Advertisement
E-Paper

বিধ্বস্ত গাজ়ায় তীব্র হচ্ছে দুধের সঙ্কট! পরিস্থিতি না-বদলালে কয়েকশো শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা, উদ্বেগ বাড়ছে হাসপাতালগুলির

গাজ়ায় শুধু খাবার নয়, শিশুদের দুধের জন্যও হাহাকার দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ গাজ়ার খান ইউনূস শহরের হাসপাতালে শিশুদের জন্য এক সপ্তাহের দুধ বেঁচে রয়েছে। হাসপাতালের বাইরে যে শিশুরা রয়েছে, তাদের অবস্থা আরও খারাপ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫ ২১:২৪
গাজ়া শহরে দু’মাসের সন্তানকে কোলে নিয়ে বোতলে করে দুধ পান করাচ্ছেন এক প্যালেস্টাইনি মহিলা।

গাজ়া শহরে দু’মাসের সন্তানকে কোলে নিয়ে বোতলে করে দুধ পান করাচ্ছেন এক প্যালেস্টাইনি মহিলা। ছবি: রয়টার্স।

সংঘর্ষে বিধ্বস্ত গাজ়ায় দুধের সঙ্কট ক্রমে তীব্র হচ্ছে। পরিস্থিতি এ রকম চলতে থাকলে গাজ়া ভূখণ্ডে দুধের অভাবে কয়েকশো শিশুর মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর এক প্রতিবেদনে এমনটাই আশঙ্কা করা হয়েছে। গাজ়ার খান ইউনূস শহরের নাসের হাসপাতালে শিশুদের খাওয়ানোর জন্য মাত্র এক সপ্তাহের দুধ বেঁচে রয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক আহমেদ আল-ফারা।

দক্ষিণ গাজ়ার ওই হাসপাতালে অপরিণত এবং কম ওজনের শিশুদের জন্য যে দুধ থাকে, তা ইতিমধ্যে ফুরিয়ে গিয়েছে। ফলে সাধারণ দুধই ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু তা-ও আর বেশি বাকি নেই। ফোনে ‘দ্য গার্ডিয়ান’কে আল-ফারা বলেন, “পরিস্থিতি কতটা খাবার তা আমি বর্ণনা করতে পারছি না। আপাতত আমাদের কাছে প্রায় এক সপ্তাহের দুধ মজুত রয়েছে। তবে হাসপাতালের বাইরেও প্রচুর শিশু রয়েছে, যারা দুধ পাচ্ছে না। এ এক ভয়ঙ্কর অবস্থা।”

বস্তুত, গাজ়া ভূখণ্ডে প্যালেস্টাইনিদের জন্য সামান্য কিছু ত্রাণসামগ্রী পাঠাতে দেওয়া ছাড়া, বাকি সবই আটকে দিয়েছে ইজ়রায়েল। বর্তমানে মার্কিন সাহায্যপ্রাপ্ত এক বেসরকারি সংস্থা গাজ়া ভূখণ্ডে ত্রাণসামগ্রী বিলি করছে। কিন্তু গাজ়ার চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ওই ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে শিশুদের দুধ নেই। গাজ়ার আল-নুসেইরত শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া ২৭ বছর বয়সি হানা আল-তাওয়িলও তাঁর সন্তানের জন্য হন্যে হয়ে দুধ খুঁজছেন। তাওয়িল নিজেও অপুষ্টির শিকার। পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছেন না। শরীর দুর্বল হয়ে ভেঙে পড়েছে। ফলে ১৩ মাসের সন্তানকে স্তনদুগ্ধ পান করাতে পারছেন না তিনি।

গাজ়ার স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে অক্টোবরে গাজ়া ভূখণ্ডে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে ইতিমধ্যে ৬৬ জন প্যালেস্টাইনি শিশুর অনাহারে মৃত্যু হয়েছে। গাজ়ার সাধারণ নাগরিকদের ক্ষুধাকে ইজ়রায়েল একটি ‘অস্ত্র’ হিসাবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ তুলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। প্যালেস্টাইনিদের বিরুদ্ধে এটিকে একটি কৌশল হিসাবে ইজ়রায়েল কাজে লাগাচ্ছে বলে অভিযোগ। বস্তুত, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সময়ে গাজ়ায় ত্রাণের গাড়ি প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে। গাজ়ায় ত্রাণশিবিরের কাছে গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।

প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত কোনও সংঘর্ষবিরতি হয়নি ইজ়রায়েলের। তবে শনিবার হামাস শিবির জানিয়েছে গাজ়ায় ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতিতে তারা রাজি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই দাবি করেছেন, ইজ়রায়েল সংঘর্ষ বন্ধ করতে রাজি। তবে কোনও কিছুই এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে গাজ়ায় খাবার এবং দুধের জন্য হাহাকার আরও প্রকট হচ্ছে দিনের পর দিন।

Gaza Strip Israel Hamas Conflict Gaza City
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy