Advertisement
০১ মে ২০২৪
Ukraine

ইউক্রেনের পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরেই বিপুল রুশ সেনা

ইউক্রেন সীমান্তের উত্তপ্ত পরিস্থিতি আসলে মস্কোরই ‘তৈরি করা’, বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা।

ইউক্রেন সীমান্তের উত্তপ্ত পরিস্থিতি আসলে মস্কোরই ‘তৈরি করা’, বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা।

ইউক্রেন সীমান্তের উত্তপ্ত পরিস্থিতি আসলে মস্কোরই ‘তৈরি করা’, বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
রাষ্ট্রপুঞ্জ শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৪০
Share: Save:

ফের রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে যুদ্ধের চোখরাঙানি।

দু’দিন ধরে রাশিয়া দাবি করছিল, ইউক্রেন সীমান্ত থেকে তাদের বাহিনী কিছুটা সরিয়ে নিচ্ছে তারা। কিন্তু আজ উপগ্রহচিত্র থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, এই দাবি ঠিক নয়। উপগ্রহচিত্রে দেখা যাচ্ছে, ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা সরানো তো দূরের কথা, এখনও ক্রমাগত সেনা পাঠিয়ে যাচ্ছে মস্কো। রুশ সেনা ইউক্রেন সীমান্তের ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে। অন্তত ১৪টি বাহিনী সীমান্তের কাছে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে। গত ৭২ ঘণ্টায় সেখানে রাতারাতি তৈরি করে ফেলা হয়েছে একটি অস্থায়ী সেতু। তা ছাড়া, রুশ সীমান্ত-শহর ভালিউকিতে বেশ কিছু সাঁজোয়া গাড়ি ও সেনা কপ্টার মজুত রাখা হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম রাশিয়ার এই শহরটি ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে। আজই আবার ক্রাইমিয়ার বন্দরে পৌঁছেছে তিনটি রুশ যুদ্ধজাহাজ। ২০১৪ থেকে রাশিয়া ইউক্রেনের এই অংশটি নিজেদের দখলে রেখে দিয়েছে। সামরিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, রাশিয়ার মোট সেনাবাহিনীর প্রায় অর্ধেক এখন ইউক্রেন সীমান্তে। যে পরিসংখ্যান জেনে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আজ বলেছেন, ‘‘রাশিয়া আদপেই ইউক্রেন সীমান্ত থেকে তাদের বাহিনী সরায়নি। উল্টে আরও অনেক সেনা নিয়ে এসেছে। যা দেখে আমাদের আশঙ্কা, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর জন্য জোরদার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া। এবং আমার ধারণা, তা হতে চলেছে কয়েক দিনের মধ্যেই।’’ হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে বাইডেনকে প্রশ্ন করা হয়— ‘আপনি কি পুতিনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করার কথা ভাবছেন?’ উত্তরে বাইডেন স্পষ্ট জানিয়ে দেন— ‘‘না, আমার এখন সে রকম কোনও পরিকল্পনাই নেই।’’ যুদ্ধের আশঙ্কায় ইউক্রেনের পশ্চিমপ্রান্তে যুদ্ধবিমান পাঠাতে শুরু করেছে নেটোবাহিনী।

আজই নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতরে ইউক্রেন-পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ বৈঠকে বসেছে নিরাপত্তা পরিষদ। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের বিদেশসচিবেরা। আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা ছিল না। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বৈঠকে যোগ দেন তিনি। রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে নাটকীয় ভাবে তিনি বলেন— ‘‘যুদ্ধ বাঁধাতে নয়, যুদ্ধ থামাতে আমি এখানে এসেছি।’’ ব্লিঙ্কেনের আশঙ্কা, রাশিয়া সরাসরি ইউক্রেনের রাজধানী কিভে আক্রমণ করতে পারে। তাঁর কথায়, ‘‘মনে রাখবেন, সেখানে ২৮ লক্ষ মানুষের বসবাস।’’

ইউক্রেন সীমান্তের উত্তপ্ত পরিস্থিতি আসলে মস্কোরই ‘তৈরি করা’, বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা। তা ছাড়া, বাইডেন প্রশাসনের তরফ থেকে আরও উদ্বেগ প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের ‘বৈধতা’ সর্বসমক্ষে তুলে ধরার আপ্রাণ চেষ্টা করবে। ইতিমধ্যেই মস্কো দাবি করেছে, দেশের পূর্বাঞ্চলে আকছার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটিয়ে চলছে ভোলোদিমির জ়েলেনস্কির সরকার। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের জিগির তুলেই ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তে (অর্থাৎ রাশিয়ার পশ্চিম সীমান্তে) সেনা পাঠিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের পূর্ব প্রান্তে ডোনেৎস্ক ও লুহান্‌স্ক প্রদেশ ইউক্রেন-বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটি বলে পরিচিত। মস্কোর প্রচ্ছন্ন মদতেই তারা ‘জঙ্গি কার্যকলাপ’ চালায় বলে পাল্টা দাবি প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কির।

এরই মধ্যে আবার ইউক্রেন সেনাবাহিনী ও রাশিয়ার মদতপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আজ দিনভর পরস্পরকে লক্ষ্য করে শেলিং চালিয়েছে। শেলিংয়ে ডনবাস এলাকায় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে তিন জন জখম হয়েছেন। ঘটনার জন্য প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি রাশিয়ার দিকেই আঙুল তুলে বলেছেন, ‘‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ক্রমাগত উস্কানি দিয়ে এলাকায় শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।’’ আজ একই অভিযোগের সুর ছিল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘ডনবাসে সংঘর্ষ বাঁধিয়ে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার অজুহাত খুজছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ukraine Russia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE