যুদ্ধবিরতি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শুরুর ঠিক আগেই ইউক্রেনের উপর হামলার অভিঘাত বৃদ্ধি করল রাশিয়া। মঙ্গলবার রাতভর হামলা চালিয়ে ডনবাসের (পূর্ব ইউক্রেনের ডনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলকে একত্রে এই নামে ডাকা হয়) গুরুত্বপূর্ণ শহর মাইখাইলিভকা দখল নিয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী। বৃহস্পতিবার তুরস্কের ইস্তানবুলে যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৈঠকের আগে মস্কোর এই পদক্ষেপ নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি করল বলে মনে করছে পশ্চিমী দুনিয়া।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন, কোনও পূর্বশর্ত এবং তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসবে রাশিয়া। তার আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির উপর চাপ বাড়াতেই মস্কোর এই কৌশল বলে মনে করছেন অনেকে। ডনেৎস্ক এলাকার শহর মাইখাইলিভকায় ইউক্রেন সেনার বড় ঘাঁটি ছিল। তা হাতছাড়া হওয়ার ফলে সামরিক কৌশলগত ভাবে বেকায়দায় পড়ল কিভ।
আরও পড়ুন:
ইউক্রেনের অন্তর্গত হলেও ডনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রুশ জাতিগোষ্ঠীই সংখ্যাগরিষ্ঠ। দীর্ঘ দিন ধরেই সেখানে সক্রিয় মস্কোপন্থী সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলি। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ওই অঞ্চলের রুশ বিদ্রোহীরা পুতিনের সেনার সহযোগী হিসাবে কাজ করছেন। প্রসঙ্গত, রবিবার পুতিন জানিয়েছিলেন, কোনও মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে নয় সরাসরি ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী রাশিয়া। তারই প্রেক্ষিতে সোমবার জ়েলেনস্কি বলেন, ‘‘আগামী ১৫ মে (বৃহস্পতিবার) তুরস্কে পুতিনের জন্য আমি অপেক্ষা করব।’’ তবে পুতিন নিজে আলোচনায় অংশ নেবেন কি না, সে বিষয়ে এখনও ক্রেমলিন কিছু জানায়নি। স্পষ্ট নয়, জ়েলেনস্কির তুরস্ক যাত্রার বিষয়টিও।
আরও পড়ুন:
রবিবার ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির দাবি তুলেছিল ইউক্রেন এবং তার সহযোগীরা। সেই তালিকায় ছিল ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ড, ব্রিটেনের মতো ইউরোপীয় দেশগুলি। সোমবার থেকেই তা কার্যকর করার আহ্বান জানানো হয়। সেই দাবির কয়েক ঘণ্টা পরেই রবিবার পুতিন সরাসরি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তার পরেই নতুন উদ্যমে ইউক্রেনে ড্রোন হামলা শুরু করেছে রুশ ফৌজ। এ বার সরাসরি পূর্ব ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলে নিল তারা।