Advertisement
E-Paper

অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেনে পড়া সেরে ফিরে দেশে হামলা আত্মঘাতী বোমারুর

পড়াশোনা করতে ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়া পাড়ি দিয়েছিল এক হামলাকারী। সেখানেই সম্ভবত আইএসের সংস্পর্শে আসে সে। এর পরে জঙ্গি মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কলম্বোর ধারাবাহিক বিস্ফোরণে অংশ নেওয়া।

  নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:১২
গণকবর: সমাহিত করা হচ্ছে বিস্ফোরণে নিহতদের দেহ। বুধবার নেগোম্বোয়। এপি

গণকবর: সমাহিত করা হচ্ছে বিস্ফোরণে নিহতদের দেহ। বুধবার নেগোম্বোয়। এপি

পড়াশোনা করতে ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়া পাড়ি দিয়েছিল এক হামলাকারী। সেখানেই সম্ভবত আইএসের সংস্পর্শে আসে সে। এর পরে জঙ্গি মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কলম্বোর ধারাবাহিক বিস্ফোরণে অংশ নেওয়া। বুধবার শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান বিজয়বর্ধনে এই তথ্য জানিয়েছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘আমরা জেনেছি, আত্মঘাতী বোমারুর মধ্যে এক জন ব্রিটেনে পড়াশোনা শেষ করে অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিল স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য। তার পরে শ্রীলঙ্কায় ফেরে।’’
শুধু ওই এক জন নয়, বিজয়বর্ধনের দাবি, হামলাকারীদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের বিদেশে যোগাযোগ ছিল। কেউ বিদেশে শুধু থেকেছে, কেউ বা পড়াশোনা করেছে। কারও কারও আইনের ডিগ্রি রয়েছে। আজ তিনি বলেছেন, ‘‘আত্মঘাতী জঙ্গির এই দলটির বেশির ভাগ সদস্যই উচ্চশিক্ষিত। মধ্যবিত্ত বা উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। ফলে এদের কেউ আর্থিক ভাবে দুর্বল নয়। আর এটাই উদ্বেগের বিষয় আমাদের কাছে।’’
বুধবার নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫৯। গত রাত থেকে সন্দেহভাজন আরও ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সব মিলে এখন ধৃতের সংখ্যা ৬০। প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহের দাবি, বিস্ফোরক নিয়ে এখনও বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজন শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিস্ফোরণে সরাসরি জড়িত এমন ন’জন এখনও পুলিশের হাতে আসেনি বলেই তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা এর মধ্যে জানিয়েছেন, তিনি সর্বদল সম্মেলন ডাকতে চলেছেন। জাতীয় শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার লক্ষ্যে তিনি কথা বলতে চান সবার সঙ্গে। দেশে এক টেলিভিশন বার্তায় গত কাল তিনি বলেছেন, সব ধর্মীয় নেতা এবং বিশিষ্ট জনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান তিনি। সিরিসেনা বলেছেন, ‘‘একে অপরের দিকে আঙুল তোলার সময় এটা নয়। রাজনৈতিক মতপার্থক্য সরিয়ে রেখে দেখা উচিত যাতে আর এ ধরনের ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটতে না পারে।’’
বারবার নানা দিক থেকে প্রশ্ন উঠছে, আগাম সতর্কবার্তা থাকা সত্ত্বেও কেন বিস্ফোরণ এড়ানো গেল না? সেই প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট বলেন, তথ্য থাকলেও তাঁকে এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গাফিলতিকেই দুষেছেন তিনি। ওই মন্ত্রকের উচ্চ পদগুলিতে দ্রুত রদবদল ঘটানো হবে বলে জানান তিনি। বিশেষত প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেমাসিরি ফার্নান্দো এবং পুলিশের আইজি পুজিত জয়সুন্দরকে ইস্তফা দিতে বলা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
তবে আজ ভারতীয় একটি টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, বিস্ফোরণের ১০ দিন আগে ভারতের তরফে যে সতর্কবার্তা শ্রীলঙ্কার কাছে গিয়েছিল, তাতে সম্ভাব্য আত্মঘাতী হামলার উল্লেখ তো ছিলই। সঙ্গে জঙ্গিগোষ্ঠী, তার নেতা এবং অন্য সদস্যদের
নামও দেওয়া ছিল।
মঙ্গলবার সিরিসেনা বলেন, ২০১৭ সাল থেকেই গোয়েন্দা সূত্রে খবর মিলছে দেশে জঙ্গি গোষ্ঠী তৈরি হচ্ছে। তার মধ্যে কয়েকটি বিদেশি সাহায্য পাচ্ছে, এই তথ্যও ছিল। সেই সব গোষ্ঠীকে নজরে রাখা হয়েছে। এ বার আর আটটি দেশ সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়াবে বলে আশ্বাস মিলেছে, জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। সন্ত্রাস রুখতে নয়া আইনের প্রস্তাবও আনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান বিজয়বর্ধনে এ দিন জানান, ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত (এনটিজে) ছাড়াও আর একটি গোষ্ঠীর ভূমিকা আছে হামলায়। সেটি এনটিজে থেকে বেরিয়ে আসা আলাদা গোষ্ঠী। কিন্তু আরও বেশি কট্টরপন্থী। এই মুহূর্তে গোষ্ঠীর নাম বলেননি তিনি। দ্বিতীয় গোষ্ঠীর নেতাই এই হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। সে নিজেকে উড়িয়ে দেয় শাংগ্রি লা হোটেলে। গত কাল আইএস বিস্ফোরণের দায় নিলেও এখনও তাদের ভূমিকা প্রমাণিত হয়নি বলে জানান তদন্তকারীরা। এর আগেও এমন কিছু বিস্ফোরণের দায় নিয়েছে আইএস, যাতে তাদের ভূমিকা ছিল না। তবে শ্রীলঙ্কার বিস্ফোরণের ধরন দেখে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইএস-এর হাত থাকার সম্ভাবনা। বিস্ফোরণে নিহত দশ জন ভারতীয়ের মধ্যে ন’জনের দেহাবশেষ বুধবার ভারতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
সহ প্রতিবেদন: পি কে বালচন্দ্রন, কলম্বো

Sri Lanka Sri Lanka Blast
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy