Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
S jaishankar

‘কখনও আঘাত করেনি মস্কো’

ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন আক্রমণের পরে রাশিয়ার থেকে অশোধিত তেল কেনা বন্ধ করার জন্য ভারতকে লাগাতার চাপ দিচ্ছে পশ্চিমি দুনিয়া। কিন্তু সে চাপে নতিস্বীকার করেনি দিল্লি।

An image of S Jaishankar

ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:০৬
Share: Save:

ভারত-রাশিয়ার পারস্পরিক সম্পর্ক ‘স্থিতিশীল এবং অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ’। কখনওই মস্কো এমন কিছু করেনি, যাতে ভারতের স্বার্থে আঘাত লাগে। একটি জার্মান দৈনিককে এই কথা বলেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন আক্রমণের পরে রাশিয়ার থেকে অশোধিত তেল কেনা বন্ধ করার জন্য ভারতকে লাগাতার চাপ দিচ্ছে পশ্চিমি দুনিয়া। কিন্তু সে চাপে নতিস্বীকার করেনি দিল্লি। গত সপ্তাহে মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘‘এতে অন্যদের কোনও অসুবিধে হচ্ছে বলে মনে করি না।’’ জার্মান দৈনিকটিকেও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, এই মুহূর্তে রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল কেনার কোনও বিকল্প দেখছে না ভারত।

যুদ্ধ বাধার আগে থেকেই রাশিয়া ভারতের প্রধান তেল সরবরাহকারী দেশ। সে কথা উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘‘ইউক্রেনে যুদ্ধ বাধার পরে ইউরোপ নিজের সিংহভাগ তেল কেনার জন্য পশ্চিম এশিয়ার উপরে নির্ভর করতে শুরু করল। বেশি দাম দিচ্ছে বলে পশ্চিম এশিয়া অনেক ক্ষেত্রেই ইউরোপকেই অগ্রাধিকার দিল। কী করতাম আমরা? হয় আপনারা (ইউরোপ) বেশি দাম দিচ্ছেন বলে আমাদেরও বেশি দামে জ্বালানি কিনতে হত। অথবা আমাদের কাছে জ্বালানিই থাকত না। ফলে (রাশিয়া থেকে তেল কিনে) এক অর্থে আমরা জ্বালানির বাজারকে একটা ধরাছোঁয়ার মধ্যে রেখেছি।’’ সবাই রাশিয়ার বদলে অন্য দেশের থেকে অশোধিত তেল কিনলে বাজারে জ্বালানির দর আরও চড়ত বলেই বিদেশমন্ত্রীর মত।

জয়শঙ্করের বক্তব্য, ‘‘প্রত্যেক সম্পর্ক তৈরি হয় পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে। স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, রাশিয়া কখনও আমাদের স্বার্থে আঘাত করেনি। রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপ, আমেরিকা কিংবা জাপানের সম্পর্কে উত্থান-পতন এসেছে। কিন্তু আমাদের সঙ্গে বরাবরই রাশিয়ার স্থিতিশীল ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থেকেছে। এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক। অন্যদের ক্ষেত্রে হয়তো বিষয়টা আলাদা।’’

এই প্রসঙ্গে উদাহরণ দিয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, সামরিক ও রাজনৈতিক ভাবে চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অনেকটাই জটিল। ২০২০ সালে চিনের সঙ্গে সীমান্তে সংঘাতের সময়ে ভারত ইউরোপের সমর্থন আশা করেছিল কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘চিনের সম্পর্কে আমাদের যা দৃষ্টিভিঙ্গি, আশা করব না ইউরোপেরও হুবহু সেই একই দৃষ্টিভঙ্গি হবে। একই ভাবে, ইউরোপের বোঝা দরকার, রাশিয়া সম্পর্কে তাদের আর আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এক হতে পারে না। পারস্পরিক সম্পর্কে এই স্বাভাবিক পার্থক্যগুলো থাকবে, এটা মেনে নেওয়া দরকার।’’

দিল্লির নীতির সমর্থনে এর আগে জয়শঙ্কর বলেছিলেন, সারা মাসে ভারত যা তেল কেনে, ইউরোপ তা কেনে এক বিকেলে। যুদ্ধ শুরুর পরে রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদানে একাধিক বার বিরত থেকেছে ভারত। কিন্তু একই সঙ্গে পুতিনকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘‘এটা যুদ্ধের সময় নয়।’’ তেল কেনা নিয়ে অনড় অবস্থানের ব্যাখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি এই সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের দাবিও তুলেছেন জয়শঙ্কর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

S jaishankar India-Russia Russia India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE