Advertisement
০২ মে ২০২৪
Earthquake in Nepal

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত নেপালে মৃত ১৩০-এর বেশি! আশঙ্কা আরও মৃত্যুর, তাসের ঘরের মতো ধসেছে বহু বাড়ি

নেপালের ভূকম্পনের অভিঘাত এতটাই ছিল যে, তার প্রভাবে কেঁপে উঠেছিল দিল্লি-এনসিআরের মাটিও। বেশ কিছুক্ষণ ধরে টের পাওয়া গিয়েছিল কম্পন। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৪।

representational image

পিটিআইয়ের প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কাঠমান্ডু শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৩৩
Share: Save:

শুক্রবার গভীর রাতে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যাও ১০০ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। নেপালের ভূকম্পনের অভিঘাত এতটাই ছিল যে, তার প্রভাবে কেঁপে উঠেছিল সুদূর দিল্লির মাটিও। বেশ কিছু ক্ষণ ধরে টের পাওয়া গিয়েছিল কম্পন। এছাড়াও ভূমিকম্পের কারণে এনসিআর, অযোধ্যা-সহ উত্তর ভারতের বড় অংশের মাটিতে কম্পন অনুভূত হয়েছিল। লখনউ এবং বিহারেরও বেশ কিছু জায়গার মাটি কেঁপে ওঠে।

ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ কেঁপে ওঠে দিল্লি-এনসিআর সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল নেপাল। কম্পনের কেন্দ্র মাটি থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার নীচে ছিল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৪। কম্পনের ফলে নেপাল এবং ভারতের প্রভাবিত এলাকার বহু মানুষ আতঙ্কে নিজেদের বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন।

নেপালের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ভূমিকম্প আঘাত হানার কিছু ক্ষণের মধ্যে বেশ কয়েকটি বাড়ি তাসের ঘরের মতো ধসে পড়ে। বহু বাড়িতে চওড়া চওড়া ফাটল ধরেছে। ইট-কাঠ-সিমেন্টের ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়ছে বহু মানুষের। যার মধ্যে পশ্চিম রুকুম এবং জাজারকোটে এখনও পর্যন্ত সব থেকে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে রুকুম পশ্চিমের প্রশাসনিক কর্তা হরি প্রসাদ পান্ত বলেন, ‘‘রুকুম পশ্চিমে কমপক্ষে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সময় ভোর ৫টা পর্যন্ত মৃতদেহগুলি উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’’

নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল ভূমিকম্পের কারণে মৃত্যু এবং ক্ষয়ক্ষতির জন্য শোক প্রকাশ করেছেন। নেপালের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লেখা হয়েছে, ‘‘শুক্রবার রাত ১২টা নাগাদ জাজারকোটের ভূমিকম্পের কারণে হওয়া মৃত্যু এবং ক্ষয়ক্ষতির জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল। উদ্ধারকাজ এবং ত্রাণের জন্য তিনটি নিরাপত্তা সংস্থা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে।’’

নেপালের ভূমিকম্প নিয়ে শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘‘নেপালে হওয়া ভূমিকম্পের কারণে প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে গভীরভাবে শোকাহত। নেপালের জনগণের পাশে আছে ভারত। নেপালকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত ভারত। স্বজনহারা পরিবারগুলির প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আহতরা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, সেই কামনা করছি।’’

উল্লেখ্য যে, এই নিয়ে গত এক মাসের মধ্যে তিন বার কেঁপে উঠল ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল। গত ২২ অক্টোবর কেঁপে উঠেছিল নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.১। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল নেপালের ধাদিং জেলা। এর ঠিক দু’দিন পরে আবার ভূমিকম্প হয় নেপালে। মাত্রা ছিল ৪.১। গত ৩ অক্টোবরও ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল নেপাল। পর পর চার বার ভূমিকম্প হয়েছিল নেপালে। নেপালের পাশাপাশি তার প্রভাব পড়েছিল দিল্লি, উত্তরপ্রদেশের লখনউ, হাপুর এবং আমরোহাতে। কম্পন অনুভূত হয়েছিল উত্তরাখণ্ডের কিছু কিছু অংশ, চণ্ডীগড়, জয়পুরেও।

সরকারি নথি অনুযায়ী, নেপাল বিশ্বের ১১তম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। তিব্বতীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের উপর অবস্থিত হওয়ায় নেপাল প্রায় সারা বছরই ভূমিকম্পের ঝুঁকির মুখে থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nepal Delhi NCR Uttar Pradesh Bihar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE