পার্ক গুন হে
ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতিতে ইন্ধন জোগানো। গুরুতর এই অভিযোগে গত বছরের শেষের দিকে পার্লামেন্টে ভর্ৎসনা করা হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গুন হে-কে। এ বার তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিল দেশের সাংবিধানিক আদালত। শুক্রবার এই রায় ঘোষণার পরেই আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পার্কের সমর্থকরা। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ হয়। কয়েক হাজার মানুষের সেই বিক্ষোভে ভিড়ের চাপে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে
দুই বিক্ষোভকারীর।
আদালত জানিয়েছে, অপসারিত হওয়ার মুহূর্ত থেকে প্রেসিডেন্টের রক্ষাকবচ হারালেন ৬৫ বছরের পার্ক। এ বার দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, অবৈধ জুলুমবাজির দায়ে সাধারণ আপরাধীর মতো বিচার হবে তাঁর। পার্কই গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট, যাঁকে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরিয়ে দেওয়া হল। তবে প্রেসিডেন্টের দফতর জানিয়েছে, ক্ষমতা গেলেও নিরাপত্তার কারণে এখনই সরকারি বাসভবন ব্লু হাউস থেকে সরানো হচ্ছে না তাঁকে। সংবিধান অনুযায়ী, ৬০ দিনের মধ্যে দেশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তত দিন দায়িত্বে থাকবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী তথা কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট হোয়াং কিও-আন।
পার্কের বিরুদ্ধে অভিযোগের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ঘনিষ্ঠ বন্ধু চোই সুন সিলের নাম। ব্যবসায় সুবিধা পেতে পার্কের দীর্ঘদিনের সঙ্গী চোইকে মোটা টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন স্যামসাং গোষ্ঠীর প্রধান জে ওয়াই লি। অভিযোগ, এই ঘুষ-কাণ্ডে ব্যক্তিগত ভাবে জড়িত ছিলেন পার্ক। বন্ধুকে দুর্নীতির সুযোগ করে দেন তিনিই। এমনকী সরকারের গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ঘাঁটাঘাটি করার অবাধ স্বাধীনতা ছিল চোই-এর। গত বছর ৯ ডিসেম্বর পার্ককে ইমপিচ করতে ভোটাভুটি হয় পার্লামেন্টে। নামে প্রেসিডেন্ট থাকলেও ইমপিচমেন্টের পরেই কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর সব ক্ষমতা। পার্লামেন্টের সেই সিদ্ধান্তই বহাল রাখল আদালত। আদালতের আট সদস্যের বেঞ্চ জানিয়েছে, ক্ষমতায় থাকাকালীন পার্ক দেশের আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। সরকারি বিষয়ে নাক গলানোর সুযোগ করে দেন বন্ধুকে। অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাও চালান তিনি। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পার্ক।
পার্ককে নিয়ে টানাপড়েনের জেরে ৯২ দিন ধরে নেতৃত্ব-সঙ্কটে ভুগছে দক্ষিণ কোরিয়া। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা যায়, তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পক্ষে ৭০% দেশবাসী। আজ আদালতে চত্বরে গণ্ডগোলের পরে দেশবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানিয়েছেন কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট হোয়াং কিও-আন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy