Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পরিবেশ রক্ষায় আজ পথে ৯৮ দেশের পড়ুয়া

প্রতি শুক্রবার স্কুলে না গিয়ে প্রতিবাদ জানায় গ্রেটা। সেখান থেকেই বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার’ আন্দোলন। অটিজমে আক্রান্ত গ্রেটা গত ডিসেম্বরে সুইৎজারল্যান্ডের দাভোসে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বলার জন্য ডাক পেয়েছিল

স্বতন্ত্র: পরিবেশের জন্য ‘স্কুল স্ট্রাইক’। পোস্টার হাতে গ্রেটা থুনবার্গ।

স্বতন্ত্র: পরিবেশের জন্য ‘স্কুল স্ট্রাইক’। পোস্টার হাতে গ্রেটা থুনবার্গ।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন ও সুইডেন শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৯ ০২:৩২
Share: Save:

আজ ওরা কেউ স্কুলে যাবে না। বরং রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাবে। ওদের কেউ কেউ সদ্য হাইস্কুলে পা রেখেছে, কেউ এখনও নীচু ক্লাসের পড়ুয়া। কিন্তু পরিবেশ নিয়ে ওরা বড়দের মতো উদাসীন নয়। ভবিষ্যতে নিজেদের জন্য দূষণমুক্ত পরিবেশের দাবিতে শুক্রবার বিশ্ব জুড়ে পথে নামবে ওরা।

পরিবেশ রক্ষার্থে এ যাবৎ সবচেয়ে বড় এই আন্দোলনের উদ্যোক্তা আমেরিকার তিন স্কুলপড়ুয়া কন্যা আলেকজ়ান্দ্রিয়া ভিলাসেনর, হাভেন কোলম্যান, ইসরা হিরসি। গত ১ মার্চ একটি মার্কিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত চিঠিতে ১৫ মার্চ আন্দোলনের ডাক দিয়ে ওরা বলেছিল, ‘‘আমরা ছোট। ভোট দেওয়ার অধিকার নেই। আমরা মানব সম্প্রদায়ের স্বরহীন ভবিষ্যত। কিন্তু এ বার আমাদের কণ্ঠ শোনা যাবে। ১৫ মার্চ বি‌শ্বের সব মহাদেশ আমাদের প্রতিবাদে শামিল হবে।’’ আজ শুধু আমেরিকায় একশোর বেশি শহরে পথে নামতে প্রস্তুত খুদেরা।

পৃথিবী জুড়ে ৯৮টি দেশের হাজার হাজার পড়ুয়া আন্দোলনে শামিল হচ্ছে। অনলাইনে ঢেউ ছড়িয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, উগান্ডা, তাইল্যান্ড, কলম্বিয়া, পোল্যান্ড, সুদূর অস্ট্রেলিয়াতেও।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আজকের পৃথিবী যে হারে দূষিত হচ্ছে, বিশ্ব উষ্ণায়ন যে ভাবে বাড়ছে তা রুখতে আমাদের হাতে বড়জোর আর ১২ বছর রয়েছে। তার মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাবে। অন্তত ৭০টি দেশের ২৫০ জন বিজ্ঞানী সম্প্রতি পরিবেশ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন। ‘সিক্সথ গ্লোবাল এনভায়রনমেন্টাল আউটলুক’ নামে ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, পরিস্থিতি না বদলালে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশে দেশে অকালে মড়ক লাগবে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এশিয়া, মধ্য এশিয়া ও আফ্রিকা। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া মৃত্যুর অন্যতম কারণ হয়ে উঠবে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রজনন ক্ষমতা কমে যাবে। শিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হবে স্নায়ু রোগে।

তাই পড়ুয়াদের দাবি, কার্বন উৎপাদন বন্ধ করা, গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ আয়ত্তে আনার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলিতে সরকার এগিয়ে আসুক। ঠিক যেমন গ্রেটার ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ-ক্লদ ইউঙ্কার। ২০১২ থেকে ২০২৭-এর মধ্যে এই খাতে বিপুল অর্থ ব্যয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। তবে বিরোধী স্বরও কম নেই। এই আন্দোলনের জেরে স্কুলের পঠনপাঠন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করে সম্প্রতি সমালোচিত হন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। অস্ট্রেলিয়ার এক শিক্ষামন্ত্রী আবার ১৫ মার্চের আন্দোলনে পা মেলালে শিক্ষক ও পড়ুয়া দু’পক্ষকেই শাস্তি দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তবু দমানো যাচ্ছে না নবীন-কাঁচাদের। বাসযোগ্য পৃথিবীর দাবিতে ওরা বদ্ধপরিকর।

নোবেলের জন্য মনোনীত কিশোরী গ্রেটা

১৫ মার্চের বীজ বোনা হয়ে গিয়েছিল এক বছর আগেই। ২০১৮-র অগস্টে সুইডেনের পার্লামেন্টের সামনে পোস্টার হাতে দাঁড়ানো এক কিশোরীর ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল পৃথিবীর কোণায় কোণায়। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী পরিবেশ বাঁচাতে সুইডেন যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণ করতে না পারায় রাষ্ট্রনেতাদেরই দায়ী করেছিল গ্রেটা থুনবার্গ নামে ওই কিশোরী। এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে গ্রেটা। মাত্র ষোলো বছর বয়সে।
প্রতি শুক্রবার স্কুলে না গিয়ে প্রতিবাদ জানায় গ্রেটা। সেখান থেকেই বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার’ আন্দোলন। অটিজমে আক্রান্ত গ্রেটা গত ডিসেম্বরে সুইৎজারল্যান্ডের দাভোসে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বলার জন্য ডাক পেয়েছিল। সে বলেছিল, ‘‘ভবিষ্যতের জন্য তোমার আশাবাদী হয়ো না। ভয় পাও। যে আতঙ্কে আমি রোজ ভুগছি, সেটা একবার উপলব্ধি করো। আর সেই মতো ব্যবস্থা নাও।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Environment Pollution Sweden Greta Thunberg
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE