প্রতীকী ছবি।
অশান্ত মায়ানমারে সেনা দিবস উদ্যাপনের কুচকাওয়াজে ভারতের অংশগ্রহণে তৈরি হল বিতর্ক।
যদিও শুধু ভারত নয়, সেনা অভ্যুত্থানের মাস দুয়েকের মাথায় নেপিদও-তে ২৭ মার্চের ওই মিলিটারি প্যারেডে যোগ দিয়েছিল চিন, রাশিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, লাওস এবং তাইল্যান্ডও। তবে দুই গণতান্ত্রিক দেশ ভারত এবং বাংলাদেশের অবস্থান নিয়েই দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে নানা মহলে। প্রশ্ন, তা হলে কি মায়ানমারের সেনার অবস্থানকে সমর্থন করছে এই দুই গণতন্ত্র?
বিশ্বের বেশির ভাগ গণতন্ত্রই মায়ানমারে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে। এই মর্মে একটি দাবিপত্রেও সাক্ষর সংগ্রহ করার কাজ চলেছে। তবে বড় দেশগুলির মধ্যে ভারত এবং চিনের কাছে তাতে সাক্ষরের আবেদন রাখা হলেও আগেই তা এড়িয়ে গিয়েছে তারা। উল্লেখ্য, সেনা দিবসের প্যারেডে অংশগ্রহণকারী মোট আটটি দেশের মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশ ছাড়া গণতান্ত্রিক দেশ বলতে ছিল পাকিস্তান এবং রাশিয়া। যদিও সেখানে গণতন্ত্র শাসন ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে। কিন্তু ভারত, বাংলাদেশে তেমনটা নয়।
তবে কূটনীতিকেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ভারত মায়ানমার সেনার বিরোধিতা না-করলেও সরাসরি তাদের অবস্থানকে কখনও সমর্থনও জানায়নি। বরাবরই নিরপেক্ষ বার্তা দেওয়ার চেষ্টাই করেছে। মনে রাখা দরকার, ভারতের সঙ্গে ১৬০০ কিলোমিটার লম্বা সীমান্ত রয়েছে মায়ানমারের। সীমান্তবর্তী রাজ্য মিজোরামের সঙ্গে সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের পাশাপাশি সেখানকার মানুষের সঙ্গে মায়ানমারের একাধিক সম্প্রদায়ের পারিবারিক যোগও রয়েছে। তা ছাড়া, উত্তর-পূর্ব ভূখণ্ডে শান্তি ফেরাতে এবং বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণে বরাবরই ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাশে থেকেছে মায়ানমার। কূটনীতিকদের মতে, এই আঙ্গিক থেকেই হয়তো দেশটির বিরুদ্ধে সরাসরি বিরোধিতায় নামেনি ভারত।
সম্প্রতি মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশ এবং মণিপুরের মানুষ পারিবারিক বন্ধনের খাতিরে সে-দেশ থেকে বহু মানুষকে ভারতে ঢোকার ব্যবস্থা করছে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই প্রেক্ষিতে ১৮ মার্চ কেন্দ্রের তরফে এক নির্দেশিকায় রাজ্য প্রশাসনগুলিকে এই শরণার্থী অনুপ্রবেশ কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট অনুযায়ী, মায়ানমার থেকে আসা কমপক্ষে ১৬ হাজার রোহিঙ্গা ইতিমধ্যেই ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। কেন্দ্রের মতে যদিও সেই সংখ্যা ৪০ হাজার পেরিয়েছে। ফলে আর শরণার্থীর বোঝা না বাড়াতেই ভারত এখন তৎপর।
কূটনীতিকদের মতে, সব দিক সামলেই মায়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বোঝাপড়া এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে ভারত। ভারত যদি সরাসরি মায়ানমারের বিরোধিতায় নামে তা হলে চিনকে জমি ছেড়ে দেওয়া হবে বলেই মত কূটনৈতিক মহলের। যা নিয়েও বিশেষ সতর্ক ভারত।
অন্য দিকে, সেনার গুলিতে মৃতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়ানোয় মায়ানমারের বিভিন্ন রাস্তায় ময়লা জড়ো করে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। যদিও সেনার তরফে ‘হত্যালীলা’ অব্যাহতই। সোমবারই সেনার গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৪জন বিক্ষোভকারী। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গ্রেনেড লঞ্চার ব্যবহার করেছে বাহিনী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy