ছবি: সংগৃহীত।
সরকার-বিরোধী খবর লিখে ‘অপরাধ’ করেছিলেন তিনি। এর পরেই তাঁর বাড়িতে আচমকা হানা দেয় পুলিশ-বাহিনী। বিনা কারণে তল্লাশি শুরু করে। মানসিক হেনস্থাও চলে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে নিঝনি নোভগোরোদ শহরে পুলিশের সদর দফতরের সামনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হলেন সাংবাদিক ইরিনা স্লাভিনা। তার আগে নিজেই ফেসবুকে জানিয়ে গেলেন, ‘‘আমার মৃত্যুর জন্য আপনারা রুশ ফেডারেশনকেই দায়ী করবেন।’’
মস্কো থেকে ৪০০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত নিঝনি নোভগোরোদ শহরের একটি খবরের ওয়েবসাইটের প্রধান সম্পাদক ছিলেন ইরিনা। নিজের ওয়েবসাইটে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু তদন্তমূলক খবর ছাপিয়ে ছিলেন তিনি। সাধারণত এ সব ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের চাপ এতটাই থাকে যে আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যমে এ ধরনের খবর দেখাই যায় না। ইরিনা ব্যতিক্রমী পথে হাঁটতেই নানা ভাবে সরকারি-হেনস্থা শুরু হয়। তাঁর মৃত্যুর পরে তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে ইরিনার। কিন্তু এর সঙ্গে পুলিশি হানার কোনও যোগ থাকার অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’।
ইরিনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুলিশি হেনস্থার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন একাধিক সাংবাদিক ও সমাজকর্মী। মানবাধিকার কর্মী তথা আইনজীবী পাভেল চিকভ জানিয়েছেন, দু’বার তিনি ইরিনার সঙ্গে কাজ করেছিলেন। প্রতিবারই তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো খবর ছড়ানো ও প্রশাসনকে অসম্মান করার অভিযোগ উঠেছিল। গত বৃহস্পতিবার ইরিনা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, ভোর বেলা তাঁর বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ ও ফেডারেল গার্ডরা। সরকার-বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নথিপত্র খুঁজতে থাকে তারা। ইরিনা লেখেন, ‘আমার কাছে কিছু নেই।’ তাঁর নোটবুক, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়। এমনকি স্বামী ও মেয়ের জিনিসপত্রও নিয়ে চলে যায় পুলিশ। হতাশা উগরে ইরিনা সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘কাজ করার জন্য আমার কাছে আর কিছু নেই।’
বার্লিন থেকে বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি লিখেছেন, ‘‘ভয়ানক ঘটনা। ইরিনার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অপরাধমূলক মামলা সাজানো হচ্ছিল।’’ সম্প্রতি বিষ দিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল নাভালনিকে। অভিযোগের আঙুল পুতিন-সরকারের দিকেই। বার্লিনে আপাতত চিকিৎসা চলছে নাভালনির। সেখান থেকেই তিনি বলেন ‘‘ওরা ইরিনাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy