Advertisement
E-Paper

আবার হামলা রাশিয়ার, দাবি এ বার লক্ষ্য আইএস

আবার সিরিয়ায় আঘাত হানল রাশিয়া। এ নিয়ে পর পর দু’দিন হামলা চালাল রাশিয়ার বায়ুসেনা। বৃহস্পতিবার অবশ্য ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর ঘাঁটিতেই আক্রমণ হয়েছে বলে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা দফতর দাবি করেছে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৫ ১৮:৩৭
ছবি: টুইটার।

ছবি: টুইটার।

আবার সিরিয়ায় আঘাত হানল রাশিয়া। এ নিয়ে পর পর দু’দিন হামলা চালাল রাশিয়ার বায়ুসেনা। বৃহস্পতিবার অবশ্য ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর ঘাঁটিতেই আক্রমণ হয়েছে বলে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা দফতর দাবি করেছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন আইএস-এর ১২টি ঘাঁটিতে হামলা চালায় রাশিয়া। এর মধ্যে আইএস-এর একটি ‘কম্যান্ড সেন্টার’ এবং দু’টি অস্ত্রাগার রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এ দিনের আক্রমণ মূলত সিরিয়ার ইডলিব প্রদেশের জিসর আল-শৌঘোর শহরে হয়েছে। পাশাপাশি হামা ও হোমসেও হামলা চালানো হয়েছে।

এ দিনের হামলা নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের তরফে এখনও কোনও মন্তব্য জানা না গেলেও রাশিয়ার বুধবারের হামলার তীব্র নিন্দা করেছে আমেরিকা। বিমানহানার নিন্দা করেছে ব্রিটেনও। পেন্টাগনে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই হামলাকে আগুনে গ্যাসোলিন ঢালা বলে বর্ণনা করেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব অ্যাসটন কার্টার। রাশিয়ার এই আক্রমণে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন কার্টার। পাশাপাশি রাশিয়ার বুধবারের হামলার লক্ষ্য যে আইএস ছিল না তা-ও জানান কার্টার।

বুধবার রাশিয়ার বায়ুসেনার হামলায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। এর মধ্যে কয়েকটি শিশুও ছিল। মূলত সিরিয়ার পশ্চিমপ্রান্তে হামা ও হোমস প্রদেশে বোমাবর্ষণ করে রাশিয়া। এই অঞ্চলগুলি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদ বিরোধী ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’-র অধীনে রয়েছে। রাশিয়া সেনার মুখপাত্র জানান, আসাদ বিরোধী গোষ্ঠীর অস্ত্রের গুদাম লক্ষ করে বোমাবর্ষণ করা হয়। এই অভিযান সফল হয়েছে বলেও দাবি রাশিয়ার সেনার মুখপাত্রের। পাশাপাশি, অভিযানে প্রাণহানির কথাও অস্বীকার করেন তিনি। ইন্টারনেটের প্রাপ্ত কয়েকটি ভিডিও ফুটেজে হামলার ছবি ধরা পড়েছে। সেখানে আহতদের উদ্ধারের ছবিও দেখা যাচ্ছে।

হামা-র বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই প্রদেশের লাতামিনা শহরের উত্তরে রাশিয়ার বায়ুসেনা বোমাবর্ষণ করে। হোমস প্রদেশের তালবিসে শহরেও আক্রমণ হয়েছে। হামায় আক্রমণের লক্ষ্য ছিল আমেরিকা-সহ পশ্চিম বিশ্ব সমর্থিত আসাদ বিরোধী গোষ্ঠী ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’-র অংশ ‘তাজামৌ আল-ইজ্জা’।

সিরিয়ার আসাদ বিরোধী ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’-র বেশ কয়েকটি অংশকে গোপনে প্রশিক্ষণ দেয় মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ। এ জন্য পেন্টাগন প্রায় ৫০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। কিন্তু পরিকল্পনাটি সে ভাবে সফল হয়নি। সূত্রের খবর, সিআইএ থেকে প্রশিক্ষিত তিন থেকে পাঁচ হাজার বিদ্রোহী এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আইএস-এর বাড়বাড়ন্তে ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছে ‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’-র বিভিন্ন অংশ। এখন পর্যন্ত ‘তাজামৌ আল-ইজ্জা’-এর হাতেই ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী রকেট রয়েছে। আসাদ-এর সেনার উপরে সেই অস্ত্র মাঝেমধ্যেই ব্যবহার করে ‘তাজামৌ আল-ইজ্জা’। তাই এই আক্রমণ বলে মনে করছেন মার্কিন প্রশাসনের কর্তারা। ‘তাজামৌ আল-ইজ্জা’-এর তরফেও দাবি করা হয়েছে, তারা আসাদের বায়ুসেনার মধ্যে বার্তালাপ গোপনে রেকর্ড করেছে। সেখানে রাশিয়ার বায়ুসেনার হামলা নিয়ে কথা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।

তবে আক্রমণের প্রতিবাদ জানালেও আলোচনার রাস্তা খোলা রেখেছে মার্কিন প্রশাসন। বুধবারই রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরি, রাশিয়ার বিদেশ সচিব সার্গেই লেভারভের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। সেখানে আলোচনা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রতিরক্ষা সচিব কার্টারও জানিয়েছেন, দুই তরফের সেনাকর্তারা আলোচনায় বসবেন। কিন্তু রাশিয়ার দাবি মেনে সিরিয়ায় আইএস বিরোধী মার্কিন বিমান অভিযান থামানো হবে না বলেও জানান তিনি। ফলে দুই তরফের মধ্যে তথ্য বিনিময় না হলে সঙ্ঘাতের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। যদিও বুধবারের অভিযানের এক ঘণ্টা আগে বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসকে এই অভিযান সম্পর্ক জানায় রাশিয়া। সিরিয়ায় অভিযান নিয়ে তথ্য বিনিময় করতে বাগদাদে কেন্দ্র গড়েছে রাশিয়া। ইরাক, ইরান ও সিরিয়ার আসাদ-সরকারের প্রতিনিধিরা এই তথ্যকেন্দ্রের অংশ। যা নিয়ে আমেরিকার আপত্তি রয়েছে। তাই দুই দেশের সেনার মধ্যে আলোচনা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকা-সহ পশ্চিমী বিশ্বের মধ্যে আসাদ নিয়ে তীব্র মতপার্থক্য রয়েছে।

আমেরিকার মতে, নতুন সিরিয়ায় আসাদের কোনও ভূমিকা থাকতে পারে না। কিন্তু রাশিয়া প্রেসিডেন্ট আসাদকেই সিরিয়ার বৈধ শাসক বলে মনে করে। এই দলে আছে ইরানও। সম্প্রতি ব্রিটেন আসাদ-কে নিয়ে সুর নরম করলেও মার্কিন মতামতের বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। তবে বুধবার রাষ্ট্রপুঞ্জে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের রাজনৈতিক সমাধান খোঁজার ব্যাপারে এক সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কেরি ও লেভারভ।

islamic state russia russia air strike russia vs islamic state syria war
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy