Advertisement
E-Paper

ওঠা-পড়ার পালা চলছে নেপালে, বলছে উপগ্রহ

আক্ষরিক অর্থেই নড়ে গিয়েছে নেপালের ভিত! উপর্যুপরি তীব্র ভূমিকম্পের চোটে কাঠমান্ডুর দক্ষিণে ভূস্তর অন্তত এক মিটার উঁচু হয়ে গিয়েছে। আবার কাঠমান্ডুর উত্তরে বিশাল অঞ্চলের মাটি বিস্তর বসে গিয়েছে বলে দাবি করছে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইএসএ। ২৫ এপ্রিলের আগে-পরে ওখানকার ভূ-চিত্র বিশ্লেষণ করে তারা এ হেন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।

দেবদূত ঘোষঠাকুর

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৫ ০৩:১৩

আক্ষরিক অর্থেই নড়ে গিয়েছে নেপালের ভিত!

উপর্যুপরি তীব্র ভূমিকম্পের চোটে কাঠমান্ডুর দক্ষিণে ভূস্তর অন্তত এক মিটার উঁচু হয়ে গিয়েছে। আবার কাঠমান্ডুর উত্তরে বিশাল অঞ্চলের মাটি বিস্তর বসে গিয়েছে বলে দাবি করছে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইএসএ। ২৫ এপ্রিলের আগে-পরে ওখানকার ভূ-চিত্র বিশ্লেষণ করে তারা এ হেন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। উপগ্রহ-চিত্রের ভিত্তিতে জার্মান এরোস্পেস সেন্টারেরও একই পর্যবেক্ষণ।

দুই সংস্থার গবেষকদের দাবি অনুযায়ী, ২৫ এপ্রিলের সেই বিধ্বংসী ভূমিকম্পের জেরে নেপালের ভূস্তর ভীষণ ভাবে বিপর্যস্ত। তার উপরে মঙ্গলবারের ৭.৩ রিখটারের নতুন ভূকম্পনে সেখানকার ভূ-চিত্রে আরও পরিবর্তন ঘটা স্বাভাবিক। হিমালয়ের ওই তল্লাটে বড় মাপের আরও কত ভূকম্পন হবে, তার উপরে সেই পরিবর্তনের স্থায়িত্ব নির্ভর করছে।

ভারতীয় ভূ-বিজ্ঞানীরাও একমত। জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল জ্ঞানরঞ্জন কয়ালের কথায়, ‘‘বড় ভূমিকম্পে ভূমির চরিত্র পাল্টে যাওয়াটা অসম্ভব কিছু নয়।’’ তিনি জানাচ্ছেন, বড় মাপের ভূমিকম্পে ছোটখাটো পরমাণু বোমার সমান শক্তি নির্গত হয় (মঙ্গলবার যেমন বেরিয়েছে ১০১৫ জুল শক্তি)। মাটির নীচে অত জোরালো একটা বোমা ফাটলে কী হতে পারে, সহজেই অনুমেয়। আর কম্পন-তরঙ্গ কোন পথে কী ভাবে এগোবে, তার উপরে নির্ভর করবে কোথায় কতটা মাটি বসবে কিংবা উঠবে।

এ প্রসঙ্গে ১৮১৯-এ গুজরাতের কচ্ছে ৭.৮ রিখটার-মাত্রার ভূমিকম্পের উদাহরণ টেনেছেন জ্ঞানরঞ্জনবাবু। ‘‘ওখানে মাটি উঠে এসে ৯০ কিলোমিটার লম্বা এক কৃত্রিম বাঁধ গজিয়ে তুলেছিল। নাম হয় আল্লাবাঁধ। প্রায় দু’শো বছরেও সেটা নষ্ট হয়ে যায়নি।’’— বলছেন তিনি।

একই ভাবে ২০০৪-এর সুনামির সময়ে সুমাত্রায় ভারত মহাসাগরের নীচে সৃষ্ট ৯.৯ রিখটারের প্রবল কম্পন পাল্টে দেয় আন্দামানের ভূ-চরিত্র। দ্বীপের একাংশ সেঁধিয়ে যায় বঙ্গোপসাগরে, ইন্দিরা পয়েন্ট চলে যায় জলের তলায়। আবার দ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে সমুদ্র উঠে আসায় প্রবাল প্রাচীরের দফারফা ঘটে।

নেপালে ঠিক কী হয়েছে?

উপগ্রহ-চিত্র বিশ্লেষণ করে ইএসএ এবং জার্মান এরোস্পেস সেন্টারের সমীক্ষকেরা জানিয়েছেন, দৈর্ঘে ১২০ কিলোমিটার ও প্রস্থে ৫০ কিলোমিটার— কাঠমান্ডুর দক্ষিণে এমন বিশাল একটা এলাকার মাটি উপরে উঠে এসেছে। ওঁদের দাবি, উপগ্রহ ঠিক বুঝতে পারে, কোনও অঞ্চলের জমি তার (উপগ্রহের) থেকে কতটা দূরে চলে গেল, বা কাছে উঠে এল। সেই মতো সে বার্তা পাঠায়, যা খতিয়ে দেখে জমির চরিত্রবদল সম্পর্কে ধারণা করা সম্ভব। উপগ্রহ থেকে জমির দূরত্ব বৃদ্ধির অর্থ, সেখানে ভূমিক্ষয় হয়েছে কিংবা জমি বসে গিয়েছে। দূরত্ব কমলে বুঝতে হবে, জমি উঁচু হয়ে উঠেছে।

সমীক্ষকদের বক্তব্য: মঙ্গলবার যে প্রাবল্য নিয়ে নতুন ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, তাতে নেপালের অস্থির ভূস্তরে আরও পট পরিবর্তনের সমূহ সম্ভাবনা। পরিবর্তন কতটা হল, আগামী ক’দিনের উপগ্রহ-চিত্র থেকে তা পরিষ্কার হতে পারে।

Nepal earthquake satalite forcast
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy