বালোচিস্তানে ফের জাফর এক্সপ্রেসে হামলার অভিযোগ উঠল। বিস্ফোরণে লাইনচ্যুত হল পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেসের ছ’টি কামরা। চলতি সপ্তাহে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার হামলা হল পাকিস্তানের এই ট্রেনে। রবিবার সকাল ৯টা নাগাদ কোয়েটা থেকে পেশোয়ারের উদ্দেশে রওনা দেয় ট্রেনটি। কোয়েটা থেকে রওনা দেওয়ার কিছু সময় পরেই লাইনে পেতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে ছ’টি কামরা লাইনচ্যুত হলেও কোনও হতাহতের খবর নেই।
কোয়েটা শহর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরেই বিস্ফোরণটি হয়েছে। পাকিস্তান রেলের কোয়েটা শাখার জনসংযোগ আধিকারিক মুহাম্মদ কাশিফ সংবাদমাধ্যম ‘ডন’কে বলেন, “রেল লাইনে পেতে রাখা একটি বোমা ফেটে ছ’টি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে। তবে কারও প্রাণহানি হয়নি।” বিস্ফোরণের খবর পেয়ে রেলকর্মী, উদ্ধারকারী দল, স্থানীয় পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছোয়। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের অভিঘাতে বেশ কয়েকজন যাত্রী জখম হয়েছেন। তবে তাঁদের চোট গুরুতর নয়।
পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেসে প্রায় ৩৫০ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। একটি বিশেষ ট্রেনে তাঁদের সকলকে কোয়েটায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘ডন’ জানিয়েছে, আগামী ১৪ অগস্ট পর্যন্ত জাফর এক্সপ্রেস এবং বোলান মেল বাতিল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে দেশের রেল মন্ত্রক। সাম্প্রতিক সময়ে বালোচিস্তানে বার বার হামলার মুখে পড়েছে জ়াফর এক্সপ্রেস। গত ৭ অগস্ট বালোচিস্তানের সিবি স্টেশনের কাছেও রেল লাইনে বিস্ফোরণ হয়েছিল। তবে ট্রেন বেরিয়ে যাওয়ার পরে সেই বিস্ফোরণ হয়। তার আগে গত ৪ অগস্ট বালোচিস্তানের কোলপুরের কাছে জাফর এক্সপ্রেসের চালককে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল।
আরও পড়ুন:
গত মার্চ মাসে এই বালোচিস্তান প্রদেশেই পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেসে হামলা হয়েছিল। পুরো ট্রেন কব্জা করে নিয়েছিলেন বালোচ বিদ্রোহীরা। যে এলাকায় কব্জা করা হয়েছিল, সেই এলাকা ১৭টি সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে পেরোতে হয় জাফর এক্সপ্রেসকে। এর মধ্যে একটি হল মাশকাফ সুড়ঙ্গ। কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে সিবি শহরের কাছে রয়েছে এই সুড়ঙ্গ। মার্চে ওই সুড়ঙ্গের কাছেই আচমকা জাফর এক্সপ্রেসের সামনে রেলপথে বিস্ফোরণ হয়। তার পর একটি বুলেট এসে লাগে চালকের বুকে। সুড়ঙ্গের মধ্যেই থেমে যায় ট্রেনটি। ট্রেনে তখন ৪০০ জনের বেশি যাত্রী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পাক সেনাবাহিনীর কর্মীরাও। পরে অবশ্য পাক সেনাবাহিনীর অভিযানে বালোচ বিদ্রোহীমুক্ত হয় ট্রেন। নিহত হন ২১ জন সাধারণ মানুষ এবং চার জন জওয়ান। সেনা অভিযানে ৩৩ জন বিদ্রোহীরও প্রাণ যায়। যদিও পাকিস্তানের প্রশাসনের ওই পরিসংখ্যান অস্বীকার করেছিলেন বালোচ বিদ্রোহীরা।