অঞ্চলের উপপ্রধান সেরি বোলভিনোভ জানিয়েছেন, রাশিয়ার মাটি থেকেই সম্ভবত ভোররাতের দিকে রকেট ছোড়া হয়েছিল। সীমান্ত থেকে মাত্র ১২০ কিলোমিটার দূরে চুহুইভ শহর। বোলভিনোভ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘চারটি রুশ রকেট, অনুমান করা হচ্ছে রাতের অন্ধকারে সাড়ে তিনটে নাগাদ বেলগোরোড (রাশিয়ার শহর) থেকে ছোড়া হয়েছিল। একটি বসত বাড়ি, একটি স্কুল এবং একটি প্রশাসনিক ভবনে এসে পড়ে রকেট। একটি দু’তলা বাড়ি আংশিক ভাবে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।’’ বোলভিনোভ আরও জানান, ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে তিনটি দেহ পাওয়া গিয়েছে। তিন জন জখম হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত সকলেই সাধারণ মানুষ।
পাশেই সুমিতেও এক স্থানীয় বাসিন্দার প্রাণ গিয়েছে রুশ হামলায়। অন্তত সাত জন জখম। অভিযোগ, সুমি অঞ্চলের তিনটি শহর ও গ্রামে মর্টার ছোড়ে রুশরা। বেপরোয়া ভাবে গুলিও চালায়। গভর্নর দিমিত্র জিভিতস্কি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর জানিয়েছেন।
ডনেৎস্ক অঞ্চলেও রুশ হামলা অব্যাহত। গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্তত ১৪ জন গুরুতর আহত। রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর মুখোমুখি সংঘর্ষ চলছে এই অঞ্চলে। গভর্নর সেরি হাইডাই জানিয়েছেন, পূর্বের জাতীয় সড়ক থেকে রুশ বাহিনীকে আজ উৎখাত করেছে ইউক্রেনীয় সেনা। তিনি জানিয়েছেন, গত দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়া চেষ্টা করে চলেছে, লিসিচানস্ক ও বাকমুত সংযোগকারী মূল সড়কপথটি দখল করার। কিন্তু ওরা এখনও ওই ৭ কিলোমিটার রাস্তা দখল করতে পারেনি।
রাশিয়া জানিয়েছে, তারা আরও শক্তি বাড়িয়ে যুদ্ধে নামছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের হুমকি, ইউক্রেনের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান শুরু করবে তাদের বাহিনী। একটি ফেসবুক পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘‘রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু জানিয়েছেন, ডনবাস ও অন্যান্য অঞ্চলে কিভের প্রশাসক যাতে রকেট ও অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র হামলা চালাতে না-পারে, সেই আশঙ্কাটুকু শেষ করার জন্য, যেখানে যেখানে যুদ্ধ চলছে, সর্বত্র হামলার গতি বাড়ানোর নির্দেশ এসেছে উপরমহল থেকে।’’ ওই ফেসবুক পোস্ট অনুযায়ী ইউক্রেনে যে সব রুশ সেনা ইউনিট যুদ্ধ করছে, তাদের সঙ্গে দেখা করেন শোইগু। সাহসিকতার জন্য পুরস্কৃত করেন তিনি।
মস্কোর মূল লক্ষ্য ডনবাস। সমগ্র ডনেৎস্ক ও লুহানস্ক দখল করা। কিন্তু তার সঙ্গে তারা ইউক্রেনের অন্যান্য অঞ্চলেও নিরন্তর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন আজও দক্ষিণের শহর বাশটাঙ্কা, কৃষ্ণসাগর ঘেঁষা মিকোলিভে হামলা চলেছে। মিকোলিভের দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়েও হামলার অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। গত কাল নিপ্রো শহরে রুশ হামলায় ১৬ জন জখম হয়েছেন। প্রাণ গিয়েছে ৩ জনের। তার এক দিন আগে কিভের কাছে ভিনিতসিয়ায় ৩টি শিশু-সহ ২৩ জনের মৃত্যু হয়। ২০০-রও বেশি আহত হন। রাশিয়া একপ্রকার স্পষ্ট করে দিয়েছে, আরও আক্রমণাত্মক হতে তৈরি তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy