বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন সমঝোতার জন্য আলোচনা শুরু করল জুলাই আন্দোলনের ছাত্র-যুব নেতাদের একাংশের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি’ (‘জামাত’ নামেই যা পরিচিত)। ঘটনাচক্রে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তথা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে ১৭ বছরের স্বেচ্ছানির্বাসনে ইতি টেনে ঢাকায় ফেরার পরেই।
জামাতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বৃহস্পতিবার রাতে জানিয়েছেন, তাঁদের দলের সঙ্গে এনসিপি-র আসন সমঝোতার বিষয়ে আলোচনা চলছে। গত বছর জুলাই-অগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদেরও সমাজমাধ্যমে একই ইঙ্গিত দিয়েছেন। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানাচ্ছে, জামাতের কাছে ৫০টি আসনের দাবি জানিয়েছে এনসিপি। এনসিপির নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারি এবং জামাতের আবদুল্লা মহম্মদ তাহের আলোচনার মাধ্যমে রফা চূড়ান্ত করবেন। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার ‘কট্টর জামাত বিরোধী’ হিসেবে পরিচিত এনসিপি নেতা মীর আরশাদুল হক দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ও চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ছিলেন।
আরও পড়ুন:
গত ২৮ অক্টোবর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারি জানিয়েছিলেন, জাতীয় সংসদের আসন্ন নির্বাচনে জামাতের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে পারেন তাঁরা। কিন্তু ৫ নভেম্বর এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ৩০০ আসনের জাতীয় সংসদের সব ক’টিতেই লড়ার বার্তা দিয়ে বলেন, ‘‘আমরা একক ভাবে নির্বাচনে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ গত বছরের ৫ অগস্ট বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে জামাত ও এনসিপি-র মতের মিল দেখা যাচ্ছিল। ফলে তাদের রাজনৈতিক জোট হিসেবেও মনে করা হচ্ছিল। আচমকাই তাল কাটে জুলাই সনদে সই করা না করা নিয়ে। সূত্রের খবর, এনসিপি নেতৃত্ব ধরে নিয়েছিলেন, আইনি ভিত্তির নিশ্চয়তা না পেলে জামাত জুলাই সনদে সই করবে না। সই না করার ব্যাপারে এনসিপি অনড় থাকলেও জামাত সিদ্ধান্ত বদল করে সনদে স্বাক্ষর করে। এর পরে এনসিপি নেতাদের একাংশ ধারাবাহিক ভাবে জামাতের সমালোচনা করছেন। কিন্তু তারেকের প্রত্যাবর্তনে উজ্জ্বীবিত বিএনপি-কে ঠেকাতে দু’দল শেষ পর্যন্ত আসন বোঝাপড়ার পথে হাঁটতে বাধ্য হল বলেই মনে করছেন অনেকে।